শ্রীরামপুর থানার কাছের মাঠে চলছে খেলা। —নিজস্ব িচত্র
রবিবার সকাল। বলাগড় ব্লকের গুপ্তিপাড়া স্টেশন বাজারে ভিড় জমেছে। কেউ কেনাকাটা সারছেন। কেউ মজে গল্পে!
রুটিন-মাফিক টোটো করে মাইক ফুঁকে চলে গেলেন পঞ্চায়েত কর্মী। পারস্পরিক দূরত্ব যাতে বজায় থাকে, সে ব্যাপারে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করতে বার্তা দিলেন। কিন্তু বাজারভর্তি মানুষের মধ্যে সেই দূরত্ব কোথায়! দেখেশুনে মনে হবে পারস্পরিক ‘নৈকট্য’ই বেশি’!
একই ব্লকের জিরাট বাজারের অবস্থাও তথৈবচ। রাজ্য তথা দেশের মানুষের যে সংক্রমণের আবহে প্রতি মুহূর্তে সতর্ক করা হচ্ছে, এ দিন সকাল দেখে সে কথা কে বলবে! কাঁচা আনাজ থেকে মাছ, মুদি দোকান থেকে মাংসের দোকান— সব জায়গাতেই ভিড়ের চেনা ছবি।
শুধু ওই দুই জায়গাই নয়, করোনা পরিস্থিতিতে হুগলির বহু বাজারেরই এখনও হুঁশ ফেরেনি। অভিযোগ, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য কেনার নামে অনেকেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে ‘ঘরবন্দি’ দশা কাটিয়ে নিচ্ছেন। সেই সুযোগে পাল্লা খুলছেন চায়ের দোকানি। অর্ধেক ঝাঁপ উঠছে মিষ্টির দোকান, গুটখা-সিগারেটের দোকানের। লকডাউনের প্রথম দিকে পুলিশ যে ভাবে মানুষকে ঘরে ঢোকাতে তৎপর ছিল, সেই তৎপরতাও কমেছে অনেকাংশে।
দেশে করোনাপরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। সংক্রমণ রুখতে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাই এখন প্রধান কর্তব্য। তাতেও অবশ্য অনেক জায়গায় বৈকালিক আড্ডায় ছেদ পড়ছে না। শ্রীরামপুর থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে এ দিন বিকেলেও জমে উঠেছিল ক্রিকেটের আসর। এখানে প্রতিদিনই ব্যাট-বল হাতে দাপাচ্ছেন স্থানীয় ‘সচিন-সৌরভ-বিরাট’রা। পুলিশ অবশ্য টের পায়নি। এ দিন পান্ডুয়ার কুল্টি রোডের একটি মাঠেও দেখা গিয়েছে, অন্তত ২০ জন
ফুটবল নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। বলাগড়, পান্ডুয়া, মশাট, তারকেশ্বরের গ্রাম থেকে শ্রীরামপুর শহর— কোথাও অলিগলিতে, কোথাও মাঠে জমল আড্ডা।
অবশ্য লকডাউনের তোয়াক্কা না করে আরামবাগ শহর জুড়ে যে বিশৃঙ্খলা চলছিল, রবিবার তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করেছে পুলিশ। সকাল থেকে টানা প্রচার, নজরদারি চালিয়েছে তারা। বছরের ১২ মাস টাটকা মাছ খাওয়ার অভ্যাস শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শ্যামল চক্রবর্তীর। সেই খোঁজেই প্রতিদিন তিনি বাজারে যাচ্ছিলেন। এ দিন যাননি। তাঁর কথায়, ‘‘বাজারে ভিড় বাড়িয়ে ভুল করছিলাম। দিন কয়েক ডিম বা নিরামিষ খেয়ে নেব।’’
অনুগামীদের নিয়ে মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার বিলি করতে বেরনো নেতাদেরও এ দিন শহরের বাজারে দেখা যায়নি। ফলে, বাজারের পরিস্থিতি ছিল অনেকটাই ‘নিরুপদ্রব’।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy