Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
Mogra

পুজোয় ডিজে-প্লাস্টিক বর্জনে পুরস্কার

প্রতিযোগিতার প্রথম স্থানে রয়েছে কোলা বান্ধব সম্মিলনী। দ্বিতীয়— কাঁটাপুকুর প্রিয় সমিতি।

পুরস্কার নিচ্ছেন কোলা বান্ধব সম্মিলনীর পুজোর উদ্যোক্তারা। — নিজস্ব িচত্র

পুরস্কার নিচ্ছেন কোলা বান্ধব সম্মিলনীর পুজোর উদ্যোক্তারা। — নিজস্ব িচত্র

প্রকাশ পাল
মগরা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:০২
Share: Save:

পরীক্ষায় ‘লেটার’ মেলেনি। তবে, ‘মার্কশিটে’ নম্বর ষাটের বেশি!

স্কুল-কলেজের পরীক্ষা নয়, মগরায় সরস্বতী পুজোয় পরিচ্ছন্নতা এবং পরিবেশ সচেতনতার নিরিখে আয়োজিত প্রতিযোগিতার প্রথম তিন স্থানাধিকারীর ফল এমনই। পরিবেশ সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল মগরা বিজ্ঞান ক্লাব এবং শ্রীগোপাল ব্যানার্জি কলেজের প্রাক্তনী সংসদ। তাদের পর্যবেক্ষণ, এই পুজোয় ডিজের উৎপাত সার্বিক ভাবে অনেক কমেছে। প্লাস্টিক ব্যবহার না করার ব্যাপারেও কিছু পুজো কমিটি এগিয়ে এসেছে।

প্রতিযোগিতার প্রথম স্থানে রয়েছে কোলা বান্ধব সম্মিলনী। দ্বিতীয়— কাঁটাপুকুর প্রিয় সমিতি। তৃতীয়— জয়পুর সবুজ সঙ্ঘ। শুক্রবার ওই তিন পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের হাতে আর্থিক পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। কলেজের প্রাক্তনীদের সংগঠনের সভাপতি প্রশান্তকুমার গোস্বামী বলেন, ‘‘এখানে গোটা চল্লিশ বারোয়ারি পুজো হয়। প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার জন্য আমাদের তরফে পরিবেশ সংক্রান্ত কিছু শর্তের কথা বলা হয়েছিল। ২১টি পুজো কমিটি তাতে সাড়া দেয়। পরিবেশ ভাবনা, পরিচ্ছন্নতা, শব্দের তীব্রতার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, রুচিকর সঙ্গীতের ব্যবহার প্রভৃতি বিষয় মিলিয়ে ১০০ নম্বর ধরা হয়েছিল। উৎসবজনিত দূষণের মাত্রা যতটা সম্ভব কমানো যায়, সেটাই প্রতিযোগিতার লক্ষ্য ছিল।’’

কোলা বান্ধব সম্মিলনীর সহ-সম্পাদক অমর বাগ, কাঁটাপুকুর প্রিয় সমিতির কর্মকর্তা কৌশিক মুখোপাধ্যায়দের বক্তব্য, তাঁদের মণ্ডপে ডিজে বক্স বাজানো হয় না। অমরের কথায়, ‘‘ডিজে নিয়ে আমরা বরাবরই সচেতন। এ বার প্লাস্টিকের ছোঁয়াচও যতটা সম্ভব এড়ানো গিয়েছে। মণ্ডপের আশপাশে কয়েকটি স্টল বসেছিল। আমাদের আর্জিতে তারাও প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ, কাপ ব্যবহার করেনি। পরিবেশ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আমরা প্রচার চালিয়েছি।’’ প্রিয় সমিতির পুজো ভাবনাতেও রয়েছে পরিবেশ সচেতনতার প্রতিফলন। গাছ লাগানো এবং বাঁচানোর আর্জি জানানো হয়েছে সেই ভাবনায়। কৌশিক বলেন, ‘‘ডিজে এবং প্লাস্টিক বর্জনের পাশাপাশি আমরাও ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, করোনাভাইরাস প্রভৃতি বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে পোস্টার, ব্যানার লাগিয়েছি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘গত কয়েক বছরে এই পুজোয় শব্দের তাণ্ডব অনেক নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এই সময় মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকে। এখনও যাঁরা জোরে মাইক বাজান, তাঁদের কাছে অনুরোধ, সচেতন হোন।’’

মগরা-১ ও ২ পঞ্চায়েত এলাকা জুড়ে পুজো হয়। মগরা-১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রঘুনাথ ভৌমিকের দাবি, এ বার শব্দের দাপট অনেক কম ছিল। তিনি বলেন, ‘‘দর্শনার্থীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেই জন্য পুজোর সময় এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে পঞ্চায়েতের তরফে সব ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছিল।’’ পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের দাবি, শৌচাগারের দিক থেকে এখানে দর্শনার্থীদের সমস্যায় পড়তে হয় না। মগরা স্টেশন, গ্রন্থাগার, বাজার সমিতি, পুরাতন ব্রিজ সংলগ্ন জায়গায়, বিভিন্ন ক্লাবের মাঠের ধারে সরকারি ভাবে তৈরি ‘কমিউনিটি টয়লেট’ রয়েছে। কয়েকটি ক্লাবের নিজস্ব শৌচাগারও দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। রঘুনাথবাবু জানান, শীঘ্রই আরও তিনটি শৌচাগার তৈরি হবে।

পঞ্চায়েতের কর্তারা জানান, এখানে বাড়ি বাড়ি জঞ্জাল সংগ্রহের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু গ্রামবাসীদের একাংশের সচেতনতার অভাবে পরিকল্পনা পুরো সফল হচ্ছে না। কলেজের প্রাক্তনীরা পঞ্চায়েতের সঙ্গে এই ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করার কাজ করবেন। উৎসব-অনুষ্ঠানে ডিজের দাপট যাতে পুরোপুরি বন্ধ হয়, সেই চেষ্টা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mogra Saraswati Puja Plastic Ban
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE