প্রতীকী ছবি।
রাস্তাঘাটে ছিনতাই হচ্ছে হরদম। লুটপাট, ডাকাতির ঘটনারও কমতি নেই। প্রকাশ্য মদ্যপানও চলছে পুরোদমে। দেখার কেউ নেই।
হাওড়ার গ্রামীণ এলাকা দিন দিন দুষ্কৃতীদের ‘মুক্তাঞ্চল’-এ পরিণত হচ্ছে বলে মনে করছেন বহু মানুষ। যার জেরে আতঙ্কও দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে জনাচারেক ছিনতাইবাজকে পুলিশ ধরেছে। কিন্তু তাতে অপরাধে লাগাম পরেনি বলেই দাবি গ্রামবাসীদের।
সম্প্রতি, মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে শ্যামপুর ও বাগনানে দুই বাড়িতে লুট ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে। প্রথম ঘটনাটি ঘটে শ্যামপুরের নস্করপুরে। রাতে বাড়ির পাঁচিল টপকে একদল দুষ্কৃতী একটি ঘরে ঢুকে গৃহকর্তাকে বেঁধে রেখে সর্বস্ব ডাকাতি করে নিয়ে পালিয়ে যায়। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে বুধবার রাতে, বাগনানের নুন্টিয়ায়। একদল দুষ্কৃতী রাতে একটি বাড়িতে ঢুকে শাশুড়ি ও বৌমাকে ভয় দেখিয়ে সব লুট করে।
কবে কী
• ২৯ নভেম্বর: শ্যামপুরের নস্করপুর দাসপাড়ায় গৃহকর্তাকে বেঁধে ডাকাতি। দুষ্কৃতী অধরা।
• ৩০ নভেম্বর: ভোরবেলা বাগনানের আগুনসি-বেলতলায় ১০ জন ছোট ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোটরবাইকে করে এসে টাকা ছিনতাই।
• ২ ডিসেম্বর: দুপুরে শ্যামপুরের খাড়ুবেড়িয়ার কাছে অটোরিকশা আরোহী এক মহিলার ২৫ হাজার টাকা ছিনতাই।
• ৫ ডিসেম্বর: বাগনানের নুন্টিয়ায় শাশুড়ি ও বৌমাকে অস্ত্র দেখিয়ে সর্বস্ব লুট। দুষ্কৃতী অধরা।
• এ পর্যন্ত চার ছিনতাইবাজ ধৃত।
এই দু’টি ডাকাতির ঘটনাতেই দুষ্কৃতীদের এখনও চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ। গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার সৌম্য রায় জানিয়েছেন, শ্যামপুরের ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। বাগনানের ঘটনার তদন্ত চলছে।’’
বাগনান-আমতা রোডের আগুনসি বেলতলায় দুষ্কৃতীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ। এখানে ভোরবেলায় অনেক ছোট ব্যবসায়ী আসেন। বাগনানে যাওয়ার জন্য অটোরিকশার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকেন। দুষ্কৃতীদের মূল লক্ষ্য তাঁরাই। দুষ্কৃতীরা মোটরবাইকে চড়ে এসে তাঁদের কাছ থেকে সব লুট করে নিয়ে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। শ্যামপুরেও বিভিন্ন এলাকায় বাইক-বাহিনী নিয়মিত ছিনতাই করে বেড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি এক মহিলা একটি ব্যাঙ্কের শ্যামপুর শাখা থেকে ২৫ হাজার টাকা তুলে শ্যামপুর-গড়চুমুক রুটের অটোরিকশায় চড়ে আসছিলেন। মরশাল কালভার্টের কাছে অটো রিকশাটি বিগড়ে যাওয়ায় দাঁড়িয়ে পড়ে। মোটরবাইকে চড়ে দুই দুষ্কৃতী আচমকা এসে মহিলার হাত থেকে টাকার ব্যাগটি নিয়ে চম্পট দেয়। এই রকম ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে বলে বাসিন্দারা জানান। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘বাইক আরোহী চার ছিনতাইবাজকে ধরা হয়েছে। নিয়মিত নাকা-চেকিং চলছে। সে সময়েই ওই চার জন ধরা পড়ে। নাকা আরও বাড়ানো হয়েছে। শীতকালে ভোরের দিকে অল্পবয়সী ছেলেরা এইসব করে বেড়াত। আরও যদি কেউ থাকে তারা ধরা পড়ে যাবে।’’
বাগনান, উলুবেড়িয়া, পাঁচলা-সহ গ্রামীণ এলাকার প্রায় সর্বত্র মুম্বই রোডের দু’দিকের ফুটপাতে প্রতিদিন সন্ধ্যায় প্রকাশ্যে মদ্যপান চলে। মহিষরেখায় দামোদরের ধারে আবার রাত ছাড়াও দিনেও মদের আসর বসে। পুলিশ দেখেও দেখে না বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের দাবি, পুলিশের এই নীরবতাই অপরাধ এবং অসামাজিক কাজ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
পুলিশ অবশ্য এ কথা মানেনি। গ্রামীণ জেলা পুলিশ কর্তাদের বক্তব্য, অপরাধমূলক প্রতিটি ঘটনাই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অপরাধমূলক কাজ বন্ধ করতে নিয়মিত পুলিশের টহলদারি চলে। রাস্তার ধারে বসে মদ্যপান করলে আটক করে জরিমানা করা হয়।
তা সত্ত্বেও চেনা ছবিটা কেন বদলায় না, এ প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy