ফাইল চিত্র।
সিঙ্গুরের জেলায় জমি নিয়ে বিতর্ক আদালত ভবন তৈরিতেও!
নতুন আদালত ভবন কোথায় হবে, তা নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আইনজীবীদের টানাপোড়েন চলছে। আর তাতেই গত এক মাস ধরে আইনজীবীদের কর্মবিরতিতে চুঁচুড়া আদালতে লাটে উঠেছে কাজকর্ম। নাজেহাল বিচারপ্রার্থীরা।
প্রশাসনের মতে, নির্ধারিত জায়গায় ভবন তৈরির পর্যাপ্ত জমি নেই। আইনজীবীদের বক্তব্য, ওখানেই ভবন তৈরি করতে হবে। প্রয়োজনে ভবন উচ্চতায় বাড়ানো হোক।
কিন্তু, দাবি আদায়ের জন্য দিনের পর দিন সাধারণ বিচারপ্রার্থীদের হয়রান করে কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলন চলতে পারে? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সংশ্লিষ্ট নানা মহলে। আন্দোলনকারী আইনজীবীরা অবশ্য অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, বিভিন্ন বিষয়ে এই আদালত বঞ্চিত। প্রস্তাবিত ভবন অন্যত্র সরতে দেওয়া হবে না।
১১ দফা দাবিতে কর্মবিরতি শুরু হয়। মূল দাবি অবশ্য দু’টি। প্রথমত, নতুন ভবনের জায়গা নিয়ে সমস্যা। সূত্রের খবর, বার লাইব্রেরির পাশেই নতুন ভবন হবে বলে ঠিক হয়েছিল। মাটি পরীক্ষা থেকে নকশা— সবই চলছিল। প্রকল্পের খরচ বাবদ প্রায় ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। প্রথম ধাপে এক কোটি টাকা আসে। কিন্তু ওই জায়গায় ভবনের পরিকল্পনা নিয়ে দ্বিমত পোষণ করে জেলাশাসকের দফতর। পর্যাপ্ত জায়গার অভাবের কথা বলে হাতে আসা টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। অন্যত্র ভবন সরানোর চিন্তাভাবনা শুরু হয়। এতে আইনজীবীরা বেঁকে বসেন।
দ্বিতীয়ত, চুঁচুড়া আদালত ভবনেই দীর্ঘদিন ধরে জেলাশাসকের দফতর ছিল। বছর খানেক আগে নতুন প্রশাসনিক ভবন হয়েছে। তবে সব দফতর এখনও সেখানে স্থানান্তরিত হয়নি। আইনজীবীদের বক্তব্য, আদালতে স্থান সঙ্কুলানের অভাব রয়েছে। প্রশাসনিক দফতর পুরো খালি না হলে সমস্যা মিটবে না।
আইনজীবীদের একটি সূত্রের খবর, কর্মবিরতির জেরে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে নড়াচড়া শুরু হয়। দিন তিনেক আগে হাইকোর্টের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে স্থির হয়েছে, বার লাইব্রেরির পাশে নির্ধারিত জায়গাতেই প্রস্তাবিত ভবনটি হবে। পাশাপাশি, আদালত ভবন থেকে সমস্ত বিভাগ সরিয়ে নেওয়ার জন্য জেলাশাসকের দফতরকে রাজ্য সরকারের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের ‘ল ওয়েলফেয়ার স্টিয়ারিং কমিটির’ তরফে বিদ্যুৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘দু’টি ব্যাপারই আমরা শুনেছি। তবে লিখিত কিছু পাইনি। লিখিত পেলে, কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হবে।’’
কিন্তু এ সবের জন্য সাধারণ বিচারপ্রার্থীদের বিপাকে ফেলে কর্মবিরতির যৌক্তিকতা কী?
বিদ্যুৎবাবুর বক্তব্য, ‘‘বহুবার সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর কোনও উপায় না থাকাতেই কর্মবিরতি করা হয়েছে। তবে স্থানীয় মানুষজন আমাদের অবস্থানকে সমর্থন করছেন। দাবি পূরণ হলে আখেরে বিচারপ্রার্থীরা উপকৃত হবেন। আদালত চত্ত্বর সংলগ্ন জায়গার ব্যবসায়ী, পরিবহণ ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবেন।’’
জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, ‘‘আদালতের জমি হস্তান্তর করেছে পূর্ত দফতর। জমি জরিপ চলছে। সমস্যা দ্রুত মিটে যাবে।’’
আজ, শুক্রবার সাধারণ সভা ডেকেছে ‘ল ওয়েলফেয়ার স্টিয়ারিং কমিটি’। সমস্যা কতটা মেটে
সেটাই দেখার!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy