Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

গাফিলতির নালিশ, তদন্ত

সুমনবাবুর অভিযোগ, পুলিশ জানিয়েছিল মোটরযান দফতর থেকে গাড়ির মালিকের তথ্য মিলছে না। তিনি নিজেই সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে ওই তথ্য বের করেন। তিনি বলেন, ‘‘জানুয়ারি মাসে বর্ধমানের মাধবডিহির বাসিন্দা, জনৈক জাহির আব্বাস মোল্লা শ্রীরামপুর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

পথ দুর্ঘটনা।—প্রতীকী চিত্র।

পথ দুর্ঘটনা।—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোন্নগর শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৭ ০২:১৪
Share: Save:

কোন্নগরে মোটরবাইকের ধাক্কায় এক বৃদ্ধের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে মৃতের পরিবার গাফিলতির অভিযোগ তুলেছিল। তাঁদের অভিযোগ, অভিযুক্ত বাইক চালক পুলিশকর্মীর ছেলে। ফলে তদন্তে গড়িমসি করা হয়েছে। এমনকী অভিযুক্তের পরিবর্তে অন্য লোককে আদালতে আত্মসমর্পণের অভিযোগও করেছে ওই পরিবারটি। এই অভিযোগে জেরে নতুন করে ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করল পুলিশ। জেলা পুলিশের এক অফিসারের কথায়, ‘‘তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ ওঠাতেই গোটা বিষয়টির নতুন করে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

পুলিশ ও স্থান‌ীয় সূত্রের খবর, গত ১৪ ডিসেম্বর কোন্নগরের ক্রাইপার রোডে স্থানীয় বাসিন্দা তারকেশ্বর সিংহকে একটি মোটরবাইক ধাক্কা মারে। কাছেই ছি‌লেন তাঁর পুত্রবধূ। তাঁর কথায়, তারকেশ্বরবাবু রাস্তার বাঁ দিক দিয়ে হাঁটছিলেন। ‘পুলিশ’ স্টিকার সাঁটা একটি বাইক বেপরোয়া গতিতে তাঁকে ধাক্কা মারে। ১৬ তারিখে তারকেশ্বরবাবুর ছেলে সুমন সিংহ উত্তরপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ১৮ তারিখে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তারকেশ্বরবাবু মারা যান।

সুমনবাবুর অভিযোগ, পুলিশ জানিয়েছিল মোটরযান দফতর থেকে গাড়ির মালিকের তথ্য মিলছে না। তিনি নিজেই সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে ওই তথ্য বের করেন। তিনি বলেন, ‘‘জানুয়ারি মাসে বর্ধমানের মাধবডিহির বাসিন্দা, জনৈক জাহির আব্বাস মোল্লা শ্রীরামপুর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই।’’ তিনি জামিনও পেয়ে যান। বাইকটি আটক করতেও অনেক দেরি করা হয়।

তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে অভিযোগ তুলে মাস কয়েক আগে সুমনবাবু রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব এবং হুগলির পুলিশ সুপারকে চিঠি দেন। এর পরেই শ্রীরামপুরের এসডিপিও কামনাশিস সেন সুমনবাবুদের ডেকে পাঠান। সব শুনে নতুন তদন্তকারী অফিসার নিয়োগ করা হয়। আদালতে সাক্ষীদের গোপন জবানবন্দি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। অভিযুক্ত নাবালক হওয়ায় আদালত মামলাটি জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে স্থানান্তর করে। সুমনবাবু বলেন, ‘‘নম্বর জানানো সত্ত্বেও কেন পুলিশ বাইকের তথ্য বের করতে পার‌‌ল না, কেন গাড়ি আটক করতে দেরি করল, কেন অন্য লোককে আত্মসমর্পণ করানো হল তা বোধগম্য হচ্ছে না।’’

পুলিশের একটি সূত্রের অবশ্য বক্তব্য, নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত চ‌লছিল। পুলিশকর্মীর ছেলে হওয়ায় তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ ঠিক নয়। বর্ধমানের যে ব্যক্তি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন, তিনি ছেলেটির আত্মীয়। ঘটনার দিন তিনি অভিযুক্তের সঙ্গেই গাড়িতে ছিলেন। পরে অভিযুক্ত জুভেনাইল কোর্টে আত্মসমর্পণ করে। সে-ও জামিন পেয়েছে। জেলার এক পুলিশকর্তা অবশ্য বলেন, তদন্তে খামতি ছিল কি না, তা দেখা হচ্ছে। তবে কেন পুলিশ বাইকে তথ্য বের করতে পারেনি, তার কোনও জবাব পুলিশকর্তাদের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE