Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কেব্‌লের কাজে এসে গলা টিপে লুটপাট

ঘটনা গুরুতর অসুস্থ ওই মহিলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত অবশ্য ধরা পড়েনি শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত। চন্দননগর কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। আশা করছি শীঘ্রই ধরা পড়বে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:৩০
Share: Save:

কেব্‌লের সেট-টপ বক্স সারাতে ফ্ল্যাটে ঢুকে গৃহকর্ত্রীর গলা টিপে গয়না হাতিয়ে পালানোর অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে হিন্দমোটরের দেবাইপুকুর রোডে।

ঘটনা গুরুতর অসুস্থ ওই মহিলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত অবশ্য ধরা পড়েনি শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত। চন্দননগর কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। আশা করছি শীঘ্রই ধরা পড়বে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মীনাক্ষি গুহ চক্রবর্তী নামে ওই মহিলা বৃহস্পতিবার বাড়িতে একাই ছিলেন। দুপুরে জন নামে এক যুবক ফ্ল্যাটের পাশে কেব্‌ল লাইনের কাজ করছিল। হঠাৎ তাঁর টিভি বন্ধ হয়ে গেলে মীনাক্ষি ওই যুবককে ডাকেন। সেট-টপ বক্স সারানোর কথা বলে যুবকটি তাঁদের ফ্ল্যাটে ঢোকে। বেশ কিছুক্ষণ কাজও করে। তার পরে কাউকে ফোন করে টিভির একটি যন্ত্রাংশ আনতে বলে। এ সবের মধ্যেই বিকেল গড়িয়ে যায়।

মীনাক্ষিদেবীর অভিযোগ, সন্ধ্যা পৌনে ৭টা নাগাদ আচমকাই যুবকটি পিছন থেকে তাঁর গলা টিপে ধরে। তিনি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে আরও জোরে গলা টেপে। তিনি জ্ঞান হারান। পরে পাশের ফ্ল্যাটের এক মহিলা ঘরে এসে তাঁকে পড়ে থাকতে দেখে সবাইকে খবর দেন।

পড়শি ওই মহিলার জানিয়েছেন, মীনাক্ষিদেবীর কান দিয়ে রক্ত পড়ছিল। গলায় দাগ ছিল। উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালে মীনাক্ষি বলেন, ‘‘কান থেকে সোনার দুল ছিঁড়ে নিয়েছে। খুলে নিয়েছে হাতের বালা, স্মার্ট ফোনও।’’ রাতেই উত্তরপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, বছর তিরিশের ওই যুবক কোতরং ২ নম্বর বাজার এলাকায় থাকে। আগে সে স্থানীয় কেব্‌ল অপারেটরের কাছেই কাজ করত। ইদানীং স্বাধীন ভাবে টুকটাক কাজ করছিল। কয়েক জনের কাছে সে টাকা ধার করেছিল। তদন্তকারী এক অফিসারের বক্তব্য, মহিলার সঙ্গে কথা বলে তাঁরা জেনেছেন ওই যুবকের কাছে ঘনঘন ফোন আসছিল। তাতে মনে হয়েছে, কেউ তার থেকে পাওনা টাকা চাইছিলেন। সেই কারণেই হতাশা থেকে সে ওই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।

তবে হিন্দমোটর এলাকায় ক্রমাগত বাড়ছে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য। বছর দুয়েক আগে ওই দেবাইপুকুরের কাছেই এক বৃদ্ধার কাছ জল চেয়ে ঘরে ঢুকে তাঁর গলার হার ছিনতাই করেছিল এক যুবক। স্থানীয় বাসিন্দা পার্থপ্রতিম চৌধুরী বলেন, ‘‘আমাদের বাড়ির এক তলা থেকে দু’দফায় চারটি মোবাইল ফোন চুরি হয়েছে দিনের বেলা। পুলিশে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। বাড়ির সামনে দু’বার ভর সন্ধ্যায় ঘটেছে শ্লীলতাহানির ঘটনাও।’’

এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, সন্ধে হলেই সাইকেল নিয়ে আনাগোনা শুরু করে অচেনা কিশোর-যুবকেরা। মূল রাস্তায় পুলিশি টহলদারি থাকলেও গলির ভিতর কোনও নিরাপত্তা নেই। দিনে দুপুরেও দরজা খোলা পেলে ঘরে ঢুকে মোবাইল চুরি করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে হামেশাই।

চন্দননগর কমিশনারেটের এডিসিপি অম্লান ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা গোটা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি। প্রাথমিক ভাবে আমরা জানতে পেরেছি, এর আগে জন নামে ওই যুবকের বিরুদ্ধে কোনও অপরাধ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের হয়নি। হতে পারে ঋণের জন্যই মরিয়ে হয়ে এ কাজ সে করে থাকতে পারে। তবে এলাকায় টহলদারি জারি রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Loot Jewellery Cable worker
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE