Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মৃত্যু সিভিক ভলান্টিয়ারের, বিক্ষোভ থানায়

কর্মরত অবস্থায় সোমবার রাতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে ট্রাকের ধাক্কায় জখম হয়েছিলেন দুই সিভিক ভলান্টিয়ার। এর মধ্যে রাতেই মারা গেলেন সুব্রত আদক (২৩) নামে একজন।

বিক্ষোভ: সিঙ্গুর থানায় জমায়েত সিভিক ভলান্টিয়ারদের। —নিজস্ব চিত্র।

বিক্ষোভ: সিঙ্গুর থানায় জমায়েত সিভিক ভলান্টিয়ারদের। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৭ ০১:৫৯
Share: Save:

কর্মরত অবস্থায় সোমবার রাতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে ট্রাকের ধাক্কায় জখম হয়েছিলেন দুই সিভিক ভলান্টিয়ার। এর মধ্যে রাতেই মারা গেলেন সুব্রত আদক (২৩) নামে একজন। সহকর্মীর এই মৃত্যু ঘিরে সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার দিনভর সিভিক ভলান্টিয়ারদের বেনজির বিক্ষোভের সাক্ষী হলেন জেলা পুলিশ কর্তারা।

মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সিঙ্গুর থানায় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অতুল ভি এবং এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায় তাঁদের ক্ষোভের কথা শোনেন। পরে এসডিপিও বলেন, ‘‘এখন ক্ষোভের সময় নয়। আমাদের একজন সহকর্মী মারা গিয়েছেন। অন্য জনের ভাল চিকিৎসা প্রয়োজন। অন্য কোনওদিন বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হবে।’’

জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার বামেদের নবান্ন অভিযানের সময় যানজট এড়াতে জেলা পুলিশ কলকাতামুখী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ করে। রাত আটটা পর্যন্ত কলকাতায় ট্রাক ঢোকা নিষেধ ছিল। সোমবার সন্ধ্যায় সিঙ্গুর রতনপুর মোড়ে কর্মরত ছিলেন সুব্রত আদক এবং সোমনাথ মৈত্র নামে দুই সিভিক ভলান্টিয়ার। তাঁরা পুলিশের লোহার ব্যারিকেডের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সন্ধ্যা ছটা নাগাদ হঠাৎ-ই একটি সিমেন্ট বোঝাই ট্রাক বর্ধমানের দিক থেকে এসে ব্যারিকেড ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। তারপর ট্রাকটি হুড়মুড়িয়ে তাঁদেরও ধাক্কা মারে। সেই ধাক্কায় দু’জনেই গুরুতর জখম হন।

সহকর্মীরা দ্রুত ডানকুনির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করান দুই সিভিক পুলিশ ভলান্টিয়ারকে। রাত বারোটা নাগাদ সুব্রত মারা যান। সহকর্মীর এই মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি অন্যরা। সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই সিভিক ভলান্টিয়াররা নার্সিংহোমে হাজির হন। সেখানে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ঘটনায় প্রমাদ গোনেন জেলা পুলিশ কর্তারা। তাঁরা সেখানে দ্রুত ডানকুনি ও চণ্ডীতলা থানার ওসিদের বাহিনী নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। নার্সিংহোমে ওসিরা বাহিনী নিয়ে যেতেই ক্ষোভ আরও বাড়ে।

বর্তমানে সিঙ্গুর থানায় ৩৭১ জন পুরুষ ও ৩২ জন মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছেন। তাঁদের অনেকেই রাতেই ওই নার্সিংহোমে চলে যান। পুলিশের পদস্থরা তাঁদের বুঝিয়ে সিঙ্গুর থানায় ফেরত পাঠান। কিন্তু সেখানে পৌঁছেও সিভিক ভলান্টিয়াররা দেখেন অন্য কয়েকটি থানার ওসিরা সেখানেও বাহিনী নিয়ে মজুত। তাতে ক্ষোভ আরও বাড়ে। শুরু হয় বিক্ষোভ। মঙ্গলবার সকাল ১২টা পর্যন্ত তা চলে। পরে জেলা পুলিশের পদস্থরা তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।

সিভিক পুলিশ কর্মী কৌশিক দাস বলেন,‘‘আমাদের জন্য পুলিশ বাহিনী কেন? আমরা কি থানা ভাঙচুর কবর? সহকর্মীর যাতে সম্মানের সঙ্গে সৎকার হয় আর ওঁর পরিবার যাতে ক্ষতিপূরণ পায়, সেইটুকুই আমরা বলতে চেয়েছি।’’ এই বিষয়ে জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘মৃত ওই সিভিক পুলিশ কর্মীর পরিবার যাতে ক্ষতিপূরণ পায় সেই বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

civic volunteers Agitation Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE