বিপজ্জনক: এমন সরু রাস্তা দিয়ে দমকল ঢোকার উপায় নেই (বাঁ দিকে) মাথার উপর খোলা তার (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র
মার্কেট কমপ্লেক্সের ভিতরে সঙ্কীর্ণ রাস্তার দু’পাশে পর পর দোকান। কোথাও মাথার উপর খোলা তার। কোনও বিপদ ঘটলে দমকলের বড় গাড়ি ঢুকবে না। সব মিলিয়ে হুগলির অন্যতম বড় বাজার শ্রীরামপুর সুপার মার্কেটের অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তার শেষ নেই দমকলের। আশপাশের রাস্তায় ছড়িয়ে থাকা দোকানেরও একই অবস্থা।
স্টেশন সংলগ্ন সুপার মার্কেট ছাড়াও নেতাজি সুভাষ অ্যাভেনিউ, বি পি দে স্ট্রিট জুড়ে কয়েকশো দোকান রয়েছে। পোশাক, জুতো থেকে শুরু করে কিসের দোকান নেই এখানে!
অগ্নি-নির্বাপণ বিধি অনুযায়ী, প্রতিটি দোকানে অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র থাকা উচিৎ। পাম্পিং ব্যবস্থা-সহ জলের রিজার্ভার থাকা দরকার মার্কেটে। খোলা তার কোনও পরিস্থিতিতেই রাখা উচিত নয়। কিন্তু কোনও নিয়মই মানা হয় না। সুপার মার্কেটের এক পোশাক বিক্রেতার কথায়, ‘‘কিছু ঘটলে কী করে সামাল দেওয়া যাবে, সেটাই প্রশ্ন।’’
একটি মাঠের চারধারে সুপার মার্কেট। দমকল সূত্রের খবর, মাঠে ঢোকার রাস্তা দিয়ে দমকলের বড় গাড়ি ঢুকবে না। ছোট গাড়ি পাঠাতে হবে। বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটলে ছোট গাড়ি নিয়ে গিয়ে তা সামাল দেওয়া মুশকিল। সে ক্ষেত্রে অন্যান্য কেন্দ্র থেকে ছোট গাড়ি আনাতে হবে। তাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেক বেশি সময় লাগবে।
দমকল-কর্মীদের কথায়, আগুন লাগলে প্রাথমিক ভাবে কী করতে হবে, কী ভাবে অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র ব্যবহার করতে হবে, তা নিয়ে দোকানদারদের প্রশিক্ষণ থাকা দরকার। কিন্তু সে সব হয় কোথায়! অপ্রতুল অফিসার এবং কর্মী নিয়ে দৈনন্দিন কাজ সামলাতেই দমকল দফতরকে নাজেহাল হতে হয়। সেই সব কাজ সামলে নিয়মিত পরিদর্শন সম্ভব হয় না। তবে সরকারি সূত্রের খবর, দমকলের তরফে শ্রীরামপুর-সহ আশপাশের শহরে বড় বাজারে পরিদর্শন করা হবে। শীঘ্রই ওই প্রক্রিয়া শুরু হবে।
শ্রীরামপুর কেন্দ্রীয় ব্যবসায়ী সমিতির সভিপতি সুব্রত বসু মেনে নেন, ‘‘শ্রীরামপুর মার্কেটের ছোট দোকান তো বটেই, বড় দোকানেও আগুন নেভানোর ব্যবস্থা নেই। অগ্নিকাণ্ড ঘটলে মুশকিল হবে।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘দমকল উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতেই পারে। আর দমকলের তরফে কোনও গাইডলাইন দেওয়া হলে ব্যবসায়ীদের বিষয়টি আমরা নিশ্চয়ই বোঝাব।’’
কয়েক বছর আগে সুপার মার্কেটের পাশে একটি আবাসনে মার্কেট-কমপ্লেক্সে ট্রান্সফর্মার থেকে ধোঁয়া বেরোতে শুরু হওয়ায় হুলস্থূল পড়ে গিয়েছিল। ঘিঞ্জি রাস্তায় গাড়ি এবং মানুষের ভিড় সামলে দমকলের গাড়ি ঢোকাতে কালঘাম ছুটেছিল পুলিশের।
চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘একে বাজার, তায় স্টেশন চত্ত্বর। গাড়ি-ঘোড়ার ভিড়। সব মিলিয়ে ওই চৌহদ্দি খুবই ঘিঞ্জি। চৈত্র সেল বা পুজোর মুখে মার্কেটের ভিতরে বা বাইরে— কোথাও পা ফেলার জায়গা থাকে না। বড় কোনও ঘটনা ঘটলে দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দেওয়া তো কঠিন বটেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy