চলছে বিকিকিনি। —নিজস্ব চিত্র
হরেক পোশাক ২০ টাকা! তবে যে কেউ কিনতে পারবেন না। ক্রেতা নির্দিষ্ট। ‘বিক্রেতা’র হাতে কুপন ধরিয়ে পছন্দের পোশাক কিনে ফিরলেন তাঁরা। বিভিন্ন সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের মেলবন্ধনে রবিবার দেবীপক্ষের দ্বিতীয়ায় এমনই ‘বাজার’ বসেছিল হুগলির রিষড়ায়।
ওই উদ্যোগের কথা মাথায় আসে একটি ফেসবুক পেজের পাঁচ অ্যাডমিনের মাথায়। দীপঙ্কর সরকার, শুভম পাল, রূপম বসু, শুভ্রকান্তি সরকার এবং অভিজিৎ মৌলিক নামে ওই পাঁচ যুবকের বক্তব্য, লকডাউন-পর্বের কারণে বহু মানুষের দুরবস্থা এখনও ঘোচেনি। নিজেদের শহরে এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় এমন কিছু মানুষকে খুঁজে তাঁদের হাতে নতুন পোশাক তুলে দেওয়ার কথা ভাবেন তাঁরা।
বিষয়টি নিয়ে তাঁরা বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এগিয়ে আসেন নাচের স্কুল, যোগাসন শিক্ষাকেন্দ্র, নাট্যদল-সহ ১৩টি সংগঠন। এক একটি সংগঠন বেশ কিছু মানুষকে নতুন পোশাক কিনে দেওয়ার দায়িত্ব নেয়। খোঁজ শুরু হয় দুঃস্থ পরিবারের। সেই পরিবারগুলির কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় একটি করে কুপন।
রবিবার রিষড়ার বিশ্ব পরিবার এলাকায় স্থানীয় পুরসভার ‘ছুটির আসর’ কমিউনিটি হলে ওই সমস্ত সংগঠনের তরফে স্টল খোলা হয়। কুপন হাতে বাজারে আসেন সেই পরিবারগুলির সদস্যেরা। সেখান থেকেই ২০ টাকা দিয়ে নতুন পোশাক কিনে নিয়ে যান প্রান্তিক এবং অসহায় পরিবারের লোকেরা। সব মিলিয়ে অন্তত ৫০০ জন এসেছিলেন পোশাক কিনতে। কচিকাঁচা থেকে নব্বই ছুঁইছুঁই বৃদ্ধ— সকলেই ছিলেন সেই তালিকায়। নিজের বা ছেলেমেয়ের জন্য পোশাক হাতে লকডাউনে কাজ হারানো পরিচারিকা, অথবা বন্ধ কারখানার শ্রমিক, হাসিমুখে বাড়ি ফিরলেন সকলেই। ক্রেতাদের থেকে য়ে অর্থ সংগ্রহ করা হল, তা কল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করার পরিকল্পনা রয়েছে উদ্যোক্তাদের।
নাট্যকর্মী রঞ্জন দত্ত, সামাজিক সংগঠনের সদস্য সুজিৎ সাহারা জানান, মূলত ছোট ছেলেমেয়ে, মহিলা, বয়স্কদের জন্যই আয়োজন ছিল। ছোটদের ফ্রক, জামা, টি-শার্ট, মেয়েদের লেগিংস-কুর্তি, বড়দের শাড়ি, ধুতি-পাঞ্জাবি সবই ছিল ‘খুশির বাজারে’। ছিল খাবার স্টলও। স্বল্প দামে মিলল মুখরোচক নানা খাবার। উদ্যোক্তাদের দাবি, করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে যথাসম্ভব ভিড় এড়িয়েই ওই আয়োজন করা হয়েছিল।
রঞ্জন বলেন, ‘‘প্রান্তিক মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে পেরে ভাল লাগছে। সমবেত চেষ্টায় এটা সম্ভব হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির জন্য অনেকেই হয়তো বেরোতে পারবেন না। কিন্তু নতুন পোশাক পরে পুজোর আনন্দ নিশ্চয়ই উপভোগ করবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy