Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Cyclone Amphan

হাওড়ায় শুধু চাষে ক্ষতি ৮২ কোটির

শুক্রবারেই জেলা কৃষি দফতরের পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২০ ০৪:২৯
Share: Save:

আমপানের তাণ্ডবে হাওড়ায় শুধুমাত্র চাষের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৮২ কোটি টাকার।

শুক্রবারেই জেলা কৃষি দফতরের পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে। তবে, লক্ষাধিক বাড়ি পুরোপুরি এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও টাকার অঙ্কের ক্ষতির পরিমাণশুক্রবার বিকেল পর্যন্ত চূড়ান্ত ভাবে জানাতে পারেনি জেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে টাকার অঙ্কে বিদ্যুতের পরিকাঠামোগত ক্ষতির হিসাবও পাওয়া যায়নি। দু’টি ক্ষেত্রেই হিসাব চলছে বলে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন।

জেলা কৃষি দফতর থেকে জানানো হয়েছে, মোট ১৭ হাজার ৭১৪ হেক্টর জমির চাষ নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে আছে বোরো ধান, বাদাম, তিল, লঙ্কা, পাট, মুগ ডাল এবং পান বরজ। ১২০০ হেক্টর জমির বোরো ধান কাটা অবস্থায় মাঠে পড়েছিল। সেগুলিরও ক্ষতি হয়েছে। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ হল ৩ কোটি ৬০ লক্ষ। চাষিদের ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় আমপান পরবর্তী পুনর্গঠনের দায়িত্ব দিয়েছেন উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক পুলক রায়কে। পুলকবাবু বলেন, ‘‘জেলায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার হিসাব চলছে। শুধুমাত্র কৃষির হিসাব মিলেছে। আপাতত আমাদের অগ্রাধিকার হল মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়ে আনা।’’ বিধায়ক জানান, গাছ কেটে রাস্তা সাফ করা এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুরোদমে চালু করার কাজ চলছে। বহু মানুষ ত্রাণ শিবিরে আছেন। তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করা এবং যাঁদের বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে তাঁদের ত্রিপল দেওয়া হচ্ছে।

গাছ পড়ে থাকায় অনেক রাস্তা এ দিনও বন্ধ ছিল। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যাওয়ায় এবং অনেক ট্রান্সফর্মার ভেঙে যাওয়ায় এ দিনও গ্রামীণ হাওড়ার বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ফলে বিশেষ করে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর এবং কেএমডব্লিউএসএ-এর পাম্প হাউসগুলি বন্ধ হয়ে যায়। দেখা দেয় পানীয় জলের অভাব। বিদ্যুতের অভাবে মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট পরিষেবাও ব্যাহত হচ্ছে।

বুধবার রাতে ঝড় থেমে যাওয়ার পর থেকেই বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা বিদ্যুৎ পরিষেবা ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করে দেয়। জেলার প্রায় সর্বত্র বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই পাম্প হাউস এবং হাসপাতালগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবারেও কাজ চলে। এ দিন রাতের মধ্যে জেলা জুড়ে প্রায় অর্ধেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ চলে আসে। বণ্টন সংস্থার কর্তারা জানান, যুদ্ধকালীন প্রস্তুতিতে কাজ চলছে। দ্রুত বাকি এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক করে দেওয়া হবে।

ত্রাণ শিবিরে যাঁরা আছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং মাস্কের ব্যবহার করা। অনেক জায়গায় বিশেষ করে খাবার দেওয়ার সময়ে ত্রাণ শিবিরের থাকা দুর্গতেরা এত হুড়োহুড়ি করছেন যে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁরা মাস্কও পরছেন না বলে অভিযোগ। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, ত্রাণ শিবিরে সবাই যাতে মাস্ক পরেন ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখেন, সে দিকে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। ব্লক স্বাস্থ্যকর্মী এবং আশাকর্মীরা বিষয়টি দেখছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Amphan Cyclone Howrah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE