Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

মাথা ঠুকে ‘দুঃখের’ গল্প শোনাল নেপুরা

শুক্রবার কোর্ট লকআপে লোহার শিকে সঙ্ঘবদ্ধ মাথা ঠোকাঠুকি দেখে বিষয়টা কী, জানতে চান শ্রীরামপুর এসিজেএম মৃণালকান্তি দত্ত। তারপরই সকলে একসঙ্গে মুখ খোলে, জানাতে শুরু করে ‘দুঃখের কথা’।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:১৮
Share: Save:

মুখে কারও কথা নেই। চেঁচামেচি, মারামারি তো দূর অস্ত! শুধু নীরবে মাথা ঠুকে চলেছে এক দল বন্দি। তখন কে বলবে এরাই দিন দু’য়েক আগে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল জেলের ভিতর, চলেছিল বেনজির তাণ্ডব!

শুক্রবার কোর্ট লকআপে লোহার শিকে সঙ্ঘবদ্ধ মাথা ঠোকাঠুকি দেখে বিষয়টা কী, জানতে চান শ্রীরামপুর এসিজেএম মৃণালকান্তি দত্ত। তারপরই সকলে একসঙ্গে মুখ খোলে, জানাতে শুরু করে ‘দুঃখের কথা’। সে আর এক বিপত্তি! শেষ পর্যন্ত এক এক করে তাদের কথা শোনেন বিচারক। সে দলে ছিল নেপু গিরিও। নিজের বিরুদ্ধে হওয়ায় ‘অত্যাচার’-এর সাক্ষ্য হিসাবে হাত-পায়ের ক্ষত চিহ্নও দেখায় সে।

বিচারকের সামনে জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তোপ দাগে নেপু। কিন্তু পুলিশের দাবি, বুধবার সন্ধ্যায় হুগলি জেলে বিধিবদ্ধ তল্লাশির সময় নেপুর কাছ থেকে একটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়। তারপরই তাণ্ডব শুরু হয়। ডেপুটি জেলার বিশ্বরূপ সিংহের মাথা ইট দিয়ে থেঁতলে দেয় তারা। ‘কলার বোন’-এর হাড় ভেঙেছে। জেল ক্যান্টিনের ডিজেল ঢেলে রান্নাঘর ও লাইব্রেরি সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

এ দিন অবশ্য অন্য একটি খুনের মামলায় নেপু ও তার কয়েক জন শাগরেদকে আদালতে তোলা হয়। বুধবার জেলের ভিতর তাণ্ডব চালানোর অভিযোগে পুলিশ ২৩ জন বন্দির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। সেই মতো পদক্ষেপ করতে শুরু করেছেন জেল কর্তৃপক্ষ। বর্ধমান ও কলকাতার বিভিন্ন জেলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে কয়েকজন বন্দিকে। চন্দননগর কমিশনারেট ও রাজ্যের জেল কর্তৃপক্ষ ওই ঘটনার পৃথক তদন্ত শুরু করেছে।

কিন্তু এ দিন যে ভাবে বিচারকের কাছে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করেছে নেপুরা, তাতে আইনজীবীদের ছায়া দেখছেন আইনজীবীদেরই একাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Prison Prisoners ACJM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE