ভঙ্গুর: ভেঙে পড়ছে চাঙড়। এই ঘরেই বসেন দমকলকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র
মশার জন্য না হোক, ছাদের চাঙড় ভেঙে মাথায় পড়ার ভয়ে মশারি টাঙাতে হয় রিষড়ার দমকলকর্মীদের!
ছাদের কংক্রিট ভেঙে রড বেরিয়ে গিয়েছে। দেওয়াল কার্যত ফুটিফাটা। দীর্ঘদিন যে সংস্কার হয়নি, এক ঝলক দেখলেই পরিস্কার। এর মধ্যেই দিব্যি চলছে অফিস। দিন-রাত কাটছে কর্মীদের। এই ভাবেই চলছে রিষড়া দমকল কেন্দ্র।
শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে টিসি মুখার্জি স্ট্রিটে দমকল কেন্দ্রটি তৈরি হয় আটের দশকে। ৮-১০ কাঠা ওই চৌহদ্দি আসলে পুরসভার জলের ওভারহেড রিজার্ভারের জায়গা। দু’দিকে দু’টি একতলা ভবন। দু’টিই ভাঙাচোরা। রাস্তার ধারেই যে ভবন, সেটির অবস্থা রীতিমতো বিপজ্জনক। এখানেই ‘ডিউটি অফিসারের’ টেবিল। নথিপত্র লেখালেখির কাজ চলে। পাশের ঘরে বিশ্রামের জায়গা। ঘরের চার দিক জীর্ণ। জল যাতে না পড়ে, সে জন্য ছাদের উপরে ত্রিপল খাটানো।
এক দমকলকর্মীর কথায়, ‘‘প্রায়ই চাঙড় ভেঙে পড়ছে। এ ভাবে কাজ করা যায়! সব সময় ভয়ে থাকি।’’ দফতরের আধিকারিক ও কর্মীদের কথায়, ‘‘যত তারাতাড়ি সম্ভব, কেন্দ্র সরানো দরকার। না হলে কোন দিন মাথায় ছাদ ভেঙে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটবে।’’ জলের রিজার্ভারের নিচে ছাউনি করে রান্না এবং বসার জায়গা। আগুন নেভানোর সরঞ্জাম-সহ অন্যান্য জিনিসও এখানে রাখা হয়। বাঁশ এবং বেড়ার তৈরি শেডের নিচে থাকে দমকলের গাড়ি।
হুগলিতে এখন ১৩টি দমকলকেন্দ্র চালু রয়েছে। রিষড়ার কেন্দ্রটিতে দু’টি গাড়ি। কর্মী অপ্রতুল। অফিসার ও কর্মী মিলিয়ে ৪০-৪২ জন থাকার কথা। আছেন ২৮ জন। মূলত রিষড়া শহরেই আগুন নেভানো বা অন্য আপৎকালীন পরিস্থিতিতে উদ্ধার কাজে যেতে হয়।
দমকল সূত্রের খবর, ওই কেন্দ্রের জন্য রিষড়া পুরসভা কর নেয় না। জীর্ণ ভবন নিয়ে দমকলের আধিকারিকদের সঙ্গে পুরপ্রধান বিজয় মিশ্রের বৈঠক হয়েছে। দমকলের শ্রীরামপুরের বিভাগীয় প্রধান সনৎ মণ্ডল জানান, পুরসভা ওই বিপজ্জনক ভবন ভেঙে নতুন করে তৈরি করে দেবে। তত দিন দমকলকর্মীদের থাকার জন্য পুরসভার তরফেই একটি বাড়ি দেওয়া হবে। চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই কর্মীদের সেখানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
পুরপ্রধান বিজয় মিশ্র বলেন, ‘‘রিজার্ভারটি ভেঙে নতুন করে করা হবে। একই সঙ্গে দমকলের জীর্ণ ভবনও ভেঙে নতুন করে তৈরি করা হবে। শীঘ্রই ওই কাজে হাত দেব। তত দিন পুরসভার একটি কমিউনিটি হলে দমকলকর্মীদের রাখার ব্যবস্থা হবে। সেখানে বিদ্যুৎ, জল— সব ব্যবস্থাই পুরসভা করবে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘রিষড়ার বাসিন্দারা যাতে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হন, সে জন্যই পুরসভা ব্যবস্থা করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy