পরিচালন সমিতির মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছিল আগেই। এ বার ব্যান্ডেলে রেলকর্মীদের একটি সমবায় বিপণিতে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় সেই সমিতি ভেঙে দিয়ে ক্রেতাদের খাদ্যদ্রব্য-সহ সব ধরনের জিনিস সরবরাহের দায়িত্ব নিজেরাই নিয়ে নিল সমবায় দফতর। ওই বিপণি থেকে কয়েক মাস ধরে নিম্ন মানের খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করা হচ্ছিল এবং বহু জিনিস চড়া দামে খোলা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে বলে সম্প্রতি ওই অভিযোগ তুলেছিলেন বিপণির সদস্য-ক্রেতারাই।
সমবায় দফতরের মগরার সার্কেল ইনস্পেক্টর শক্তিব্রত সরকার বলেন, ‘‘রেলকর্মীদের পক্ষ থেকে ওই অভিযোগ পাওয়ার পরে নতুন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের মাধ্যমে সমবায়ের নতুন পরিচালন সমিতি গঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের দফতরের কর্মীরাই সরাসরি ক্রেতাদের কাছে মালপত্র সরবরাহ করবে। দ্রুত নির্বাচনে চেষ্টা চলছে।’’
অভিযোগ মানেননি ওই সমবায়ের বিদায়ী বোর্ডের সেক্রেটারি মহম্মদ সামিম। তাঁর দাবি, ‘‘যে ধরনের অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তেমন কিছু ঘটেনি। খাদ্য দফতর থেকে যে ধরনের খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করা হতো, তা-ই রেলকর্মীদের সরবরাহ করা হচ্ছিল। সম্প্রতি পদোন্নতির পরীক্ষার জন্য বেশ কিছু দিন অন্যত্র ছিলাম। তাই পরিচালন সমিতির নির্বাচন করা যায়নি।” মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়াতেই সমবায় দফতর পরিচালন সমিতি ভেঙে দিয়েছেন বলে তাঁর দাবি।
সমবায় দফতর এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যান্ডেল স্টেশন রোডে ‘রেলশ্রমিক কো-অপারেটিভ স্টোর্স লিমিটেড’ নামে ওই বিপণিটি অন্তত ৪০ বছরের পুরনো। বর্তমানে সদস্য-সংখ্যা প্রায় ১৫০০। খাদ্যদ্রব্য-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কম দামে বিক্রি করা হয় ওই বিপণি থেকে। সদস্য রেলকর্মীরাই ওই বিপণি থেকে কেনাকাটা করতে পারেন। সেখানকার পরিচালন সমিতির মেয়াদ গত বছরের মাঝামাঝি শেষ হয়। তার পরেই এক শ্রেণির কর্মী ওই দুর্নীতি শুরু করেন বলে অভিযোগ।
সম্প্রতি হাওড়ায় পূর্ব রেলের ডিআরএম এবং সমবায় দফতরে দায়ের করা অভিযোগে ক্রেতারা জানান, ওই বিপণি থেকে জিনিস বিক্রি করার কোনও রসিদ দেওয়া হচ্ছিল না। অতি নিম্ন মানের খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করা হচ্ছিল। ভাল মানের চাল-ডাল খোলা বাজারে চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছিল। এমনকী, যে সব কর্মী মারা গিয়েছেন, অবসর নিয়েছেন বা অন্যত্র চলে গিয়েছেন, ওই বিপণিতে তাঁদের কার্ডগুলি আটকে রেখে অবৈধ ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। ওই বিপণির ক্রেতা তথা রেলকর্মী কৈলাস পাসোয়ান বা তাপস মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “স্বল্প দামে ভাল জিনিস পাওয়ার জন্যই সমবায়ের সদস্য হয়েছিলাম। কিন্তু কয়েক মাস ধরে যে চাল-ডাল বিক্রি করা হচ্ছিল, তা খাওয়া যায় না। এ জন্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হতে হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy