Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

‘ঘরছাড়া’ দম্পতিকে বাড়ি ফেরাল প্রশাসন

অজিত ও শ্যামলী ঘোষ নামে ওই দম্পতি থাকেন চুঁচুড়ার বুনোকালীতলায়। তাঁদের এক ছেলে এবং দুই মেয়ে। তিন জনেই বিবাহিত। মেয়েরা অন্যত্র থাকেন। দম্পতির অভিযোগ, ছেলে জয়ন্ত তাঁদের উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাতেন।

নিজঘরে: পুলিশের সাহায্যে বাড়ির পথে। নিজস্ব চিত্র

নিজঘরে: পুলিশের সাহায্যে বাড়ির পথে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:০৪
Share: Save:

ছেলের অত্যাচারে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে, এই অভিযোগে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চুঁচুড়ার এক বৃদ্ধ দম্পতি। মঙ্গলবার প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তাঁরা বাড়িতে ফিরলেন।

অজিত ও শ্যামলী ঘোষ নামে ওই দম্পতি থাকেন চুঁচুড়ার বুনোকালীতলায়। তাঁদের এক ছেলে এবং দুই মেয়ে। তিন জনেই বিবাহিত। মেয়েরা অন্যত্র থাকেন। দম্পতির অভিযোগ, ছেলে জয়ন্ত তাঁদের উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাতেন। মাস ছ’য়েক আগে তিনি জোর করে বাবার কাছ থেকে বাড়ি লিখিয়ে নেন নিজের নামে। এই নিয়ে পারিবারিক বিবাদ শুরু হয়। গত ৭ মার্চ অশান্তি চরমে ওঠে। ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে গিয়ে শ্যামলীদেবীর মাথা ফাটে।

ওই ঘটনার পর থেকেই অজিতবাবু এবং শ্যামলীদেবী চুঁচুড়াতেই বড় মেয়ের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। ছেলের বিরুদ্ধে মারধর করে সম্পত্তি হাতানোর অভিযোগ তুলে সুরাহার দাবিতে মহকুমাশাসকের দফতরে সংশ্লিষ্ট ট্রাইবুনালের দ্বারস্থ হন শ্যামলীদেবী।

প্রশাসন সূত্রের খবর, সোমবার মহকুমাশাসক (সদর) অরিন্দম বিশ্বাস ওই দম্পতিকে নিজেদের বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে আসতে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটকে নির্দেশ দেন। সেই মতো মঙ্গলবার চুঁচুড়া থানার পুলিশ তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়। তার আগে জয়ন্তবাবুকে থানায় ডেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তিনি যেন বাবা-মায়ের উপরে অত্যাচার না করেন। তেমন অভিযোগ পেলে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পঁচাশি বছরের অজিতবাবু বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনের সহযোগিতায় ছ’মাস পরে বাড়িতে ফিরলাম। খুব ভাল লাগছে।’’ শ্যামলীদেবীর কথায়, ‘‘ছেলের কাছে আমাদের কোনও দাবি ছিল না। বুড়ো বয়সে দু’বেলা একটু খেয়ে-পরে বাঁচার আশা করেছিলাম। কিন্তু ছেলে ওই রকম ব্যবহার করবে, স্বপ্নেও ভাবিনি।’’ দিন কয়েক আগে ‘দিদিকে বলো’ নম্বরেও ফোন করেও তাঁরা সমস্যার কথা জানান।

মহকুমাশাসক অরিন্দমবাবু বলেন, ‘‘ওই দম্পতি প্রশাসনের ট্রাইবুলানে অভিযোগ করেছিলেন। তার ভিত্তিতে অনুসন্ধান করে তাঁদের বাড়ি ফিরিয়ে দিতে বলা হয় পুলিশকে। ওঁরা যাতে বাড়িতে শান্তিতে থাকতে পারেন এবং হেনস্থা না হতে হয়, সে দিকে নজর রাখা হবে।’’

জয়ন্ত পেশায় গৃহশিক্ষক। তিনি অভিযোগ মানেননি। তিনি বলেন, ‘‘দুই বোনের মদতে মা আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। বাবা আমাকে বাড়ি দান করেছেন।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘মা-বাবা ছাতার মতো ছেলেমেয়েদের আগলে রাখেন। কিন্তু স্বার্থান্বেষী কিছু মানুষ সাংসারিক বিবাদ লাগিয়ে নিজেদের আখের গোছানোর চেষ্টা করে। আমাদের পরিবারেও সেই রকমই ঘটেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Old Couple Administration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE