আবর্জনা পরিষ্কার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উষ্মা প্রকাশের পরেই নড়েচড়ে বসেছিল হাওড়া পুরসভা। সাফাই দফতরের কর্মীরা ঠিক মতো কাজ করছেন কি না তা দেখতে নিজেই পথে নেমেছিলেন হাওড়ার পুর প্রশাসক বিজিন কৃষ্ণ নিজেই। এ বার হাওড়া পুর-এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য পরিকল্পনামাফিক পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। বুধবার তিনি জানান, নর্দমা থেকে পাঁক পরিষ্কার বা ডিসিল্টিং-এর কাজ শুরু হবে গ্রীষ্মের শুরুতেই এপ্রিল মাস নাগাদ। যাতে বর্যার আগেই কাজ শেষ করা যায়। পুর প্রশাসক বলেন, ‘‘নিকাশি নিয়ে এ বার যে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে তাতে আশা করা যায় জল জমার সমস্যা থেকে মানুষ অনেকটাই সুরাহা পাবেন।’’
হাওড়া শহরের নিকাশি নিয়ে সংস্কার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। পুরসভায় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে প্রথম বছর ঠিক থাকলেও বর্ষার আগে নর্দমা ও হাইড্র্যান্ট থেকে পাঁক পরিষ্কার না হওয়ায় তার পরের বছর থেকে প্রতি বর্ষায় সামান্য বৃষ্টিতেই বানভাসি হয়েছে তুলনামূলক ভাবে কিছু নিচু ওয়ার্ড। তাই ঠিক হয়েছে বর্ষার আগেই শহরের নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হবে। এর জন্য প্রথম দফায় কাজ শুরু হবে গ্রীষ্মের শুরুতে আগামী এপ্রিল মাস নাগাদ। এর পরে জুন মাস নাগাদ বর্ষার প্রারম্ভে দ্বিতীয় পর্যায়ে ওই কাজ হবে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কাজের জন্য চলতি মাসের মধ্যেই দরপত্র ডাকা হবে। কারণ পুরকর্তারা চান নির্বাচনী বিজ্ঞপ্তি ঘোষণার আগেই টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করা হোক। এর পরে সব কিছু খতিয়ে দেখে মার্চের মধ্যেই শুরু হবে কাজ। হাতে সময় কম। অল্প সময়ের মধ্যে এই কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। বর্ষার আগেই শেষ করার কথা।
পুর প্রশাসক বলেন, রেলের গাফিলতির কারণে রানি ঝিলের সংস্কার হয়নি। যার ফলে গোটা ঝিলটির নাব্যতা কমে গিয়েছে। পানা পর্যন্ত পরিষ্কার হয়নি।
তিনি বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে গত বছর বর্ষার আগে পুরসভার পক্ষ থেকে পূর্ব রেলের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে কোনও ফল হয়নি। এ বছর ফের রেলের সঙ্গে আলোচনা করে রানি ঝিল সংস্কারের ব্যাপারে উদ্যোগী হতে বলা হবে।’’
পুরসভার বক্তব্য, ওই ঝিল সংস্কার না করলে গোটা লিলুয়া ও উত্তর হাওড়ায় জমা জল নামানো কঠিন হবে। এর পাশাপাশি সব ক’টি ওয়ার্ডে নর্দমা যাতে ডিসিল্টিং করা হয় তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছর বর্ষায় হাওড়ার পঞ্চাননতলা রোড, বেলিলিয়াস রোড, বেনারস রোড-সহ উত্তর হাওড়ার বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে থাকে। পুর-প্রশাসকের বক্তব্য, এলাকার ভৌগলিক অবস্থার কারণে প্রতি বছর এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় হাওড়ার নাগরিকদের। এ বার ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে সেই সমস্যা কমবে বলেই আশা করছেন তিনি।
এ দিন পুর প্রশাসক বলেন হাওড়া পুরসভার ৪৭ নং ওয়ার্ডের মৌখালি খালের নিকাশি সংক্রান্ত কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। এই বিষয়ে পুরসভা উদ্যোগ নিয়েছে। এই কাজের জন্য বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করতে এজেন্সি নিয়োগ করা হয়েছে। ওই রিপোর্ট আসার পরে রাজ্য সরকারের কোনও বিশেষজ্ঞ দফতরকে দিয়ে ওই কাজ করানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy