সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা গিয়েছে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন সুন্দরবাহাদুর মাজি। নিজস্ব চিত্র
হাওড়ার চ্যাটার্জিহাটে সমবায় ব্যাঙ্কের ভল্ট খুলে টাকা লুঠের ঘটনা দীর্ঘ পরিকল্পনা করেই করা হয়েছিল বলে ধারণা পুলিশের। কোনও বড় মাথা এই ঘটনার পিছনে আছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। ব্যাঙ্ক থেকে অভিযুক্ত রক্ষী সুন্দরবাহাদুর মাজির মোবাইলটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে পুলিশ চক্রান্তকারীদের খুঁজবে এবং মোবাইল ফোনের টাওয়ারের অবস্থান দেখে তাঁর গতিবিধি জেনে যাবে, তা বুঝতে পেরেই সুন্দর সেটি বাড়িতে রেখে গিয়েছেন বলে মনে করছে পুলিশ।
গত শনিবার শরৎ চ্যাটার্জি রোডের ওই সমবায় ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে অভিযোগ করা হয়, ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা কর্মী সুন্দরবাহাদুর গত ২৩ জানুয়ারি দু’টি ব্যাগ নিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। তার পর আর খোঁজ মেলেনি তাঁর। ভল্ট-সহ ব্যাঙ্কের যাবতীয় চাবি থাকত তাঁর কাছেই। এই অভিযোগ করার পরের দিনই ব্যাঙ্ক কতৃর্পক্ষ সিদ্ধান্ত নেন পুলিশের উপস্থিতিতে ভল্ট ভাঙা হবে। রবিবার ভল্ট ভাঙতেই দেখা যায়, সেখান থেকে ৮ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছে।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ সমস্ত দিক খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে। যে কোনও ব্যাঙ্কে নিরাপত্তার কারণে ভল্টের দু’টি চাবি রাখা হয়। একটি চাবি থাকে ম্যানেজারের কাছে, অন্যটি থাকে হিসাবরক্ষকের কাছে। এ ক্ষেত্রে কেন দীর্ঘ দিন ধরে এক রক্ষীর কাছে ভল্ট-সহ ব্যাঙ্কের সব চাবি রাখা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি, ভল্টের চাবির কোনও নকল কেন উচ্চপদস্থ কোনও কর্মীর কাছে ছিল না, তা-ও দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীদের বক্তব্য, ওই রক্ষী পালানোর দিন চারেক পরে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সে জন্য তদন্তে অনেকটাই সমস্যা হচ্ছে। যে টোটো করে সুন্দর পালান, সেটি চিহ্নিত করা এখন যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ। কারণ এত দিন আগের সমস্ত শহরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখতে গেলে আরও অনেকটা সময় পেরিয়ে যাবে। এতে তদন্তে ক্ষতি হবে।
তাই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ব্যাঙ্ককর্তাদেরও সন্দেহের উর্দ্ধে রাখছে না। প্রয়োজনে তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ দিকে এ দিন সমবায় ব্যাঙ্কের ভল্ট খুলে টাকা লুটের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই সোমবার গ্রাহকদের দীর্ঘ লাইন পড়ে ব্যাঙ্কের সামনে। ব্যাঙ্ক কর্তাদের দাবি, মূলত যে সব গ্রাহকের লকার রয়েছে তাঁরা এ দিন লকার খুলে তাঁদের গচ্ছিত সম্পত্তি ঠিক আছে কিনা তা দেখতে এসেছিলেন। লকার অক্ষত দেখে তাঁরা নিশ্চিন্তে ফিরে গিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy