প্রতীকী ছবি।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা পঞ্চায়েত আসনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এখনও রায় দেয়নি। এই অবস্থায় হাওড়া জেলার প্রায় তিন-চতুর্থাংশ পঞ্চায়েতের দায়িত্ব চলে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট বিডিওদের কাছে। একই ভাবে ১৪টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ১১টির দায়িত্ব চলে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট মহকুমাশাসকের উপরে।
কারণ, ওই সব পঞ্চায়েত এবং সমিতিগুলির কোনও না কোনও আসনে শাসকদলের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন।
শনিবারই জেলার ১৫৭টি পঞ্চায়েতের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে ৪০টিতে বোর্ড গঠন করা হচ্ছে।
কারণ, সেখানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ জয়ী হননি। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে পঞ্চায়েত সমিতিগুলির মেয়াদ।
সব ক’টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে এমন পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যা মাত্র তিনটি (শ্যামপুর-১ ও ২ এবং উলুবেড়িয়া-২)। বাকি বাগনান-১ ও ২, আমতা-১ ও ২, পাঁচলা ডোমজুড়, সাঁকরাইল, জগৎবল্লভপুর, উলুবেড়িয়া-১ বালি-জগাছা এবং উদয়নারায়ণপুর—এই ১১টি সমিতিতে সব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। ফলে, এই ১১টি সমিতিতে আপাতত বোর্ড গঠন হচ্ছে না।
শুক্রবার জেলার উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠকে মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া পঞ্চায়েত এবং সমিতিগুলিতে কী ভাবে কাজকর্ম চালানো হবে সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন বিডিও-রা। জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়ে দেন, রাজ্য পঞ্চায়েত আইনের ৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী যে সব পঞ্চায়েতে মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও বোর্ড গঠন করা যাচ্ছে না, সেখানে সরাসরি বিডিও কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করবেন, মহকুমাশাসক পঞ্চায়েত সমিতির কাজকর্ম দেখবেন।
রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, হাওড়া জেলায় এই মর্মে কাল, সোমবারের মধ্যেই নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তবে জেলা পরিষদের ৪০টি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ায় সেখানে নিয়ম মেনেই বোর্ড গঠন হবে।
মহকুমাশাসক এবং বিডিও-দের হাতে পঞ্চায়েত সমিতি এবং পঞ্চায়েতের নিয়ন্ত্রণ চলে যাওয়ায় উন্নয়নমূলক কাজ এবং ডেঙ্গি প্রতিরোধ অভিযান ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন জেলা প্রশাসনেরই একাংশ।
তাঁরা জানান, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন খাতের টাকা এসে পড়ে থাকলেও নিয়ম অনুযায়ী উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নিতে পারবেন না মহকুমাশাসক এবং বিডিও-রা। একশো দিনের প্রকল্পেও নতুন কোনও কাজের পরিকল্পনা করা যাবে না। মহকুমাশাসক এবং বিডিও-রা শুধুমাত্র পঞ্চায়েত এবং সমিতির দৈনন্দিন রুটিন কাজ ছাড়া কিছু করতে পারবেন না। বিভিন্ন শংসাপত্র যাচাই করে দেওয়ার ক্ষেত্রেও দেরি হবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে গত বছর থেকে পঞ্চায়েতগুলিও ডেঙ্গি প্রতিরোধে সক্রিয় হয়েছে। কিন্ত এ বছর বর্ষার মরসুমে পঞ্চায়েতগুলিকে ডেঙ্গি প্রতিরোধে নামানো যায়নি।
কারণ, বিদায়ী পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির সদস্যেরা আর এ ব্যাপারে আগ্রহ দেখাননি বলে অভিযোগ।
জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ মানছেন, এই অবস্থায় যে সব পঞ্চায়েতে বা সমিতিতে নতুন বোর্ড গঠন হচ্ছে না, সেখানকার সদস্যেরাও আইনগত বাধায় কাজ শুরু করতে পারছেন না।
অথচ পাড়ায় পাড়ায় প্রচার, ব্লিচিং পাউডার বিলি করা, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে মশা মারার তেল স্প্রে করা প্রভৃতি কাজে নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যদের বড় ভূমিকা থাকে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা মানছেন, নির্বাচিত বোর্ড না-থাকায় ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ কিছুটা হলেও ব্যাহত হচ্ছে। একইসঙ্গে তাঁর দাবি, স্বাস্থ্য দফতর এবং পঞ্চায়েতের কর্মীদের নিয়ে বিডিও-রা ডেঙ্গি প্রতিরোধে যাবতীয় ব্যবস্থা করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy