Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

ছাদে পায়চারি আর গাছ পরিচর্যায় কাটছে দিন

এখন আমার বয়স ৭৯ বছর। গত এক দশক এমন অভিযান না করলেও গৃহবন্দি থাকার প্রশ্নই ছিল না।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৫১
Share: Save:

ছোটবেলা থেকেই ঘরে থাকা আমার ধাতে নেই। তরুণ বয়স থেকে দীর্ঘদিন পর্বতারোহণ করেছি। অদ্ভুত এক নেশায় দুর্গম পথে ঘুরে বেড়িয়েছি। বিভিন্ন সময়ে নানা বার্তা নিয়ে ছুটে গিয়েছি দেশ-বিদেশের নানা প্রান্তে। শ্রীলঙ্কা ঘুরেছি সাইকেলে। জম্মু থেকে অরুণাচল পর্যন্ত সাইকেল-যাত্রা করেছি। গঙ্গাসাগর থেকে হেঁটে দিল্লি, যমুনোত্রী, গোমুখ হয়ে উত্তরকাশী গিয়েছি। সমুদ্রতট ধরে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের উপর দিয়েও হেঁটেছি। এগারো বছর আগেও কলকাতায় রাজভবন থেকে হেঁটে রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়েছি। সেখান থেকে হেঁটে ওয়াঘা বর্ডার।

এখন আমার বয়স ৭৯ বছর। গত এক দশক এমন অভিযান না করলেও গৃহবন্দি থাকার প্রশ্নই ছিল না। ভোর চারটেয় ঘুম থেকে উঠে মর্নিংওয়াক থেকে সাঁতারের ক্লাবে যাওয়া, আপদে-বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানো— এ সব করেই সময় কেটে যাচ্ছিল। কিন্তু ‘জনতা কার্ফু’র দিন থেকে আমি আর বাড়ি থেকে বেরোইনি। পেনশন আনতে যাইনি, রেশন দোকানেও যাইনি। পাড়ার আনাজ বিক্রেতার থেকে কেনাকাটা সেরে নিচ্ছি। বাড়িতে একাই থাকি। ঘুম থেকে উঠছি ভোর পাঁচটা-সাড়ে পাঁচটায়। তার পরে ছাদে উঠে ঘণ্টা দুয়েক পায়চারি, একটু শারীরিক কসরত সেরে নিচ্ছি। ব্যস, তার পরে সারা দিন বেকার। গুগুল (পোষ্য) তিন বছর আগে মারা গিয়েছে। কথা ব‌লার কেউ নেই। এখন তাই গাছেদের পরিচর্যায় মেতেছি। গোলাপ, জবা ফুলের গাছের সেবা করছি।

বাড়িতে জল তোলা, ঘর পরিষ্কার করেও অনেকটা সময় কাটছে। সন্ধ্যার পর থেকে টিভিতে চোখ রাখি। করোনার আপডেট দেখার পাশাপাশি খবরের চ্যানেলে টক-শো, বিভিন্ন সিরিয়ালে চোখ রাখি। একটু একঘেঁয়ে লাগলেও এই ভাবেই কেটে যাচ্ছে। কারণ, ঘরবন্দি থাকা ছাড়া দ্বিতীয় বিকল্প নেই। এখন সময় সহ-নাগরিকদের পাশে দাঁড়ানো। ঘরবন্দি থাকাটাই এখন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। দেশের সুরক্ষার জন্যই নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে।

আমার কাছে করোনাভাইরাসের অর্থ হল ‘কোরো না ভাই রাশ’। অর্থাৎ, কেউ যেন ভিড় না করেন। তাই, যত একঘেঁয়েই লাগুক, লকডাউনের সময় আমি বাড়ির বাইরে যাব না। ছোট ছোট গাছ, ফুলেদের সঙ্গে সময় কাটাব।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেনআপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE