Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সিঙ্গুরে টাটাদের ফেরাতে লকেটের কাছে আবেদন

যে সব চাষি সিঙ্গুরে শিল্পের দাবি তুলেছেন, লকেটের কথায় তাঁরা আশ্বস্ত হয়েছেন।

দাবি: শিল্প চেয়ে লকেটের কাছে জমায়েত। ছবি: দীপঙ্কর দে

দাবি: শিল্প চেয়ে লকেটের কাছে জমায়েত। ছবি: দীপঙ্কর দে

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯ ০৪:৫৩
Share: Save:

ফের সিঙ্গুরের সেই জমিতে টাটাদের ফিরিয়ে আনার দাবি উঠল শুক্রবার। চাষিদের একাংশের সেই দাবি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মাধ্যমে টাটাগোষ্ঠীর কর্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিলেন।

লোকসভা ভোটে জেতার পরে এ দিনই প্রথম সিঙ্গুরে গিয়েছিলেন হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট। গাড়ি কারখানার জন্য এক সময়ে অধিগৃহীত সেই জমিতে শিল্প স্থাপনের জন্য টাটাগোষ্ঠী যাতে ফিরে আসে, সে জন্য চাষিদের একাংশ তাঁদের সই করা আবেদনপত্র তুলে দেন সাংসদের হাতে। লকেট বলেন, ‘‘সিঙ্গুরে যাতে টাটাগোষ্ঠী ফিরে আসে, সে জন্য প্রধানমন্ত্রী মারফত তাদের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিশ্চয় কথা বলব।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সিঙ্গুরে অন্য শিল্পপতিরাও আসতে পারেন। তা হলে এখানকার বেকার ছেলেরা কাজ পাবে। হুগলিতে প্রচুর আলু উৎপাদন হয়। কিন্তু সে সংক্রান্ত কোনও শিল্প জেলায় নেই। সিঙ্গুরে সেই সুযোগ রয়েছে।’’

ভোটের প্রচার-পর্বে সিঙ্গুরের ওই জমিতে ফের শিল্পায়নের চেষ্টার আশ্বাস দিয়েছিলেন লকেট। ভোটে জিতেও লকেট সিঙ্গুরে নজর দেওয়ার কথা বলেছিলেন। সেইমতো এ দিন তিনি চাষিদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন। এই কর্মসূচি পুরোপুরি ‘অরাজনৈতিক’ বলেই সাংসদের দাবি। তাঁকে ঘিরে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো। বাম আমলের ‘ইচ্ছুক’ চাষিদেরই এ দিন মূলত লকেটের কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছে। মোট ১৫৭ জন চাষির সই করা ওই দাবিপত্র সাংসদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

সিঙ্গুর-আন্দোলন বিরোধী নেত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মসনদে পৌঁছে দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু এ বারের ভোটে সেই সিঙ্গুরেই বিজেপির কাছে হেরেছে তৃণমূল। সিঙ্গুর বিধানসভা হুগলি লোকসভা কেন্দ্রেরই অন্তর্গত। সেই সিঙ্গুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে এ দিন লকেট চাষিদের দাবি শোনার পরে মুখ্যমন্ত্রীকেই কটাক্ষ করেছেন। লকেটের অভিযোগ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এখানকার চাষিদের জন্য কিছুই করেননি। চাষিদের দিয়ে তাঁর কাজ মিটে গিয়েছে। তাই তিনি তাঁদের ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন।’’ একইসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘মুকুল রায় পর্যন্ত স্বীকার করেছেন, সিঙ্গুরে আন্দোলন ভুল হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর তা স্বীকার করতে কী সমস্যা?’’ লকেটের সঙ্গে থাকা বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু দাবি করেন, ‘‘২০২১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় এলে বিজেপি-র প্রথম কর্মসূচি হবে সিঙ্গুরে কারখানা করা।’’

যে সব চাষি সিঙ্গুরে শিল্পের দাবি তুলেছেন, লকেটের কথায় তাঁরা আশ্বস্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন গোপালনগরের অশোক দাস। তাঁর কথায়, ‘‘এখানে শিল্প হল না। চাষই বা হচ্ছে কোথায়? নতুন সাংসদ আশ্বাস দিয়েছেন। দেখা যাক।’’ গোপালনগরের চাষি সুফল দাস বলেন, ‘‘চাইছি সিঙ্গুরে কিছু হোক। তাই এখানে এসেছি।’’

তৃণমূল অবশ্য লকেটের এ দিনের কর্মসূচিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সিঙ্গুরের বেশির ভাগ চাষি জমি ফেরত চেয়েছিলেন। দীর্ঘ আন্দোলনের মাধ্যমে সেই জমি তাঁরা ফিরে পেয়েছেন। অন্য দলের কর্মসূচি নিয়ে মন্তব্য করব না।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Locket Chatterjee Singur TATA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE