গত বছর ছিল প্রেশার কুকার। এ বার রক্ত দিতেই মিলল তিন লিটারের হাঁড়ি।
আর রক্তদানের পর ভাত, ডাল, আলু-পটলের তরকারি, কাতলা মাছ, মুরগির মাংস এবং চাটনি তো ছিলই।
গত বছর তারকেশ্বর পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান উত্তম কুণ্ডুর উদ্যোগে আয়োজিত রক্তদান শিবিরের এলাহি আয়োজন এবং উপহার দেওয়া নিয়ে সমালোচনা কম হয়নি। কিন্তু তার পরেও এ বার একই পথে হাঁটলেন উদ্যোক্তারা। শনিবার তারকেশ্বর স্টেশনের পাশে আয়োজিত শিবিরে তফাত একটাই। গতবার রক্তদাতাদের জন্য উপহার রাখা ছিল মঞ্চের পাশে। এ বার পাশের খেলার মাঠে। প্রতিবন্ধীরা পেলেন হুইল চেয়ার। বিবাহযোগ্য মেয়েদের জন্য উপহারও বাদ যায়নি।
কিছুদিন আগেই শ্রীরামপুরে একটি শিবিরে রক্তদাতাদের গাছের চারা বিলি করা হয়েছিল। একই ছবি সম্প্রতি দেখা গিয়েছে মেদিনীপুর এবং কলকাতাতেও। রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতরা সেই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও দীর্ঘদিন ধরেই দামি উপহারের বদলে রক্তদানের বিপক্ষে তাঁরা। তাঁদের মতে, উপহারের লোভে অনেক ক্ষেত্রে দাতা নিজের রোগ এড়িয়ে রক্ত দেন। ফলে, রক্ত নেওয়ার পরে রোগীর কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। রাজ্যের ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স’-এর সম্পাদক অমিত দাস বলেন, ‘‘উপহার না দিয়ে রক্তদান শিবির করার জন্য আমরা সচেতনতা প্রচার করছি। সরকারকেও এ ব্যাপারে ভাবতে হবে। এমন পরিস্থিতি তৈরি হোক, যেখানে রক্তদাতা উপহার বয়কট করবেন।’’
তবে, এমন শিবিরের আয়োজন করতে পেরে উত্তমবাবু তৃপ্ত। বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী রক্তদানের ডাক দিয়েছেন। তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা তাতে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়েছেন।’’ তাঁর দাবি, রক্তদাতাদের উপহার দেওয়া হয়নি। ফলের প্যাকেট দেওয়া হয়। উদ্যোক্তারা জানান, গত বছর ৩৭০০ লোক রক্ত দিয়েছিলেন। এ বার সংখ্যাটা চার হাজারেরও বেশি। ৯টি ব্লাডব্যাঙ্ক রক্ত নিয়ে গিয়েছে। এলাকায় গুঞ্জন, প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে এই শিবিরে। উত্তমবাবুর দাবি, ‘‘শিবিরের জন্য কারও থেকে টাকা নিইনি। দলের কোনও কাউন্সিলর বা পঞ্চায়েত প্রধান হয়তো জমানো টাকা দিয়েছেন।’’
ছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, দলের জেলা সভাপতি তথা কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত, মন্ত্রী অসীমা পাত্র এবং সাংসদ অপরূপা পোদ্দার প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy