Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
পুলিশের লাঠিতে ছত্রভঙ্গ বিক্ষোভকারীরা
Coronavirus in Howrah-Hoogly

করোনা-আক্রান্তের দেহ দাহ করতে বাধা বাঁশবেড়িয়ায়

চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীরের বক্তব্য, প্রশাসনের তরফে সব দিক বিবেচনা করেই ওই ঘাট করোনায় মৃতের দেহ সৎকারের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়।

বাঁশবেড়িয়ায় বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

বাঁশবেড়িয়ায় বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁশবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২০ ০৬:১৫
Share: Save:

করোনা আক্রান্তের দেহ দাহ করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ল পুলিশ। জনবহুল জায়গায় ওই কাজ করা হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে দাহ করতে বাধা দেওয়া হয়। শেষে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। তার পরে সেখানেই দেহটি দাহের ব্যবস্থা করা হয়। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির বাঁশবেড়িয়া শহরের গন্ধেশ্বরী শ্মশানঘাটে।

চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীরের বক্তব্য, প্রশাসনের তরফে সব দিক বিবেচনা করেই ওই ঘাট করোনায় মৃতের দেহ সৎকারের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়। যাবতীয় প্রোটোকল মেনেই ওই কাজ করা হয়েছে। সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর কোনও আশঙ্কা নেই। কিছু লোক অকারণেই বাধা সৃষ্টি করছিলেন।

স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার সন্ধ্যা থেকে ওই শ্মশানে করোনা আক্রান্তের দেহ দাহের তোড়জোড় চলছিল। পুলিশের আনাগোনা দেখে বিষয়টি আঁচ করে স্থানীয় কিছু লোক সেখানে জড়ো হন। রাত ন’টা নাগাদ চুঁচুড়া থানার পুলিশ একটি দেহ নিয়ে সেখানে পৌঁছতেই তাঁরা রে রে করে ওঠেন। দাবি করেন, জায়গাটি জনবহুল। এখানে ওই দেহ দাহ করলে সংক্রমণ ছড়াবে। সেটি যেন অন্য কোথাও নিয়ে গিয়ে সৎকার করা হয়।

পুলিশ আধিকারিকরা বোঝানোর চেষ্টা করেন, যাবতীয় বিধি মেনেই সৎকার করা হবে। সংক্রমণ ছড়াবে না। বিক্ষোভকারীরা তা মানতে চাননি। শেষ পর্যন্ত রাত ১২টা নাগাদ পুলিশ লাঠি চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ।

স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্ববন্ধু ভট্টাচার্য্য, মিঠুন কুণ্ডুদের বক্তব্য, ‘‘জনবহুল জায়গায় এই দেহ পোড়ান কি যুক্তিসঙ্গত? তা ছাড়া, শনিবার রাতেও এখানে পুলিশ একটি দেহ দাহ করেছিল। তার পরে ব্যবহার করা পিপিই, গ্লাভস পড়েছিল। সেই জন্য প্রতিবাদ করেছি। পুলিশ লাঠিপেটা করল।’’ সিপি বলেন, ‘‘বিক্ষোভকারীদের বার বার বলা হয়, প্রশাসনের ঠিক করা জায়গাতেই যাবতীয় নিয়ম মেনে দাহ করা হবে। তা সত্বেও বাধা দেওয়ায় মৃদু লাঠিচার্জ করা হয়। এই কাজে যুক্তিহীন ভাবে বাধা সৃষ্টি করলে প্রয়োজনে আইন অনুযায়ী কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

বাঁশবেড়িয়ার পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন অরিজিতা শীল বলেন, ‘‘প্রশাসনের নির্দেশেই ওখানে দাহ করা হয়েছে। কিছু লোক অকারণেই বাধা দিয়েছেন। তাঁরা সরকারি নির্দেশ জানেন না।’’ পিপিই, গ্লাভস পড়ে থাকার কথা পুর-কর্তৃপক্ষ মানেননি। মুখে সং‌ক্রমণ ছড়ানো নিয়ে ভয়ের কথা বললেও বিক্ষোভকারীদের অনেকে নিজেরাই বিধিনিষেধের ধার ধারেননি বলে অভিযোগ। সেখানে শারীরিক দূরত্বের বালাই ছিল না। সকলের মুখে মাস্কও ছিল না বলেও অভিযোগ।

এই নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কী থেকে করোনাভাইরাস ছড়ায়, হাজারো প্রচার সত্বেও সেই ব্যাপারে অনেকেরই ধারণা গড়ে ওঠেনি। এই সব মানুষই ভাইরাস ছড়ানোর জন্য বেশি দায়ী।’’

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in Howrah-Hoogly COVID-19 Bansberia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE