মৃত: আসিফা খাতুন। নিজস্ব চিত্র
মাতৃযান-মালিকদের কর্তব্যে গাফিলতিতেই মৃত্যু হয়েছিল উলুবেড়িয়ার আসিফা খাতুনের। তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে এই তথ্য উঠে আসায় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের ওই অ্যাম্বুল্যান্স-মালিকদের ইতিমধ্যেই ভর্ৎসনা এবং সতর্ক করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি চূড়ান্ত রিপোর্ট অবশ্য এখনও জমা দেয়নি। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘তদন্তে শিশুটির বাবার অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। তাঁকে অন্যায় ভাবে মাতৃযান দেওয়া হয়নি।’’ হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘তদন্ত শেষ হয়েছে। চূড়ান্ত রিপোর্ট হাতে এলেই পরবর্তী প্রক্রিয়া হবে।’’
গত ১৪ জানুয়ারি সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত উলুবেড়িয়ার গুমুখবেড়িয়া গ্রামের আট মাসের ওই শিশুটিকে প্রথমে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকেরা তাকে জেলা হাসপাতালে ‘রেফার’ করেন। তাকে হাসপাতালের মাতৃযানে করে নিখরচায় নিয়ে যাওয়ার বাড়ির লোককে পরামর্শও দেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে ধর্মঘট চলায় কোনও মাতৃযান-চালকই তাঁর মেয়েকে নিয়ে যেতে রাজি হননি বলে অভিযোগ তুলেছিলেন আসিফার বাবা শেখ আসাদুল। তাঁর আরও অভিযোগ ছিল, মেয়ের ‘রেফার’ সংক্রান্ত কাগজপত্রও আটকে দেন ওই অ্যাম্বুল্যান্স-মালিকেরা। ফলে, আসাদুল বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সেও মেয়েকে নিয়ে যেতে পারেননি। সে দিন বিকেলে কাগজপত্র ফেরত পাওয়ার পরে আসাদুল বাইরে থেকে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে মেয়েকে নিয়ে রওনা হন। পথেই আসিফা মারা যায়।
নথি: গত ১৪ মার্চ সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর। নিজস্ব চিত্র
শিশুটির মৃত্যুর কথা জানাজানি হওয়ার পরেই মাতৃযান-চালকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কী ভাবে জরুরি পরিষেবা তাঁরা বন্ধ রেখে ধর্মঘটে নামেন, প্রশ্নও উঠেছিল। আসাদুলের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরেই কমিটি গড়ে নিজে তদন্ত শুরু করেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। গত ১৪ মার্চ ভবানীবাবুরা উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে আসেন। শিশুকন্যাটির বাবা এবং মাতৃযান-মালিকদের বয়ান রেকর্ড করেন। দিনকয়েক আগে সেই তদন্ত শেষ হওয়ার পরেই মাতৃযান-মালিকদের নিজের দফতরে ডেকে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কর্তব্যে গাফিলতির জন্যে ভর্ৎসনা এবং সতর্ক করেন বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। এ নিয়ে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে মাতৃযান পরিষেবা দেওয়ার জন্য বরাত পাওয়া সংস্থার পক্ষে রাসেদুল রহমান মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘যা বলার তদন্ত কমিটিকে বলেছি। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy