প্রতীকী ছবি
জল-বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষোভ-অবরোধ কমেছে। আমপান তাণ্ডবে বিধ্বস্ত হুগলিতে পুনর্গঠনের কাজ জোরকদমে চলছে বলে দাবি করল জেলা প্রশাসন।
রবিবার জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘হুগলির ৮০ শতাংশ জায়গা স্বাভাবিক হয়েছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ সংযোগ, পানীয় জল সরবরাহ ইত্যাদি জরুরি ক্ষেত্রগুলির অনেকটাই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। কয়েক দিনের মধ্যেই বাকি কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।’’
জেলা প্রশাসনের দাবি, বুধবার ওই ঝড় হয়। পরের দিন থেকেই ক্ষয়ক্ষতির হিসেব এবং পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়। ঝড়ে বহু গাছ পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। উপড়ে যাওয়া গাছ কেটে রাস্তা সাফ করা এবং বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরানোই ছিল প্রথম কাজ। অবশ্য রবিবারেও অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ আসেনি বলে অভিযোগ। এ দিন শেওড়াফুলি এবং উত্তরপাড়ায় জল ও বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষোভ হয়।
প্রশাসন সূত্রের খবর, গাছ উপড়ে বিদ্যুতের তারের পাশাপাশি কিছু জায়গায় গ্রামীণ পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের পাইপ নষ্ট হয়। এগুলি মেরামতের কাজ চলছে। গরু-সহ প্রাণিসম্পদের প্রয়োজনীয় টিকাকরণ এবং চিকিৎসা শিবির চালু হয়েছে। আবর্জনা সাফাই এবং জল জমে থাকা জায়গায় যাতে রোগ-জীবাণু না ছড়ায়, অবিলম্বে সেই ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। মহকুমাশাসক এবং বিডিওদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে এ দিন পুনর্গঠনের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন জেলাশাসক। অতিবৃষ্টিতে নদীবাঁধের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিনা, তা চিহ্নিত করে মেরামতির নির্দেশও দেন তিনি। জেলা প্রশাসনের রিপোর্ট বলছে, প্রায় ৯২ হাজার মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে ২০ হাজার বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙেছে। বাকি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। সেই সবের ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সবচেয়ে বিধ্বস্ত হয়েছে কৃষি। জেলা কৃষি আধিকারিক অশোক তরফদার জানান, কৃষি এবং উদ্যানপালনের ক্ষেত্র মিলিয়ে নিয়ে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, “আনাজ, বাদাম, তিল, পাট, বোরো ধান, গ্রীষ্মকালীন মুগ সবই প্রায় নষ্ট হয়েছে। উদ্যানপালনের কলা, পেঁপে, আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।” প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, বুধবার হুগলিতে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ১১৭ মিলিমিটার। সাধারণত গোটা মে মাস জুড়েও এত বৃষ্টি হয় না।
পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, বৃষ্টির জল জমে বহু জায়গায় রাস্তার ক্ষতি হয়েছে। ছোটখাটো মেরামতের কাজ চলছে। বড় কাজের ক্ষেত্রে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাইপ ফেটে গ্রামীণ জল সরবরাহ প্রকল্পে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দফতরের জেলা এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আর ৫-৬টি জায়গায় ফাটা পাইপ বদলাতে হবে। দু-একদিনের মধ্যেই ওই কাজ হয়ে যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy