Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গরুতে ধান খাওয়ায় বৃদ্ধকে পিটিয়ে খুন

চিকিৎসক বৃদ্ধকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর ছেলে অনুপের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁদের পড়শি চন্দ্রকান্ত বাগকে গ্রেফতার করে। তবে, চন্দ্রকান্তের স্ত্রী, অভিযুক্ত মনিকাকে পুলিশ ধরতে পারেনি।

অভিযুক্ত: আদালতের পথে ধৃত চন্দ্রকান্ত বাগ। নিজস্ব চিত্র

অভিযুক্ত: আদালতের পথে ধৃত চন্দ্রকান্ত বাগ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্যামপুর শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৩৩
Share: Save:

এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল পড়শি দম্পতির বিরুদ্ধে। বৃদ্ধের ‘অপরাধ’, তাঁর গরু পড়শির জমির ধানের চারা খেয়েছিল!
বুধবার সন্ধ্যায় শ্যামপুরের গড়়চুমুক গ্রামের বাসিন্দা পঞ্চু মণ্ডল (৬৪) নামে ওই বৃদ্ধকে ঘরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে এলাকার কয়েকজন যুবক ঝুমঝুমি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসক বৃদ্ধকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর ছেলে অনুপের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁদের পড়শি চন্দ্রকান্ত বাগকে গ্রেফতার করে। তবে, চন্দ্রকান্তের স্ত্রী, অভিযুক্ত মনিকাকে পুলিশ ধরতে পারেনি।
পুলিশ জানায়, মনিকা পলাতক। তার খোঁজ চলছে। ওই দম্পতির বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। ধৃত চন্দ্রকান্তকে বৃহস্পতিবার উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে দু’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আদালতে যাওয়ার পথে চন্দ্রকান্ত অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, ‘‘পঞ্চুর গরু আমার ফসলের অনেক ক্ষতি করেছে। আমরা স্বামী-স্ত্রী মঙ্গলবার প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিলাম। সামান্য চড়-থাপ্পড় মেরেছিলাম ঠিকই। কিন্তু খুন করিনি। পঞ্চুকে ওঁর ষাঁড়ই গুঁতিয়ে মেরে ফেলেছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চুবাবু স্ত্রী ও পোষ্যদের নিয়ে একটি ঝুপড়িতে থাকেন। গরুতে ধানগাছ খাওয়া নিয়ে মঙ্গলবার সকালে পঞ্চুবাবুর সঙ্গে চন্দ্রকান্তবাবুর বচসা হলেও মিটে যায়। অভিযোগ ওই সন্ধ্যায় ফের স্ত্রীকে নিয়ে চন্দ্রকান্তবাবু চড়াও হন পঞ্চুবাবুর বাড়িতে। গরু বাঁধার খোঁটা দিয়ে তাঁকে মারধর করা হয়। পঞ্চুবাবুর ছেলে কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন। ওই দিন পঞ্চুবাবুর স্ত্রীও বাড়িতে ছিলেন না। বুধবার সকাল থেকে পঞ্চুবাবুর গরুগুলিকে ক্রমাগত ডাকতে দেখে সন্দেহ হয় এলাকাবাসীর। সন্ধ্যার পরে ঘটনার কথা জানাজানি হয়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, আগেও একই কারণে পঞ্চুবাবুকে মারধর করেছিল চন্দ্রকান্তবাবু।
মহাদেব সামন্ত নামে পঞ্চুবাবুর এক পড়শি বলেন, ‘‘গরুগুলি সারাদিন খেতে পায়নি বলেই বোধহয় চেঁচাচ্ছিল। পরে জানতে পারলাম পঞ্চুবাবু খুন হয়েছেন।’’ পঞ্চুবাবুর শ্যালক দাসপতি হাজরা বলেন, ‘‘জামাইবাবুর গরু চন্দ্রকান্তের ফসলের ক্ষতি করত ঠিকই। সে জন্য জামাইবাবু এক হাজার টাকা ক্ষতিপূরণও দিতে চেয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও জামাইবাবুকে খুন করা হল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Garchumuk
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE