শ্যামপুরে রুশ জাহাজের কয়লা চুরি-কাণ্ডের তদন্তভার নিল রাজ্য এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ (ইবি)। বৃহস্পতিবারই ইবি-র পক্ষ থেকে তদন্তভার নেওয়ার কথা হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশকে জানিয়ে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে ধৃতদের যাতে তারাই জেরা করে তার জন্য এ দিনই ইবি-র পক্ষ থেকে উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতের বিচারক অমিতাভ মুখোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত আবেদন জানানো হয়।
রাজ্য ইবি-র এক কর্তার কথায়, ‘‘কয়লা চুরি চক্রের জাল অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। অনেক প্রভাবশালী এর সঙ্গে জড়িত বলে আমাদের সন্দেহ। সব দিক খতিয়ে দেখার স্বার্থেই আমরা এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছি।’’ আজ, শুক্রবার ইবি-র অফিসাররা তদন্ত করতে উলুবেড়িয়ায় আসছেন বলে দফতর সূত্রের খবর।
শিল্পের প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য একটি রুশ জাহাজে ২১ হাজার টন দামি কয়লা কলকাতা বন্দরে আনা হচ্ছিল কিছুদিন আগে। মাসখানেক আগে রাশিয়ার ভ্লাডিভস্টক বন্দর থেকে জাহাজটি রওনা দেয়। কলকাতা থেকে সেই কয়লা ঝাড়খণ্ডে যাওয়ার কথা ছিল। যে হেতু বড় জাহাজ সরাসরি কলকাতা বন্দরে ঢুকতে পারে না, তাই ডায়মন্ড হারবারে জাহাজটিকে দাঁড় করানো হয়। সেখান থেকে ১৯টি বার্জে করে কয়লা আনা হচ্ছিল খিদিরপুরে। গত ২০ সেপ্টেম্বর হুগলি নদী হয়ে কলকাতা বন্দরে আসার পথে একটি বার্জ শ্যামপুরের কাঁটাখালিতে দাঁড়িয়ে যায়। সেই বার্জ থেকেই দুষ্কৃতীরা কয়লা নামিয়ে ছোট নৌকায় করে পাচার করছিল। খবর পেয়ে পুলিশ গেলে নৌকা-সহ দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়।
পুলিশ তখন বার্জের ‘মাস্টার’ শেখ মনিরুল-সহ ছয় কর্মীকে গ্রেফতার করে। আটক করা হয় বার্জটিকে। তদন্ত করে পুলিশ উলুবেড়িয়ার জগদীশপুরের বাঁশতলার এক স্থানীয় দুষ্কৃতীর কথা জানতে পারে। ওই দুষ্কৃতীর বাড়িতে হানা দিয়ে পরের দিন তিন টন কয়লা উদ্ধার করে। যদিও ওই দুষ্কৃতীকে পুলিশ ধরতে পারেনি।
হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, প্রায় ১০ টন কয়লা বার্জ থেকে নামানো হয়েছিল। তিন টন উদ্ধার হলেও বাকি কয়লা বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে মনে হয়। বাঁশতলার দুষ্কৃতীকে ধরা হলে তার কাছ থেকে এ ব্যাপারে হদিস মিলতে পারে।
বার্জের মালিক উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে ১০ কোটি টাকার বন্ড দিয়ে সেটিকে ধবার ছাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এখন ইবি দায়িত্ব নেওয়ায় এই চুরির তদন্ত অন্য মাত্রা পেল বলে মনে করছেন জেলা পুলিশের কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy