Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
মিড-ডে মিলে দুর্নীতির নালিশ

অবসরের দু’দিন আগে গ্রেফতার প্রধান শিক্ষক

আরামবাগের এসডিপিও কৃশানু রায় বলেন, “স্কুলের মিড-ডে মিলের টাকা গরমিল নিয়ে স্কুল শিক্ষা দফতর অভিযোগ দায়ের করেছিল। তার ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
খানাকুল শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৮ ০০:০৩
Share: Save:

মিড-ডে মিলে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হল খানাকুলের নতিবপুর ভূদেব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে। অবসর গ্রহণের ঠিক দু’দিন আগে রবিবার দুপুরে স্কুল সংলগ্ন এলাকা থেকেই নগেন্দ্রনাথ দাস নামে ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আরামবাগের এসডিপিও কৃশানু রায় বলেন, “স্কুলের মিড-ডে মিলের টাকা গরমিল নিয়ে স্কুল শিক্ষা দফতর অভিযোগ দায়ের করেছিল। তার ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে।”

যদিও ধৃত প্রধান শিক্ষক বলেছেন, “বড় ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। সরকারি অর্থ নয়ছয় বা বিশ্বাসভঙ্গের কোনও কাজ করিনি।’’ নতিবপুর ভূদেব বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির সভাপতি তাপস ঘোষ বলেন, “এ বছর এপ্রিলে সরকারি প্রতিনিধি হিসাবে সভাপতির দায়িত্ব বুঝে নিয়েছি। আমার সময়ের মধ্যে কোনও ত্রুটি দেখিনি। অতীতের ঘটনা নিয়ে স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে সরাসরি অভিযোগ হওয়ায় মন্তব্য করার জায়গা নেই।”

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহকুমার অনেক স্কুলের শিক্ষকই বলেছেন, “যে অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই অপরাধ প্রায় ১০০ শতাংশ স্কুলেই করে থাকে। প্রকৃতপক্ষে যতজন খায়, খাতায় কলমে তারচেয়ে অনেক বেশি দেখানো হয়।” তাঁরা জানিয়েছেন, সরকারি টাকার মধ্যে পড়ুয়াদের একটু ভাল খাবার দিতেই এমনটা করা হয় বেশির ভাগ স্কুলে।

তাঁদের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, হাইস্কুলে পড়ুয়া পিছু মিড-ডে মিলে বরাদ্দ হয় ৬ টাকা ১৮ পয়সা এবং চাল ১৫০ গ্রাম। খাদ্যের গুণগত মান ঠিক রাখার জন্যই পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি লিখে খানিকটা বেশি টাকা আদায় করে নেওয়া হয়। অন্য এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, “উপভোক্তা বেশি দেখানোর মানে তো টাকাটা আত্মসাৎ করা নয়।”

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দফতর এবং স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালের এপ্রিল মাস নাগাদ স্কুলের প্রধান শিক্ষক নগেন্দ্রনাথ দাসের বিরুদ্ধে মি-ডে মিলে কারচুপির অভিযোগ করেছিলেন তৎকালীন স্কুল পরিচালন কমিটির শিক্ষকদের একাংশ। বার পাঁচেক তদন্তের পর এ বছর ২২ মার্চ জেলা সর্বশিক্ষা মিশন বিভাগ থেকে বিশেষ অডিটের ব্যবস্থা হয়। তাতেই প্রকৃত উপভোক্তার চেয়ে অনেক বেশি করে উপভোক্তা দেখানো হয়েছে বলে তদন্তে পাওয়া যায়।

১৮ জুন জেলা স্কুল পরিদর্শকের তরফে নগেন্দ্রনাথ দাসকে তিন দিনের মধ্যে গরমিল হওয়া ৬ লক্ষ ২৯ হাজার ৬৩০ টাকা ৮৮ পয়সা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি তা না দেওয়া গত শুক্রবার সন্ধ্যায় খানাকুল থানায় এফআইআর করেন মাধ্যমিক শিক্ষা দফতরের অতিরিক্ত জেলা পরিদর্শক (আরামবাগ) চন্দ্রশেখর জাউলিয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arrest Mid Day Meal মিড ডে মিল
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE