আহত তপন মণ্ডল।
এক ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল দুই যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের এক জন আক্রান্ত ব্যক্তির স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে পুলিশ জানিয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় লিলুয়ার আনন্দনগরে। স্থানীয় বাসিন্দারা দুই যুবককে তাড়া করলে তাঁরা মোটরবাইক ফেলে পালিয়ে যান। বাইকে আগুন ধরিয়ে দেয় ক্ষুব্ধ জনতা। ভাঙচুর চালানো হয় ওই দুই যুবকের বাড়িতে।
পুলিশ সূত্রে খবর, আনন্দনগরের বাসিন্দা তপন মণ্ডলের স্ত্রী রূপা মণ্ডলের সঙ্গে পাশের পাড়ার রমেশ বাগ নামে এক যুবকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়েছিল। মাস চারেক আগে রমেশের সঙ্গে পালিয়ে যান রূপা। মঙ্গলবার রূপাকে নিয়ে নিজের বাড়িতে ফেরে রমেশ। এ দিকে, স্ত্রী ফিরে এসেছে খবর পেয়ে তপন খোঁজ করতে গেলে রমেশের সঙ্গে তাঁর রাস্তায় দেখা হয়ে যায়। রমেশ ওই সময়ে লাল্টু দাস নামে এক বন্ধুকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিল। তপন রমেশকে জানান, তিনি স্ত্রীকে আনতে যাচ্ছেন। সে কথা শুনেই রাস্তায় দু’জনের তীব্র বাদানুবাদ শুরু হয়ে যায়। অভিযোগ, আচমকাই ধারালো অস্ত্র বার করে তপনকে কোপাতে থাকে রমেশ। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তপন।
আশপাশের লোকজন ছুটে এসে দেখেন, তপন রাস্তায় পড়ে আছেন। আর মোটরবাইকে চেপে পালানোর চেষ্টা করছে দুই যুবক। বাসিন্দারা তাদের ধরার চেষ্টা করতেই বাইক ফেলে পালায় রমেশ ও লাল্টু। তখন জনতার রোষ গিয়ে পড়ে বাইকের উপরে। সেটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয় রমেশ ও লাল্টুর বাড়িতে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, তপনের স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই ঘটনা।
বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তায় তখনও পড়ে আছে পোড়া মোটরবাইকটি। চার দিক থমথমে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, দশ বছর আগে রিকশা ব্যবসায়ী তপনের সঙ্গে বিয়ে হয় রূপার। ওই দম্পতির দুই ছেলে, এক মেয়ে। কিছু বছর আগে পাশের পাড়ার রমেশের সঙ্গে রূপার ঘনিষ্ঠতা হয়। ব্যাপারটি জানাজানি হলে তপনের সঙ্গে গোলমাল শুরু হয় রূপা ও রমেশের। তপনের ভাইপো ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘কাকিমা ফিরেছে খবর পেয়ে কাকা রমেশের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। মাঝপথে রমেশ ও লাল্টুর সঙ্গে দেখা হতে তর্কাতর্কি শুরু হয়। এর পরেই ভোজালি দিয়ে কাকাকে কোপায় রমেশ।’’
স্থানীয় লোকজনই তপনকে প্রথমে জায়সবাল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় হাওড়া জেলা হাসপাতালে। তপনের পরিজনেদের অভিযোগ, তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে লিফটে তোলার সময়ে মাঝপথে বিগড়ে যায় লিফট। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় দ্রুত তপনকে মেল ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এ দিন তপনের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে রমেশ ও লাল্টুর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। তবে রাত পর্যন্ত দুই অভিযুক্ত ধরা পড়েনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy