প্রতীকী ছবি
আমপানের পরে কেটে গিয়েছে পাঁচ দিন। ধ্বংসের আতঙ্ক কাটিয়ে হাওড়া জেলায় পুনর্গঠন প্রক্রিয়া তো দূর, শুধুমাত্র চাষ বাদ দিলে এখনও বাদবাকি কোনও ক্ষেত্রেই ক্ষতির হিসেব চূড়ান্ত করতে পারেনি জেলা প্রশাসন। শুধু প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, আংশিক এবং সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ কত, তার হিসাব চলছে।
জেলা প্রশাসন থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, হাওড়ায় শুধুমাত্র কৃষিক্ষেত্রে ৮২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এখনও অন্যান্য ক্ষেত্রের ক্ষতির হিসেব চূড়ান্ত হল না কেন?
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, আমপানে কার্যত তছনছ হয়ে হাওড়ার সব এলাকা। ভেঙে পড়া গাছ সরাতেই সময় চলে যাচ্ছে। এখনও বেশিরভাগ জায়গায় বিদ্যুৎ আসেনি। জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। সেই কারণে হিসাবের কাজটি থমকে রয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব হলে তবেই জেলার পক্ষ থেকে পুনর্গঠনের পরিকল্পনা রাজ্য প্রশাসনের কাছে পেশ করা হবে। শুধুমাত্র বসতবাড়িই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, বহু পুরনো অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, প্রাথমিক স্কুলের টিনের ছাউনি, হাইস্কুলের চিলেকোঠার টিনের চাল উড়ে গিয়েছে। সে সবও হিসাব করতে হবে।
জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্যের তরফে এখনও কোনও পুনর্গঠনের প্রস্তাব চাওয়া হয়নি। কৃষি বা ঘরবাড়ির ক্ষতি যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই গাছের ক্ষতিও অগ্রাহ্য করা যাবে না। প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখার ব্যাপারটিও দেখতে হবে। বনসৃজনের কাজে মূলত একশো দিনের কাজের প্রকল্পকে ব্যাপক ভাবে ব্যবহার করার কথা ভাবা হচ্ছে।’’
ঘূর্ণিঝড়ে জেলায় কয়েক লক্ষ গাছ পড়ে যাওয়ায় পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জেলা প্রশাসন। প্রচুর বড় গাছ একেবারে শিকড় থেকে উপড়ে গিয়েছে। রাস্তার ধার থেকে শুরু করে নদীবাঁধ, জনবসতি কোনও এলাকাতেই আমপানের হাত থেকে গাছ রেহাই পায়নি। জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, বিশেষ করে সরকারি যে সব জায়গার গাছ পড়েছে, সেগুলি নিলাম করে যে অর্থ আসবে তা ফের বৃক্ষরোপণের কাজে ব্যবহার করার চিন্তাভাবনা চলছে। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বৃক্ষরোপণের জন্য সরকারি-বেসরকারি নার্সারির চারা ব্যবহার করা হতে পারে। প্রয়োজন হলে বন দফতর আরও চারা তৈরি করবে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, মোট কত গাছের ক্ষতি হয়েছে, তার হিসাব করা হচ্ছে। একটি গাছের পরিবর্তে চারটি চারা লাগাতে হবে। যদি তিনটে চারা মরেও যায় তা হলে একটি অন্তত থাকবে। তাতেও ভবিষ্যতে অনেকটা ক্ষতি পূরণ হবে। বর্ষার মরসুমেই যাতে চারা রোপণ করা যায়, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy