Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ কী করছে, প্রশ্নে ডেঙ্গি-যুদ্ধ

গত বছর ডেঙ্গি-মোকাবিলায় যে ‘অস্ত্র’ নিয়ে সবচেয়ে বেশি বড়াই করেছিল হাওড়া পুরসভা, এ বার সেই অস্ত্রেই বিদ্ধ তারা।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৮ ০০:৫৯
Share: Save:

গত বছর ডেঙ্গি-মোকাবিলায় যে ‘অস্ত্র’ নিয়ে সবচেয়ে বেশি বড়াই করেছিল হাওড়া পুরসভা, এ বার সেই অস্ত্রেই বিদ্ধ তারা। খোদ মেয়রের ওয়ার্ডেই ডেঙ্গি-মৃত্যুর ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে, তবে কি হাওড়া পুরসভার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ কাজ করেনি? গত বছর এই গ্রুপের মাধ্যমেই ডেঙ্গি মোকাবিলায় কলকাতা পুরসভাকে পিছনে ফেলা গিয়েছে বলে দাবি করেছিলেন হাওড়ার পুর-আধিকারিকেরা।

গত বছর বর্ষার শুরুতেই হাওড়া পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে দু’টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ চালু করা হয়। একটির সদস্য মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের ২৮৪ জন সুপারভাইজার। নাম ‘হাউস টু হাউস সার্ভে গ্রুপ’। অন্যটি র‌্যাপিড অ্যাকশন টিমের (আরএটি) জন্য। ওই গ্রুপে রয়েছেন ছ’টি টিমের মোট ২৪ জন কর্মী। জানানো হয়েছিল, প্রতিদিনই মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা পুর এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন। কোনও বাড়িতে ডেঙ্গি মশার লার্ভা জন্মানোর মতো পরিস্থিতি রয়েছে দেখলে সেই বাড়ির ছবি এবং ঠিকানা লিখে সুপারভাইজারদের দেন তাঁরা। সেই রিপোর্ট ‘হাউস টু হাউস সার্ভে গ্রুপে’ পোস্ট করেন সুপারভাইজারেরা।

ওই গ্রুপের অ্যাডমিন হাওড়া পুরসভার পতঙ্গবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের নোডাল অফিসার তথা চিকিৎসক বিশাখা হালদার। তিনিই এর পরে রিপোর্টগুলি সংগ্রহ করে বাড়ির ঠিকানা এবং ছবি-সহ পোস্ট করেন আরএটি গ্রুপে। এর পরে র‌্যাপিড অ্যাকশন টিমের সদস্যদের কাজ, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গি অভিযান চালানো।

এত তৎপরতা সত্ত্বেও হাওড়ায় ডেঙ্গিতে মৃত্যু হল কী ভাবে? প্রসঙ্গত, গত সোমবারই হাওড়া পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে সুমিত চৌরারিয়া নামে এক যুবকের। তবে মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পুরকর্তারা। ডেঙ্গি বলে না মানলেও তাঁদের দাবি, রাজ্যের বাইরে গিয়ে সেখান থেকেই অসুস্থ হয়ে ফিরেছিলেন সুমিত। একে পুরসভার দায় ঝে়ড়ে ফেলার চেষ্টা হিসেবেই দেখছেন অনেকে। তাঁদের প্রশ্ন, পুরসভার তৈরি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ এবং পুরকর্মীদের লাগাতার নজরদারি সত্ত্বেও কী করে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়? হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) ভাস্কর ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘ওই মৃত্যু ডেঙ্গিতেই কি না, এখনই বলা সম্ভব নয়। খতিয়ে দেখতে হবে।’’

সেই সঙ্গে তাঁর যুক্তি, ‘‘ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের জন্যই গত বছর আমরা ডেঙ্গি মোকাবিলায় এত ভাল কাজ করেছিলাম। এ বছর শুরু থেকেই ওই গ্রুপ কাজ করছে। নিয়ম করে গ্রুপে পোস্টও করা হচ্ছে।’’ তাঁর মতে, একটা মৃত্যুর জন্য গোটা ব্যবস্থাকেই দায়ী করা যায় না। যদিও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কাজ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন ওই পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের একাধিক আধিকারিক। তাঁদের দাবি, ‘‘বর্ষার পরে কয়েক দিন হোয়াটসঅ্যাপ চালাচালি হয়। এমনিতে সার্বিক কোনও পদক্ষেপই করে না পুরসভা।’’ মেয়র রথীন চক্রবর্তী অভিযোগ উড়িয়ে বললেন, ‘‘আমাদের পুরসভাই ডেঙ্গি মোকাবিলায় সবচেয়ে ভাল কাজ করে। এ বারও সেরকমই কাজ হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Howrah Municipality WhatsApp Group
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE