Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
মৃতের পরিবারের দাবি ‘ডেঙ্গি’

ফের মৃত্যু‌ জ্বরে আক্রান্ত প্রৌঢ়ের

গাড়ুলিয়ায় থাকাকালীনই জ্বরে পড়েন অমরবাবু। জ্বর হয়েছিল সন্ধ্যাদেবী এবং অঞ্জনেরও। পরের দিন তাঁরা বাড়ি ফিরে আসেন। জ্বর না কমায় ১১ নভেম্বর অমরবাবু এবং সন্ধ্যাদেবীকে ভদ্রেশ্বর পুরসভা পরিচালিত অঙ্কুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

— ফাইল চিত্র।

— ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভদ্রেশ্বর শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০২:২৮
Share: Save:

জ্বরে আক্রান্ত এক ব্যক্তির মৃত্যু হল কলকাতার হাসপাতালে। হুগলির ভদ্রেশ্বরের বাসিন্দা ওই প্রৌঢ়ের পরিবারের লোকেদের বক্তব্য, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে অবশ্য জানানো হচ্ছে, অন্য শারীরিক সমস্যার কারণেই তিনি মারা গিয়েছেন।

মৃত অমর বন্দ্যোপাধ্যায় (৫৭) ভদ্রেশ্বর পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পালপাড়া লেনের বাসিন্দা। পেশায় চটকল-শ্রমিক। বছর খানেক আগে স্বেচ্ছাবসর নেন। পুরসভা ও পারিবারিক সূত্রের খবর, গত ৮ নভেম্বর অমরবাবু স্ত্রী সন্ধ্যা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ছোট ছেলে অঞ্জনকে নিয়ে উত্তর ২৪ পরগন‌ার গাড়ুয়ালিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। পরিবারের দাবি, গাড়ুলিয়ায় থাকাকালীনই জ্বরে পড়েন অমরবাবু। জ্বর হয়েছিল সন্ধ্যাদেবী এবং অঞ্জনেরও। পরের দিন তাঁরা বাড়ি ফিরে আসেন।

জ্বর না কমায় ১১ নভেম্বর অমরবাবু এবং সন্ধ্যাদেবীকে ভদ্রেশ্বর পুরসভা পরিচালিত অঙ্কুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে সরানো হয়। পরের দিন দু’জনকেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে ওই দিনই বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে স্থান‌ান্তরিত করা হয়। ১৩ নভেম্বর অঞ্জনকেও সেখানে ভর্তি করানো হয়। বাড়ির লোকেরা জানান, অমরবাবুর শরীরে প্লেটলেটের পরিমাণ কমে যায়। নানা রকম শারীরিক জটিলতা দেখা যায়।

সন্ধ্যাদেবী ১৭ তারিখ সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন। সোমবার, ১৯ নভেম্বর রাত ১০টা নাগাদ অমরবাবু মারা যান। ছোট ছেলে বছর সাতাশের অঞ্জন এখনও বেলেঘাটা আইডিতেই চিকিৎসাধীন। অমরবাবুর বড় ছেলে রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘বাবার ডেঙ্গি হয়েছিল। তাতেই মৃত্যু হয়েছে।’’ হুগলি জে‌লার স্বাস্থ্য আধিকারিকরা অবশ্য বলছেন, ওই ব্যক্তির রক্ত পরীক্ষায় এনএস ওয়ান পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু ওই জ্বরকে ডেঙ্গি বলে চিহ্নিত করা যায় না। আগে থেকেই তিনি উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছিলেন। সেই কারণেই ‘সেপটিক শক’-এ আক্রান্ত হ‌ন।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মৃত্যু শংসাপত্র দেখে বোঝা যাচ্ছে, ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জটিল শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। এগুলোই মৃত্যুর প্রধান কারণ বলে মনে হচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ডায়াবেটিস এবং চেস্ট ইনফেকশন থাকলে ‘সেপটিক শক’ হয়। ওঁর ক্ষেত্রেও সেটা হয়ে থাকতে পারে।’’ মৃতের ছেলে রাজুর অবশ্য দাবি, ‘‘বাবার উচ্চ রক্তচাপ ছিল ঠিকই, কিন্তু অন্য কোনও সমস্যা তেমন ছিল না।’’

ভদ্রেশ্বরের উপ-পুরপ্রধান প্রকাশ গোস্বামী বলেন, ‘‘শুনছি ওই ব্যক্তি ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন। কিন্তু তিনি অন্য জায়গায় বেড়াতে গিয়ে সেখান থেকে জ্বর নিয়ে ফিরে আসেন। আমাদের এখানে কিছু হয়নি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ডেঙ্গি-সহ অন্যান্য পতঙ্গবাহিত রোগ মোকাবিলায় পুরসভা সতর্কতামূলক সব ব্যবস্থাই নিচ্ছে। এলাকা সাফাই থেকে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো, মশা মারার তেল ছেটানো সবই নিয়মিত করা হচ্ছে।’’

গত তিন-চার মাস ধরে জ্বরের প্রকোপ চলছে উত্তর ২৪ পরগনার গাড়ুলিয়ায়। বহু আক্রান্তের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে। জ্বরে আক্রান্ত তিন মহিলার মৃত্যুও হয়েছে সেখানে। তাঁদের মধ্যে একজনের মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গি উল্লেখ ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Unknown Fever Bhadreswar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE