মেয়াদ ফুরনোর পরে হাওড়া পুরসভায় নির্বাচন না করে প্রশাসক বসানোর পিছনে রাজ্যের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল অন্য পুরসভাগুলির সঙ্গে একযোগে হাওড়া পুরসভারও নির্বাচন করা।
হাওড়ায় তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের মেয়াদ ফুরিয়েছে সোমবার। আজ, মঙ্গলবার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেবেন বর্তমান পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ। কিন্তু প্রশাসক বসানোর পরে পুরসভা কী ভাবে চলবে, তার স্পষ্ট নির্দেশ এ দিনও নবান্ন থেকে এসে পৌঁছয়নি। ফলে আতান্তরে পড়েছেন পুর অফিসারেরা। এক দিকে ৬৬টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের দৈনন্দিন চাহিদা সামলানো, অন্য দিকে পুর পরিষেবা অব্যাহত রাখা— এই দু’দিকে সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁদের একাংশ। এরই মধ্যে এ দিন নবনিযুক্ত প্রশাসককে সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে পুরসভা ছাড়লেন মেয়র রথীন চক্রবর্তী। যাওয়ার সময়ে সঙ্গে নিয়ে গেলেন নিজের বাঁধানো ছবি, যা তাঁকে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভবিষ্যতে পুর পরিষেবার কাজে প্রয়োজনে সব রকম সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন রথীনবাবু।
মেয়াদ ফুরনোর পরে হাওড়া পুরসভায় নির্বাচন না করে প্রশাসক বসানোর পিছনে রাজ্যের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল অন্য পুরসভাগুলির সঙ্গে একযোগে হাওড়া পুরসভারও নির্বাচন করা। সেই মতো বিধানসভায় পুর আইন বিষয়ক সংশোধনী বিল পাশ করানো হয়। ওই বিল অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য বসানো হয় প্রশাসককে। এ দিন হাওড়ার পুর কমিশনার বলেন, ‘‘নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে একটু সময় লাগবে। তবে শীঘ্রই সমস্যা মিটে যাবে বলে আশা করছি।’’ পুরসভা সূত্রে খবর, মূল যে কয়েকটি সমস্যা আছে তা হল, প্রতি দিন বিভিন্ন আবেদনকারীকে যে সব শংসাপত্র দিতে হয় তাতে স্বাক্ষর করতে হয় কাউন্সিলরদের। কোনও ব্যক্তিকে আয়ের শংসাপত্র দিতে হলে তাতেও স্বাক্ষর করতে পারেন শুধুমাত্র কাউন্সিলর। পাশাপাশি কোনও অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় মৃতের নিকটাত্মীয়কে শংসাপত্র না লিখে দিলে তাঁর হাতে দেহ তুলে দেওয়া যায় না।
এমনই সব সমস্যার সমাধানে কী করা হবে, নতুন পদে যোগ দেওয়ার আগে তা নিয়ে এ দিন পুর অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করেন পুর কমিশনার। তাতে আপাতত ঠিক হয়েছে, হাওড়া শহর থেকে নির্বাচিত সব বিধায়ক ও সাংসদের এলাকার ওয়ার্ড অফিসগুলিতে এক জন করে প্রতিনিধি দেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। ওই অফিস থেকেই কাজ পরিচলনা করবেন প্রতিনিধিরা। তাঁদের সাহায্য করবেন স্থানীয় কাউন্সিলরেরা।
বোর্ডের মেয়াদ শেষের দিন পুর ভবনে এসেছিলেন মেয়র-সহ প্রায় সব মেয়র পারিষদ এবং কাউন্সিলর। সেখানে পুর কমিশনারের হাতে পুরসভা পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দিয়ে মেয়র বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যে গুরুদায়িত্ব দিয়েছিলেন, তা প্রতি পদে নিয়ম মেনে করেছি। চিকিৎসক হওয়া সত্ত্বেও সাধ্যমতো করেছি। আগামী দিনে মুখ্যমন্ত্রী যে দায়িত্ব দেবেন, তা নিয়েই এগিয়ে যাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy