Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
hooghly

কেন্দ্রীয় আইনে বদল রুখতে মমতার হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি

শনিবার চন্দননগরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হল ‘পরিবেশ অ্যাকাডেমি’ এবং ‘অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি’— দুই সংগঠনের উদ্যোগে। গণস্বাক্ষর সংবলিত চিঠি পাঠিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আর্জি জানানো হল, তিনি যাতে এর প্রতিবাদ করেন।

জমায়েত: শনিবার চন্দননগরের সভায়।  —নিজস্ব িচত্র

জমায়েত: শনিবার চন্দননগরের সভায়। —নিজস্ব িচত্র

প্রকাশ পাল
চন্দননগর শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:৩৯
Share: Save:

কেন্দ্রীয় শ্রম এবং পরিবেশ আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে। প্রস্তাবিত পরিবর্তন কার্যকর হলে তা শ্রমিক এবং পরিবেশের পরিপন্থী হবে বলে নাগরিক সমাজের একাংশের আশঙ্কা। এই নিয়ে শনিবার চন্দননগরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হল ‘পরিবেশ অ্যাকাডেমি’ এবং ‘অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি’— দুই সংগঠনের উদ্যোগে। গণস্বাক্ষর সংবলিত চিঠি পাঠিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আর্জি জানানো হল, তিনি যাতে এর প্রতিবাদ করেন।
উদ্যোক্তাদের তরফে বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের অনেক জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদ করেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় পরিবেশ বা শ্রম আইনের বদল আনার প্রক্রিয়া নিয়ে রাজ্য সরকার নিশ্চুপ। বিষয়টি কার্যকর হলে শ্রমজীবী মানুষ এবং পরিবেশের খুব ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই অনুরোধ, মুখ্যমন্ত্রী এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন।’’
শনিবার বিকেলে চন্দননগরের বড়বাজারে ডাকঘরের সামনে প্রতিবাদ-সভা হয়। তিনশোরও বেশি মানুষ ভিড় করেন। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘শ্রমিক বিরোধী কার্যকলাপ’, রাজ্য সরকারের ‘নির্বাক ভূমিকা’র প্রতিবাদ জানান বক্তারা। তাঁদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় চল্লিশটি শ্রম আইন বাতিল করে নতুন কয়েকটি আইন চালু করার চেষ্টা করছে। ‘শ্রমিক স্বার্থবিরোধী’ এই আইন কার্যকর হলে অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিকদের আন্দোলনের অধিকারও থাকবে না। লকডাউনের সময় মানুষ যখন ঘরবন্দি, মিটিং-মিছিল, জমায়েত নিষিদ্ধ, তখন সেই সুযোগে চুপিসারে কেন্দ্রের তরফে শ্রম আইন, পরিবেশ আইনে পরিবর্তনের প্রক্রিয়া চালানো হয়। এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলন সংগঠিত করার প্রয়োজনীয়তার কথা ওঠে এ দিনের কর্মসূচিতে।
কর্মসূচির অন্যতম উদ্যোক্তা শিবনাথ লাঙ্গল বলেন, ‘‘কেন্দ্রের এই সব নীতি শিল্পক্ষেত্রে মালিকদের সুবিধে করে দেওয়ার জন্য। ফলে, তাঁদের জন্য শ্রমিক শোষণের পথ আরও প্রশস্ত হবে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক, এমন একটা সময়ে এ সব করা হচ্ছে, যখন অভূতপূর্ব দুর্দশায় শ্রমিকদের দিন কাটছে। দেশ জুড়ে অসংখ্য মানুষ কর্মচ্যুত।’’
আন্দোলনকারীদের ক্ষোভ, অতীতে বার বার পরিবেশ আইন শিথিল করা হয়েছে। সেই ধারা অব্যাহত। পরিবর্তন কার্যকর হলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিবেশের তোয়াক্কা না করেই বড় বড় সংস্থা যথেচ্ছাচার করতে পারে। ফলে, পরিবেশের ক্ষতি অবশ্যম্ভাবী। প্রতিবাদ করার রাস্তা থাকবে না।
কেন্দ্রীয় আইন নিয়ে প্রতিবাদের পাশাপাশি বন্ধ গোন্দলপাড়া জুটমিল খোলার দাবিতেও সরব হন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের অভিযোগ, ওই জুটমিল বন্ধ হওয়ায় শ্রমিকেরা অনাহারে, বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া পড়ে আছে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের পাওনা। মিল বন্ধের ফলে এলাকার অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। ওই জুটমিল খুলতেও গণ-দরখাস্তে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে। সভা শেষে ‘সবুজের অভিযান’ সংগঠনের তরফে ওই জুটমিলের ১৫৪ জন শ্রমিকের পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hooghly Chandannagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE