Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
জটিল হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি, বাড়ছে উদ্বেগ
Coronavirus

মোকাবিলার প্রস্তুতি সারা, দাবি প্রশাসনের 

শনিবার জেলা প্রশাসনের তরফে প্রতিটি ব্লক এবং পুরসভার টাস্ক ফোর্সের কর্তাদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করেন জেলাশাসক মুক্তা আর্য। সেখানেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

ব্যবস্থা: জয়পুর কলেজে তৈরি হয়েছে আইসোলেশন ওয়ার্ড। নিজস্ব চিত্র

ব্যবস্থা: জয়পুর কলেজে তৈরি হয়েছে আইসোলেশন ওয়ার্ড। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদা
শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২০ ০১:৩৪
Share: Save:

দেশে এবং রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে প্রাণহানি। সংক্রমণ তৃতীয় ধাপের দিকে এগোচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকদের অনেকে। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ মোকাবিলায় হাওড়া জেলায় কোয়রান্টাইন কেন্দ্র ও আইসোলেশন কেন্দ্র বাড়ানো হচ্ছে।

শনিবার জেলা প্রশাসনের তরফে প্রতিটি ব্লক এবং পুরসভার টাস্ক ফোর্সের কর্তাদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করেন জেলাশাসক মুক্তা আর্য। সেখানেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, এতদিন পর্যন্ত বিদেশ থেকে আসা কোনও ব্যক্তির করোনা হওয়ার আশঙ্কা আছে, এটা ধরে নেওয়া হত। সেই হিসেবে বিদেশ বা ভিন্‌ রাজ্য থেকে আসা ব্যক্তিদের জন্য বরাদ্দ ছিল কোয়রান্টিন। কিন্তু এই রোগের তৃতীয় ধাপে রয়েছে, বিদেশ-ফেরতরা যাঁদের সঙ্গে মিশেছেন, তাঁদের মধ্যে করোনা ছড়িয়ে যাওয়া বা গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা। এই অবস্থায় বিদেশ বা ভিন্‌ রাজ্য থেকে আসা কারও যদি করোনা ধরা পড়ে তা হলে তিনি এখানে যাঁদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাঁদের খুঁজে বের করে সবাইকে কোয়রান্টিনে রাখতে হবে। সেই সংখ্যা অনেকটা বেশি। সেই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখেই কোয়রান্টিনের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।

শুধু তা-ই নয়, ইতিমধ্যে বিদেশ এবং ভিন্‌ রাজ্য থেকে আসা যে সব ব্যক্তিদের হোম কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে তাঁদের মধ্যেও অনেকে নিয়ম মেনে থাকতে চাইছেন না বলে অভিযোগ। তাঁদেরও এ বার থেকে সরকারি কোয়রান্টিনে এনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলাশাসক মুক্তা আর্য বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে কোনও ঝুঁকি নেওয়া যাবে না।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, এতদিন জেলায় মোট তিনটি কোয়রান্টিন কেন্দ্র ছিল। সেগুলি হল ডুমুরজলা স্টেডিয়াম (১৩০ শয্যা), উলুবেড়িয়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল (৬০ শয্যা) এবং বাউড়িয়া ফোর্ট গ্লস্টার হাসপাতাল (১৫ শয্যা)। শনিবার ঠিক হয় জেলার প্রতিটি ব্লক এবং পুর এলাকাতে এক বা একাধিক কোয়রান্টিন কেন্দ্র গড়া হবে। সব মিলিয়ে কোয়রান্টিন কেন্দ্রের সংখ্যা হবে ৩৫টি। শয্যার সংখ্যা হবে ১৭২৩টি। বাড়ানো হচ্ছে আইসোলেশন কেন্দ্রের সংখ্যাও। বর্তমানে জেলায় তিনটি আইসোলেশন কেন্দ্র রয়েছে। উলুবেড়িয়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল (৪ শয্যা), হাওড়া জেলা হাসপাতাল (৪ শয্যা) এবং সত্যবালা আইডি হাসপাতাল (১০ শয্যা)। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি গ্রামীণ হাসপাতাল এবং ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আইসোলেশন কেন্দ্র হবে। মোট আইসোলেশন কেন্দ্রের সংখ্যা দাঁড়াবে ১৮টিতে। মোট শয্যা হবে ১৭৭টি।

শনিবার প্রায় সব ব্লকেই নতুন কোয়রান্টিন কেন্দ্র ও আইসোলেশন কেন্দ্র গড়া শুরু হয়ে যায়। আমতা-২ ব্লকের জয়পুর কলেজে ৫১ শয্যার কোয়রান্টিন কেন্দ্র এবং বি বি ধর গ্রামীণ হাসপাতালে ১২ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড গড়া হয়েছে বলে জানান পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকান্ত পাল। ডোমজুড় গ্রামীণ হাসপাতালে নার্সদের আবাসনে ২০ শয্যার কোয়রান্টিন কেন্দ্র গড়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। চার শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ডও গড়া হয়েছে হাসপাতালে। নার্সদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে একটি লজে। একইসঙ্গে কোয়রান্টিন এবং আইসোলেশন কেন্দ্রগুলিতে যে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা থাকবেন, তাঁদের জন্য বিশেষ মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার এবং গাউনের ব্যবস্থাও করা হবে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE