Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
ডেঙ্গি রুখতে পরিকল্পনা হাওড়ায়
Dengue

দেরিতে ঘুম ভাঙল জেলা পরিষদের

প্রতি বছর ২৩-৩০ অক্টোবর মশাবাহিত রোগ এবং কুষ্ঠ রোগের বিরুদ্ধে ‘সচেতনতা সপ্তাহ’ পালন করে জেলা পরিষদ। এ বছরও সেই কর্মসূচি পালন হয়। কিন্তু ডেঙ্গি এবং জ্বরের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এই কর্মসূচিকে এক সপ্তাহ সীমার মধ্যে বেঁধে না রেখে সারা বছরের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জেলা পরিষদের এক কর্তা জানান।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১০
Share: Save:

জ্বর-ডেঙ্গি থেকে এ বার রেহাই মেলেনি হাওড়ারও। গত এক মাসে এই জেলায় ডেঙ্গিতে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। বহু মানুষ জ্বরে আক্রান্ত। মরসুমের এই শেষবেলায় এসে পুকুরের বর্জ্য সাফ, জমা জল পরিষ্কার, ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো-সহ নানা কর্মসূচি নিল হাওড়া জেলা পরিষদ। যা শুনে অনেকেই মনে করছেন, দেরিতে ঘুম ভাঙল জেলা পরিষদের।

প্রতি বছর ২৩-৩০ অক্টোবর মশাবাহিত রোগ এবং কুষ্ঠ রোগের বিরুদ্ধে ‘সচেতনতা সপ্তাহ’ পালন করে জেলা পরিষদ। এ বছরও সেই কর্মসূচি পালন হয়। কিন্তু ডেঙ্গি এবং জ্বরের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এই কর্মসূচিকে এক সপ্তাহ সীমার মধ্যে বেঁধে না রেখে সারা বছরের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জেলা পরিষদের এক কর্তা জানান। তাঁর কথায়, ‘‘হাওড়ার অধিকাংশ ব্লককে ‘নির্মল ব্লক’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। শুধু শৌচাগার হলেই তো হবে না, পুকুর সাফাই, নর্দমা পরিষ্কার, জমা জল বের করা— এ সব কাজও করতে হবে। নির্মল ব্লককে মশার আঁতুড়ঘর করতে দেওয়া যাবে না। সেই লক্ষ্যেই নানা কাজ করা হবে।’’

বছরের গোড়া থেকে স্বাস্থ্য দফতর এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে একযোগে কাজ করেই এ বার এখনও পর্যন্ত জ্বর-ডেঙ্গিতে অনেকটাই লাগাম পরাতে পেরেছে হুগলির শ্রীরামপুর পুরসভা। হাওড়া গ্রামীণ এলাকার বহু মানুষ মনে করছেন, জেলা পরিষদও যদি বছরের শুরু থেকে পথে নামত তা হলে এখানেও জ্বর-ডেঙ্গিতে লাগাম পরানো যেত। প্রাণহানিও
এড়ানো যেত।

কেন এত দেরি?

জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি, তৃণমূলের অজয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতর এবং প্রশাসনের অন্য দফতরও কাজ করছে। আমরা সব কিছুরই খোঁজ রাখছিলাম। সম্প্রতি দলের সাংগঠনিক বৈঠকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা পরিষদ এবং পুরসভাগুলিকে ডেঙ্গি রুখতে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেন। তার পরেই এই কর্মসূচি নেওয়া হয়।’’

বর্তমানে এই জেলায় জ্বরের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি হাওড়া-জগাছা, ডোমজুড়, সাঁকরাইল ব্লক এবং জগৎবল্লভপুরের একাংশে। এ ছাড়াও, গ্রামীণ হাওড়ার নানা প্রান্তেও জ্বর হচ্ছে। উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল-সহ সব স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং হাসপাতালে জ্বরের রোগীর ভিড় উপছে পড়ছে। গত এক মাসে ডেঙ্গিতে ডোমজুড়ের তিন জন এবং জয়পুরের এক জনের মৃত্যু হয়। এই পরিস্থিতিতে মশা নিধনে প্রতিটি পঞ্চায়েতের প্রধানের নেতৃত্বে ‘ভিলেজ হেল্থ স্যানিটেশন অ্যান্ড নিউট্রিশন কমিটি’-কে নামাচ্ছে জেলা পরিষদ। তারা জানিয়েছে, ইতিমধ্যে প্রতিটি কমিটিকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। কমিটির অধীনে মশা নিধনের জন্য আশাকর্মী, পঞ্চায়েত কর্মী, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নার্সদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি পঞ্চায়েতের হাতে মশা মারার যন্ত্রও তুলে দেওয়া হবে বলে জানান পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সীতানাথ ঘোষ।

তবু জ্বর-ডেঙ্গির আতঙ্ক কাটছে না গ্রামবাসীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dengue Howrah ডেঙ্গি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE