সপ্তাহ দুয়েক আগেই হাওড়ায় খুলে দেওয়া হয়েছিল বেআইনি বিজ্ঞাপন। নিজস্ব চিত্র
হাওড়া শহরের প্রবেশপথ হাওড়া স্টেশন চত্বরের মুখ ঢেকে গিয়েছিল হোর্ডিংয়ে। হাওড়া পুরসভার দাবি, ওই সব হোর্ডিংয়ের বেশির ভাগই পুরসভার রাজস্ব জমা দেয়নি। সেই ফাঁকির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা। সম্প্রতি বিষয়টি নজরে আসার পরে পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ বেআইনি হোর্ডিং খুলে ফেলতে উদ্যোগী হন। কলকাতা পুরসভা থেকে বিশেষ মই এনে সেপ্টেম্বর মাসে দু’দিন ধরে ৭০টি হোর্ডিং খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ, পুজোর আগেই রাতারাতি ফের সেই সব জায়গায় বিজ্ঞাপনী ফ্লেক্স লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় রীতিমত ক্ষুব্ধ পুরকর্তারা। তাঁরা দু’টি বিজ্ঞাপন সংস্থার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুর কমিশনার জানিয়েছেন, পুজোর পরেই ফের বেআইনি হোর্ডিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযান হবে।
হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে হাওড়া স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড-সহ ডবসন রোড চত্বরে হোর্ডিং লাগানোর লোহার কাঠামো করে দেওয়ার জন্য চারটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হয়। কথা ছিল, তিন বছর পরে টেন্ডারের সময়সীমা শেষ হয়ে যাবে এবং ২০১৮ সালের জুন মাসে কাঠামোগুলি পুরসভার মালিকানাধীন হয়ে যাবে। তখন ওই কাঠামোয় হোর্ডিং লাগাতে গেলে পুরসভার ডাকা টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ করতে হবে। পুরসভা প্রতি বর্গফুটে যা দর ঠিক করবে, তা-ই দিতে হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পুরসভার অভিযোগ, কার্যক্ষেত্রে দেখা যায়, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ওই দু’টি বিজ্ঞাপন সংস্থা কোনও টাকা দেয়নি।
পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘বিষয়টি জানতে পারার পরে দেখা যায়, দু’টি সংস্থার থেকে পুরসভার ২ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা পাওনা আছে। তখন ওই সংস্থাগুলিকে নোটিস পাঠানো হয়। এর মধ্যে ১ কোটি টাকা আদায় হলেও বাকি টাকা এখনও বকেয়া। শুধু তা-ই নয়, টেন্ডারের সময়সীমাও শেষ হয়ে গিয়েছে।’’ পুর কমিশনারের অভিযোগ, বর্তমানে পুরসভার ১২০টি হোর্ডিং রয়েছে। সেখান থেকে এত দিন বছরে যত আয় হয়েছে, তার থেকে কয়েক গুণ বেশি টাকা পুরসভার আয় হওয়ার কথা।
পুর কমিশনার বলেন, ‘‘গত ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর হাওড়া স্টেশন চত্বর, হাওড়া বাসস্ট্যান্ড, ডবসন রোড-সহ আশপাশের রাস্তায় টেন্ডারের সময়সীমা পেরিয়া যাওয়া ৭০টি বিজ্ঞাপন খুলে দেওয়া হয়।’’ পুর কমিশনারের অভিযোগ, সম্প্রতি ওই ৭০টি জায়গায় ফের বিজ্ঞাপন লাগানো হয়েছে। রাতের অন্ধকারে সেই কাজ করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা এই কাজ করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে।’’
পুরসভার এক পদস্থ কর্তা জানান, পুজোর সময়ে এখন আর হোর্ডিং খোলার ঝুঁকি নেওয়া হবে না। কলকাতা পুরসভা থেকে ফের মই এনে পুজোর পরেই বেআইনি হোর্ডিং খুলে ফেলা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy