দীর্ঘদিনের জমে থাকা আক্রোশ মেটাতে প্রৌঢ় বিশ্বনাথ দাসকে মাটিতে ফেলে বুকে একের পর এক ঘুষি মেরেছিল পিন্টু সিংহ। আর উঠে দাঁড়াতে পারেননি বিশ্বনাথবাবু। এরপর বিশ্বনাথবাবুর মৃতদেহ পরিত্যক্ত আবাসনের শৌচাগারের চেম্বারে দেহ ফেলে দিয়েছিল সে। কোন্নগরের ধর্মডাঙা এলাকায় অভিযুক্ত পিন্টুকে জেরা করে এমন তথ্যই পেয়েছে চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ।
কমিশনারেটের এডিসিপি (শ্রীরামপুর) অতুল ভি বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে ঘুষিতেই ওই প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়। তদন্ত চলছে। ধৃতকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’
মেয়ের বিয়ে জন্য মিষ্টির দোকানে অগ্রিম দিতে যাওয়ার কথা বলে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বাড়ি থেকে বের হন বছর চুয়ান্নর বিশ্বনাথবাবু। ঘণ্টা খানেক পরে স্থানীয় একটি কারখানার মাঠের কাছে তাঁকে দেখা গিয়েছিল। তার পর থেকে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। তদন্তে নেমে সোমবার সকালে ওই এলাকারই বাসিন্দা পিন্টুকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। জেরার মুখে পিন্টু জানায়, সে-ই খুন করেছে ওই প্রৌঢ়কে। এর পরেই তাকে নিয়ে গিয়ে চেম্বার থেকে দেহ উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। খুন এবং প্রমাণ লোপের অভিযোগে পিন্টুকে গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে দেহের ময়নাতদন্ত হয়। সূত্রের খবর, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, নিহতের পাঁজরের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। ক্ষত ছিল ফুসফুসেও। তদন্তকারী এক অফিসার বলেন, ‘‘পিন্টু সুঠাম চেহারার ছেলে। রং কারখানায় মালপত্র ওঠানো-নামানোর কাজ করে। গায়ে প্রচুর জোর। মনে হচ্ছে বিশ্বনাথকে মাটিতে ফেলে তাঁর বুকে ঘুষি মারে সে। অশক্ত প্রৌঢ় তা সহ্য করতে পারেননি।’’ এ দিন ধৃতকে শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ৭ দিন পুলিশ হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কমিশনারেট সূত্রের খবর, ধৃতকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মান করা হতে পারে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, পিন্টুর সঙ্গে নিহতের মেয়ের সম্পর্ক ছিল। পরে পিন্টুর বিয়ে হয়ে যায়। একটি ছেলেও হয়। তা সত্ত্বেও পিন্টু ওই যুবতীর সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চাইত। এই নিয়ে বিশ্বনাথ আপত্তি করতেন। তাতেই বিশ্বনাথের উপর আক্রোশ জন্মায় পিন্টুর। ঘটনার রাতে মদের আসরে দু’জনের কথা-কাটাকাটি হয়। তখনই আক্রোশ মেটাতে বিশ্বনাথের উপর পিন্টু ঝাঁপিয়ে পড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy