প্রাপ্য: বেতন মেটানো হচ্ছে কর্মীদের। নিজস্ব চিত্র
লকডাউন চলাকালীনই মঙ্গলবার শ্রমিকদের বেতন দিয়ে দিলেন হাওড়ার শ্যামপুরের অনন্তপুরের একটি সুতোকল ও তার অনুসারী রং কারখানার কর্তৃপক্ষ। দু’টি কারখানা মিলিয়ে তিনশো শ্রমিক কর্মচারীকে এ দিন বেতন দেওয়া হয়। কিছু শ্রমিক কর্মচারীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে। তাঁদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা দিয়ে দেওয়া হয়। বাকিরা কারখানায় এসে বেতনের টাকা নিয়ে যান।
মঙ্গলবার কারখানায় হাজির ছিলেন পুলিশ এবং শ্যামপুর-২ ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্যানিটাইজ়েশন করে টাকা শ্রমিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সুতোকল কর্তৃপক্ষের তরফে নবনীত দুজার বলেন, ‘‘গত ২৩ মার্চ লকডাউন শুরু হয়েছিল। ওইদিন পর্যন্ত হিসাব
করে শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয়েছে।’’ একই সঙ্গে ওই দিন পর্যন্ত শ্রমিকরা ওভারটাইম বাবদ কাজ করে যতটা পারিশ্রমিক অর্জন করেছিলেন তা-ও ন মিটিয়ে দেওয়া হয় বলে নবনীতবাবু জানান।
তবে ২৩ মার্চ লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে কারখানায় কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হবে কিনা সেই প্রশ্নটি কিন্তু ঝুলে থাকল। নবনীতবাবু বলেন, ‘‘কাজ না হলে বেতন দেওয়ার মতো অবস্থায় আমরা নেই। আমাদের সুতোকলের সংগঠনের সদস্যদেরও একই মত। এটা আমরা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দেব।’’
চেঙ্গাইল, বাউড়িয়ার চটকলগুলিতেও শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয়েছে ২৩ মার্চ পর্যন্ত তাঁরা যতটুকু কাজ করেছিলেন তার ভিত্তিতে। কোথাও কিন্তু লকডাউনের ফলে কারখানাগুলি যখন বন্ধ আছে সেই সময়ের বেতন দেওয়া হয়নি। এটা নিয়ে সর্বত্রই শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি হয়েছে। শ্রমিকদের বক্তব্য, কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকার কিন্তু বলেছিল লকডাউনের ফলে কারখানা যতদিন বন্ধ থাকবে সেই সময়ের জন্যও শ্রমিকদের বেতন দিয়ে দিতে হবে। সেই নির্দেশ কোথাও মানা হচ্ছে না। এই অবস্থায় তাঁরা সংসার চালাতে গিয়ে সমস্যায় পড়বেন বলে শ্রমিকরা জানান।
হাওড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা সাফ জানান বিষয়টি তাঁরা রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের নজরে আনবেন। বেতন না দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার প্রভিডেন্ড ফান্ডের ৭৫ শতাংশ টাকা তুলে নেওয়ার যে সরলীকৃত প্রকল্প চালু করেছে, সেটা যাতে শ্রমিকরা করতে পারেন তার জন্য ফর্ম বিলি করছেন চেঙ্গাইলের একটি চটকল কর্তৃপক্ষ।
এই চটকলের শ্রমিকদের বিষয়টি যিনি দেখভাল করেন সেই উলুবেড়িয়া পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ সেলিম বলেন, ‘‘কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে লকডাউনের জন্য কারখানাগুলি বন্ধ থাকাকালীন সময়ের জন্য শ্রমিকদের বেতন দিয়ে দিন কর্তৃপক্ষ। তা হলে আর চাকরি জীবনের শেষ সম্বল প্রভিডেন্ড ফান্ডের টাকায় শ্রমিকদের হাত দিতে হয় না।’’
চটকলগুলির তরফে জানানো হয়েছে, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে চটকল মালিকদের সর্বভারতীয় সংগঠন। তারা এখনও কিছু জানায়নি। ফলে কাজ বন্ধ থাকাকালীন সময়ে বেতন দেওয়ার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy