Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ইস্তাহারেই ঠাঁই, কাজে দায় এড়ায় সব দল, পরিবেশ-আলোচনায় খেদ বক্তাদের

প্রকৃতির উপর চলছে প্রতিনিয়ত নানা অত্যাচার। সবুজ নিধন থেকে জলাশয়, পুকুর বোজানো বাকি নেই কিছু। জনসংখ্যার চাপে পুর এলাকায় গড়ে উঠছে নিত্যনতুন আবাসন। পরিবেশের উপর যার মারাত্মক কুপ্রভাব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব চন্দননগর পরিবেশ আকাদেমি ও সবুজের অভিযান সংস্থা। তাদের অভিযোগ, পরিবেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলেও রাজনৈতির দলগুলির ইস্তাহারে, ভোটের প্রচারে একে সে ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না।

চন্দননগরে সভা।—নিজস্ব চিত্র।

চন্দননগরে সভা।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চন্দননগর শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৫ ০১:০৪
Share: Save:

প্রকৃতির উপর চলছে প্রতিনিয়ত নানা অত্যাচার। সবুজ নিধন থেকে জলাশয়, পুকুর বোজানো বাকি নেই কিছু। জনসংখ্যার চাপে পুর এলাকায় গড়ে উঠছে নিত্যনতুন আবাসন। পরিবেশের উপর যার মারাত্মক কুপ্রভাব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব চন্দননগর পরিবেশ আকাদেমি ও সবুজের অভিযান সংস্থা। তাদের অভিযোগ, পরিবেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলেও রাজনৈতির দলগুলির ইস্তাহারে, ভোটের প্রচারে একে সে ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। কোনও কোনও দল এ নিয়ে নানা পরিকল্পনা গ্রহণের কথা বললেও ভোটের পর তা বেমালুম ভুলে যান। এই পরিস্থিতি বদলাতেই এ বার দলীয় ইস্তাহারে পরিবেশের প্রাসঙ্গিকতাকে গুরুত্ব দিতে চন্দননগর পরিবেশ আকাদেমি ও সবুজের অভিযান আবেদন জানাল।

এই দুই সংস্থার তরফে রাজ্যের সব রাজনৈতিক দলের কাছে এ ব্যাপারে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে। পাশাপাশি দিন কয়েক আগে চন্দননগরে একটি আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয়। সেখানে তিনটি রাজনৈতিক দলের সদস্যরা ছিলেন। ছিলেন পরিবেশবিদ-সহ শহরের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি। চন্দননগরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক শিবপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজেপির সঞ্জয় ঘোষ, সিপিআই (এমএল) এর কল্যাণ সেন প্রমুখ সভায় বক্তব্য পেশ করেন। শিবপ্রসাদবাবু অবশ্য পরিবেশের বিষয়টি দেশের সার্বিক দারিদ্র দূর করার সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করেন। তাঁর কথায়, ‘‘দেশের দারিদ্র দূর করতে না পারলে পরিবেশ রক্ষা করা কষ্টকর।’’ কিন্তু দলীয় ইস্তাহারে পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয় কেন গুরুত্ব পায় না বা ইস্তাহারে পরিবেশ বিষয়ক কিছু পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়া হলেও তা রূপায়ণের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলি কেন উদ্যেগী হয় না, সেই প্রশ্নের অবশ্য স্পষ্ট উত্তর মেলেনি তাঁর কাছে। সঞ্জয়বাবু পরিবেশ রক্ষায় মানুষের চেতনা বৃদ্ধির উপরেই জোর দেন। কল্যাণবাবুর মতে অবশ্য, পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দায় রাষ্ট্রের।

সভার শুরুতেই অবশ্য সভাপতি তরুণ রায় বক্তাদের সতর্ক করে দেন, কোনও ক্ষেত্রেই তাঁরা আলোচনায় রাজনৈতিক চর্চা করতে পারবেন না। তবে সভায় উপস্থিত শ্রোতাদের দাবি, রাজনৈতিক দলগুলির ইস্তাহারে পরিবেশকে গুরুত্ব দিয়ে রাখা জরুরি। কেন না, শেষ বিচারে রাজনৈতিক দলগুলিই ক্ষমতায় এসে নীতি প্রণয়নে অংশ নিয়ে তা চূড়ান্ত করে। সভার অন্যতম বক্তা পরিবেশবিদ জয়ন্ত বসু বলেন, ‘‘বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের ইস্তাহারে পরিবেশ নিয়ে কিছু কথা থাকলেও তা মূলত কলকাতা কেন্দ্রীক।’’

আলোচনাসভার সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন রাহুল রায়। পরিবেশ আকাদেমির পক্ষে বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দশ বছর ধরে আমরা এই ধরনের সভা করে আসছি। এটা আশাব্যঞ্জক যে, পরিবেশ নিয়ে মানুষের সচেতনতা ক্রমশ বাড়ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE