Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Rural Economy

বছরের গোড়াতেই এল ১০০ কোটি, গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়ার আশা হাওড়ায়

ব্যতিক্রমী ভাবে এ বার নতুন বছরের গোড়াতেই গ্রামোন্নয়ন খাতে চতুর্দশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের দ্বিতীয় কিস্তির প্রায় ১০০ কোটি টাকা এল হাওড়ায়।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:৫৮
Share: Save:

ব্যতিক্রমী ভাবে এ বার নতুন বছরের গোড়াতেই গ্রামোন্নয়ন খাতে চতুর্দশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের দ্বিতীয় কিস্তির প্রায় ১০০ কোটি টাকা এল হাওড়ায়। সেই টাকায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাস্তাঘাট তৈরি, স্লুইস গেট মেরামত, কালভার্ট তৈরি, গ্রামীণ জলপ্রকল্পের মিনি পাম্প তৈরি প্রভৃতি কাজ। জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একটা বড় অংশ মনে করছেন, বছরের গোড়াতেই ওই টাকা আসায় চাঙ্গা হবে গ্রামীণ অর্থনীতি। গ্রামের গরিব মানুষের হাতে টাকা আসবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, হাওড়ায় মোট ১৫৭টি পঞ্চায়েত রয়েছে। এক-একটি পঞ্চায়েত ওই খাতে দু’টি কিস্তিতে বছরে গড়ে দেড় কোটি টাকা করে পায়। সাধারণত প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হয় সেপ্টেম্বর মাসে। সেই টাকার ৬০ শতাংশ টাকা খরচ হয়েছে, এই মর্মে রাজ্য ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ (ইউসি) দিলে বাকি কিস্তির টাকা দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু আগের বছরগুলিতে প্রথম কিস্তির টাকা সেপ্টেম্বরে দিয়ে দেওয়া হলেও দ্বিতীয় কিস্তির টাকা আসতে অনেক সময়ে ফেব্রুরারির শেষ বা মার্চের প্রথম সপ্তাহ লেগে যেত। ফলে, ওই অর্থবর্ষের বাকি দিনগুলির মধ্যে আর বেশিরভাগ টাকা খরচ করা যেত না। গ্রামের উন্নয়ন ঝুলে যেত। কাজ না হওয়ায় মানুষের হাতে টাকাও আসত না। এ বারেই তার ব্যতিক্রম হল বলে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের দাবি।

রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের এক কর্তা অবশ্য জানান, রাজ্যের প্রায় সাড়ে তিন হাজার পঞ্চায়েতের সবগুলিতেই চতুর্দশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা এসে গিয়েছে। তিনিও স্বীকার করেন, ‘‘এতে রাজ্য জুড়ে গ্রামীণ অর্থনীতি কিছুটা হলেও চাঙ্গা হবে।’’

হাওড়া জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানান, দু’টি কিস্তিতে এই জেলা চতুর্দশ অর্থ কমিশনের থেকে পায় ২০০ কোটি টাকার মতো। দ্বিতীয় কিস্তির টাকা জানুয়ারিতেই এসে যাওয়ায় তা খরচের জন্য অন্তত তিন মাস সময় পাওয়া যাবে। যে সব উন্নয়নমূলক কাজ হবে তাতে মজুর হিসাবে যোগ দিয়ে গ্রামের মানুষ রোজগার করতে পারবেন।

এ বার কেন ব্যতিক্রম?

জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ জানান, ধীরে ধীরে কেন্দ্রীয় সরকার পঞ্চায়েতগুলিকে একটি শৃঙ্খলায় বেঁধে ফেলছে। অর্থনীতি পরিচালনা করার ক্ষেত্রে চালু হয়েছে ই-গভর্ন্যান্স। পঞ্চায়েতগুলি একটি আর্থিক বছরে কী কাজ করতে চায় তার দফাওয়াড়ি হিসাব ওই সে বছরেরই ডিসেম্বরের মধ্যেই ই-গভর্ন্যান্স পদ্ধতির মাধ্যমে জানিয়ে দিতে হয় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতরকে। ফলে, প্রতিটি পঞ্চায়েতের কাজের বিষয়ে সরাসরি জানতে পারেন ওই দফতরের কর্তারা। শুধু তা-ই নয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায় নিজেও বিভিন্ন প্রশাসনিক সভায় সময়ে যাতে কাজ শেষ হয় তার জন্য জেলাশাসক এবং গ্রামোন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের চাপ দিতে থাকেন। জেলাশাসকরা এখন গ্রামে ঘুরে প্রশাসনিক বৈঠক করছেন। বরাদ্দ টাকা খরচের বাধাগুলি নিজেরা দূর করছেন। ফলে, যে টাকা পাওয়া যায় তা দ্রুত খরচ হচ্ছে এবং তার ‘ইউসি’-ও মিলে যাচ্ছে। সব মিলিয়েই পঞ্চায়েতগুলির মাধ্যমে টাকা খরচের ক্ষেত্রে একটা বিরাট পরিবর্তন এসেছে।

জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘আগের কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনগুলির নিয়মমতো বরাদ্দ টাকার ৬০ শতাংশ পেত পঞ্চায়েতগুলি। বাকি টাকার ২০ শতাংশ করে পেত যথাক্রমে পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ। কিন্তু চতুর্দশ অর্থ কমিশন নিয়ম করেছে সব টাকা পাবে পঞ্চায়েতগুলি। ফলে, এই টাকার পুরো সুফল‌ পাচ্ছেন পঞ্চায়েত এলাকায় বসবাসকারী মানুষেরাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE