বিতর্কে: ভাবাদিঘি। ফাইল চিত্র
তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্পে ভাবাদিঘি-জট কাটাতে এ বার আলোচনায় জোর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সন্ন্যাসীদের কাছেও আবেদন করেন তিনি।
শুক্রবার তারকেশ্বরের বালিগোড়িতে পরিষেবা প্রদান সভায় জেলার নানা প্রকল্প রূপায়ণের কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘একমাত্র তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুর অব্দি রেলপথ হয়নি। আমি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন প্রকল্পটি গতি পায়। ওই রেলপথ নির্মাণে গোঘাটের ভাবাদিঘিতে একটি সমস্যা আছে। আমাদের পরিকল্পনা আছে কামারপুকুর-জয়রামবাটীকে সাজানো। আমরা মানুষের সঙ্গে কথা বলছি। মানুষকে বোঝাতে পারলেই সমস্যার সমাধান হবে। কামারপুকুর মঠ ও মিশনের মহারাজদেরও অনুরোধ করব, আপনারা ব্যাপারটা নিয়ে মানুষকে বোঝান।” এ দিন টিভিতে মুখ্যমন্ত্রীর ওই বক্তব্য শোনার পরে ‘দিঘি বাঁচাও কমিটি’র সম্পাদক সুকুমার রায় বলেন, “এ বার মুখ্যমন্ত্রী দিঘি নিয়ে কোনও কড়া মনোভাব দেখাননি। খুব ভাল। আমরাও বরাবরই রেলের পক্ষে। আমরা চেয়েছি দিঘি বাঁচিয়ে তার উত্তরপাড় দিয়ে রেলপথ হোক।”
২০০১ সালে এনডিএ সরকারের রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তারকেশ্বর থেকে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর এই ৮২.৫ কিলোমিটার রেল প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। ২০১২ সালের ৪ জুন আরামবাগ থেকে তারকেশ্বর তথা হাওড়া পর্যন্ত রেল চলাচল উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে গোঘাট পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণ হয়। বর্তমানে কামারপুকুর পর্যন্ত রেলপথের মাটির কাজও সম্পন্ন। খালি ভাবাদিঘি অংশটা বাকি। গ্রামবাসী তথা ৫২ বিঘারও বেশি আয়তনের ওই দিঘির অংশীদাররা তার একাংশ বুজিয়ে রেলপথ নির্মাণে আপত্তি করে আন্দোলন শুরু করেছেন।
আন্দোলনকারীদের দাবি, এর আগে মুখ্যমন্ত্রী বারাবর রেলপথ নির্মাণ নিয়ে তাঁদের দাবিকে গুরুত্ব না-দিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছিলেন। গত বছর মার্চে গুড়াপের প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী তৎকালীন জেলাশাসক সঞ্জয় বনশলকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ভাবাদিঘি নিয়ে সিপিএমের যে ক’জন বাধা দিচ্ছেন, তাঁদের চিহ্নিত করুন। মানুষ যখন চাইছেন সেখানে রেলপথ হবেই। তার আগের বছর বাঁকুড়ার প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ছিল, “ভাবাদিঘিতে রেলপথ হবেই। ওখানে রাজনীতি করে কিছু লাভ হবে না। কামারপুকুর ঠাকুরের জন্মস্থান, জয়রামবাটী সারদা মায়ের জন্মস্থান। কামারপুকুর, জয়রামবাটি ও বিষ্ণুপুরকে রেলপথের আওতায় আনা আমার স্বপ্নের প্রকল্প। তার জন্য যা করতে হয়, তাই করব।”
সেই তুলনায় মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের সুর অনেক নরম বলে মনে করছেন আন্দোলনকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy