মশা মারতে: লার্ভা মারার তেল ছেটানো হচ্ছে শ্রীরামপুরে। নিজস্ব চিত্র
করোনা রয়েছে। শ্রীরামপুরে তার মধ্যেই হানা দিল ডেঙ্গি। শহরের খটিরবাজার এলাকার ডেঙ্গি আক্রান্ত এক যুবক শনিবার মারা গিয়েছেন। তাঁর দাদাও মশাবাহিত ওই রোগে আক্রান্ত। মাহেশ এলাকাতেই আরও কয়েকজনও আক্রান্ত। পরিস্থিতি মোকাবিলায় অভিযানে আরও জোর দিচ্ছে পুরসভা।পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান অমিয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ডেঙ্গি মোকাবিলায় বছরভর পরিকল্পনা অনুযায়ী কর্মসূচি চলে। তবু, দু’-এক জায়গায় ডেঙ্গি হয়েছে। প্রকোপ যাতে না বাড়ে, সে জন্য সব চেষ্টাই করা হচ্ছে। মশার বংশবৃদ্ধি ঠেকাতে নির্দিষ্ট ব্যবস্থার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।’’
নভেম্বর মাস জুড়ে ডেঙ্গি-অভিযান চলবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। অমিয়বাবু জানান, অনেক ক্ষেত্রে মানুষ জমি কিনে ফেলে রাখেন। ঝোপজঙ্গল গজিয়ে ওঠে। জল জমে। শরিকি সমস্যার জন্য পুকুর পরিষ্কার হয় না। ব্যক্তিগত সম্পত্তি হওয়ায় পুরসভা কিছু করতে পারে না। তা ছাড়া, একটি পুকুর সংস্কারে অন্তত ১০-১২ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। এত টাকা পুরসভার কোথায়? মালিকদের নোটিস পাঠানো হয়। এর বেশি কিছু করা পুরসভার সাধ্যে নেই। তবে, এ সব ক্ষেত্রে পুরসভা সাফাইয়ের কাজ করে মালিকের থেকে টাকা আদায়ের ব্যবস্থা করে না কেন, সেই প্রশ্ন উঠছে। নাগরিকদের অনেকেই বলছেন, বিকল্প ব্যবস্থা পুর কর্তৃপক্ষের ভাবা দরকার। খটিরবাজারের মৃত যুবক জয়ন্ত মুখোপাধ্যায়ের দাদা প্রতাপকে রবিবার করোনার উপসর্গ নিয়ে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রতাপের রক্তে প্লেটলেটের মাত্রা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। প্লেটলেট দিতে হয়। এলাকার বিদায়ী কাউন্সিলর তথা ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর তাপস মিত্র কলকাতা থেকে প্লেটলেট এনে দেন। শহরের মাহেশ কলোনিতে দিন কয়েকের মধ্যে ৮ জনের শরীরে ডেঙ্গির উপস্থিতি ধরা পড়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। দুর্গাপুজোর সময় প্রভানসগরেও ডেঙ্গি হানা দেয় বলে খবর।
মার্চ মাস থেকে করোনা নিয়ে প্রশাসন তটস্থ। তার উপরে ডেঙ্গি যাতে জোড়া বিপদ হিসেবে উপস্থিত হতে না পারে, সে জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সতর্ক করে দেয় নবান্ন। হুগলি জেলা প্রশাসনের তরফে পুরসভা এবং পঞ্চায়েতগুলিকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়। বছর কয়েক আগে শ্রীরামপুরে ডেঙ্গি ছেয়ে গিয়েছিল। পরিস্থিতি এমন জায়গায় গড়ায়, শ্রীরামপুরে ‘ডেঙ্গি মহামারি’ ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। তার পরেও এই জেলার বিভিন্ন শহরে ডেঙ্গি মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল। সে কথা মাথায় রেখে ডেঙ্গি মোকাবিলা বৈঠকে সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিকে বিশেষ ভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়। শ্রীরামপুরের পুরকর্তাদের একাংশ জানান, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এতদিন ডেঙ্গি সে ভাবে হানা না-দেওয়ায় তাঁরা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন। কিন্তু বর্ষা বিদায়ের পরে হঠাৎ করে ডেঙ্গি তাঁদের চিন্তা বাড়িয়েছে। যদিও এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘কয়েক জনের ডেঙ্গি হয়েছে ঠিকই, তবে ঘাবড়ানোর মতো কিছু হয়নি। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy