Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভাড়া দেব না বলেই মার কন্ডাক্টরকে

ঝন্টু মেটে নামে ওই কন্ডাক্টর জখম অবস্থায় ধনেখালি গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জখম: মারধর করা হয়েছে ঝন্টুকে। —নিজস্ব চিত্র।

জখম: মারধর করা হয়েছে ঝন্টুকে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ধনেখালি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৮ ০১:২০
Share: Save:

বাসে উঠে কোনওদিনই পুরো ভাড়া দিতে চান না ছাত্ররা। অর্ধেক ভাড়াতেই রাজি হন কন্ডাক্টর। তা নিয়ে বাকবিতন্ডাও কম হয় না। কিন্তু সেই অর্ধেক ভাড়াও না দিয়ে এ বার কন্ডাক্টরকে মারধর করার অভিযোগ উঠল কয়েকজন কলেজ ছাত্রের বিরুদ্ধে। এমনকী ভাঙচুর করা হল বাসও। ঝন্টু মেটে নামে ওই কন্ডাক্টর জখম অবস্থায় ধনেখালি গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সোমবার সকালে ধনেখালির এই ঘটনার প্রতিবাদে দিনভর তারকেশ্বর-চুঁচুড়া ১৭ নম্বর রুটের বাস পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। পুলিশে অভিযোগও জানানো হয়েছে বাস সংগঠনের তরফে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

বাস সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি কলেজের পড়ুয়াদের জন্য সিন্ডিকেটের তরফে বিশেষ কার্ডের ব্যবস্থা রয়েছে। সেই কার্ড দেখালে বাসে অর্ধেক ভাড়া দিতে হয়। তারকেশ্বর থেকে ধনেখালি যাওয়ার নির্ধারিত ভাড়া ২০ টাকা। ফলে পড়ুয়াদের ভাড়া দিতে হয় ১০ টাকা। কিন্তু তারকেশ্বর-চুঁচুড়া ১৭ নম্বর রুটের বাস চালক-কন্ডাক্টরদের অভিযোগ, অধিকাংশ পড়ুয়ার কাছেই সিন্ডিকেটের ওই কার্ড নেই। অথচ তাঁরা কিছুতেই পুরো ভাড়াও দিতে চান না।

ঠিক কী ঘটেছিল সোমবার?

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন জনা পাঁচেক ছাত্র তারকেশ্বর থেকে ধনেখালি কলেজে যাওয়ার জন্য বাসে ওঠেন। তাঁদের থেকে বারবার ভাড়া চাইলেও তাঁরা দিতে চাননি। কলেজের সামনে বাস দাঁড়ানোর পর ফের ভাড়া চান ঝন্টু। সেই সময়ই বাস থেকে ঝন্টুকে কলেজের সামনে নামিয়ে মারধর করেন ওই ছাত্ররা। যোগ দেন কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আরও জনা চল্লিশ যুবক। শুধু তাই নয়। ইট ছুড়ে বাসের কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। টায়ার ফুটো করে দেওয়া হয়। ভয়ে যাত্রীরা বাস থেকে নেমে পড়েন। বিষয়টি জানাজানির পর এ দিন ওই রুটের সব বাস বন্ধ ছিল দিনভর।

১৭ নম্বর রুটের বাসচালক শেখর হাজরা বলেন, ‘‘এর আগেও একবার ভাড়া চাওয়ায় আমাদের মারধর করেছিল ছাত্ররা। কিন্তু এ দিন একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করেছে ওরা। পুলিশকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি বাস সিন্ডিকেটকেও জানিয়ে দিয়েছি, এই অত্যাচার বন্ধ না হলে আমরা রুটের আর বাস চালাব না।’’ এক কন্ডাক্টরের কথায়, ‘‘ছাত্রদের অত্যাচারে আমাদের বাস চালানোই অসম্ভব। কলেজের বহু ছাত্র বাসে যাতায়াত করেন। তারা ভাড়া না দিলে আমাদের চলবে কী করে?’’

ধনেখালি কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ব্লক সভাপতি সৌমেন বসু অবশ্য অভিযোগ মানতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় ধনেখালি কলেজের কোনও ছাত্র জড়িত নয়। এখন কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা চলছে। হরিপাল ও তারকেশ্বর কলেজের সিট পড়েছে এই কলেজে। তাদের সঙ্গেই বোধহয় ঝামেলা হয়েছে। আমাদের কলেজের ছেলেরা গিয়ে বরং সমস্যা মিটিয়ে দিয়েছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bus Fare Dhaniakhali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE