কেন্দ্রীয় প্রকল্পে এক গরিব শ্রমিকের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার নামে ২৫ হাজার টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠল চন্দননগর পুরসভার এক বাম কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে।
বিয়াস মাহাতো নামে গোন্দলপাড়া জুটমিলের ওই শ্রমিক শহরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের গোন্দলপাড়া বিনোদতলার বাসিন্দা। তাঁর অভিযোগ, এলাকার ফরওয়ার্ড ব্লক কাউন্সিলর রাজেশ জয়সোয়ারা শহরের ‘দরিদ্রদের জন্য বাড়ি’ প্রকল্পে (বিএসইউপি) তাঁর বাড়ি তৈরি করে দিতে ২৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। ওই টাকা বাড়ি তৈরির পরে পুরসভা থেকে ফেরত দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছিলেন। এপ্রিল মাসে বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হয়ে গেলেও তিনি ২৫ হাজার টাকা ফেরত পাননি। পুরসভা থেকে তিনি জানতে পারেন, ওই টাকা সেখানে জমাই পড়েনি। কাউন্সিলরের কাছ থেকেও তিনি টাকা ফেরত পাননি, উল্টে তাঁকে হুমকি শুনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
ওই মিল শ্রমিক বলেন, ‘‘ধারদেনা করে ওই ২৫ হাজার টাকা কাউন্সিলরকে দিয়েছিলাম। কোনও কাগজপত্র অবশ্য নেই। কে জানত, আমার মতো গরিব মানুষকে এ ভাবে ঠকতে হবে?’’ ক’দিন আগেই তিনি থানায় ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুরসভাকেও জানিয়েছেন। চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুরসভার মাধ্যমে অভিযোগটি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’ পুর কমিশনার স্বপন কুণ্ডুও বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই প্রকল্পের পুরো টাকাই পুরসভা থেকে কয়েক দফায় উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যায়। নগদ টাকা লেনদেনের ব্যাপার নেই।’’
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কাউন্সিলর রাজেশ। তাঁর দাবি, ‘‘বন্ধ জুটমিলটি খোলার দাবিতে আন্দোলন করছি। তাই শাসকদলের পক্ষ থেকে মিথ্যা অভিযোগে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। যে অভিযোগ উঠছে, তার কোনও প্রমাণ নেই। আমি টাকা নিইনি।’’ তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।
দীর্ঘদিন বস্তিতে কাটিয়ে মাথা গোঁজার স্থায়ী ঠিকানার জন্য ওই প্রকল্পে বাড়ি পাওয়ার জন্য ২০১৬ সালে আবেদনপত্র জোগাড়ের জন্য এলাকার কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন বিয়াস। স্ত্রী অঞ্জলির নামে তিনি আবেদন জানান। বাড়ি তৈরির জন্য পুরসভা ৩ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা মঞ্জুর করেন। সেই সময় রাজেশ ফেরত দেওযার আশ্বাস দিয়ে বিয়াসের থেকে ২৫ হাজার টাকা নেন বলে অভিযোগ। গত এপ্রিলে বাড়ি তৈরির পরে এখন সেখানে বসবাসও শুরু করেছেন বিয়াস। কিন্তু টাকা ফেরত পাননি। কয়েক মাস আগে ওই জুটমিলটি বন্ধ হয়। তার পর থেকেই অর্থাভাবে ভুগছেন বিয়াস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy