Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
কর্মী সঙ্কট, এক বছরেও চালু হয়নি পান্ডুয়ার অফিস

দমকল মানে নীল-সাদা  এক বাড়ি

বছর খানেক আগে তারকেশ্বরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করেছিলেন পান্ডুয়া দমকল অফিসটি। কাজও শেষ হয়ে গিয়েছে। অথচ, এ বছর এপ্রিলেও সে অফিস তেমনই পড়ে রয়েছে। ফলে সমস্যা যে জায়গায় ছিল, সেখানেই রয়েছে— অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

অপেক্ষা: উদ্বোধনের পর পড়ে পান্ডুয়ার দমকল ভবন। নিজস্ব চিত্র

অপেক্ষা: উদ্বোধনের পর পড়ে পান্ডুয়ার দমকল ভবন। নিজস্ব চিত্র

সুশান্ত সরকার
পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৮ ১০:৩৮
Share: Save:

নীল-সাদা বাড়িটি দাঁড়িয়ে রয়েছে বছর খানেক হল। তবে উঠোনে একটিও লাল গাড়ি দেখা যায়নি কোনও দিন, শোনা যায়নি বিপদঘণ্টির শব্দ। অথচ, ছোট-বড় বেশ কয়েকটি আগুন লেগেছে এই কয়েক মাসে। প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূর থেকে দমকলের গাড়ি আসতে আসতে নিভেও গিয়েছে সে আগুন। ততক্ষণে পুড়ে খাক হয়েছে বহুমূল্য সম্পত্তি। পান্ডুয়ার বাসিন্দাদের জন্য রয়ে গিয়েছে হতাশা।

এলাকার সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘‘ভাঁওতা দিয়ে বাড়ি তৈরি হয়েছে। কাজের কাজ কিচ্ছু না।’’

বছর খানেক আগে তারকেশ্বরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করেছিলেন পান্ডুয়া দমকল অফিসটি। কাজও শেষ হয়ে গিয়েছে। অথচ, এ বছর এপ্রিলেও সে অফিস তেমনই পড়ে রয়েছে। ফলে সমস্যা যে জায়গায় ছিল, সেখানেই রয়েছে— অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পান্ডুয়ার সবচেয়ে কাছে বাঁশবেড়িয়ার দমকল অফিস। দীর্ঘদিন ধরেই আপদে বিপদে সেখান থেকে আসে দমকলের গাড়ি। দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। তার মধ্যে আবার পার হতে হয় দু’টি লেভেলক্রসিং। ফলে আগুনের খবর পেয়ে দমকলের গাড়ি অকুস্থলে পৌঁছতে সময় লেগে যায় দেড়-দু’ঘণ্টা। কয়েক মাস আগে পান্ডুয়ার একটি বাড়িতে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে আগুন ধরে যায়। পরিবারের লোকজন প্রাণে বাঁচলেও গোটা বাড়িটি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। শুধু পান্ডুয়া নয়, ওই দমকল অফিস চালু হলে সুবিধা হবে মগরা, হোয়েরা, সিমলাগড়, ভাস্তারা, রামেশ্বরপুর, গুরাপ, বৈঁচী-সহ বেশ কিছু এলাকার।

পান্ডুয়ায় একটি দমকল অফিস তৈরির দাবি তাই অনেকদিন ধরেই করছিলেন বাসিন্দারা। সে দাবি মান্যতাও পায় রাজ্য রাজনীতির পালাবদলের পর। নতুন দমকল অফিসের কাজ শুরু ২০১৫ সালে। তারপর প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে একটু একটু করে তৈরি হয়েছে নীল-সাদা সুদৃশ্য বাড়ি, চারপাশের পাঁচিল। জলের জন্য পাম্প বসানো হয়ে গিয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগও রয়েছে। গত বছর এপ্রিল নাগাদ তারকেশ্বরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই ভবনের উদ্বোধনও করে ফেলেছেন। তারপর কাজ শেষ হয়েছে গত জুলাই নাগাদ। তবে চালু করা যায়নি দমকল দফতর।

বিধায়কের কটাক্ষ, ‘‘দমকল দফতরে কর্মী সঙ্কট। নতুন অফিস চালু হবে কী করে? বাড়ি রং করে জোর করে উদ্বোধন করে দেওয়া হল পান্ডুয়া অফিসের।’’ আমজাদ হোসেনের অভিযোগের সত্যতা যে রয়েছে, মানছেন অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের অনেক কর্মীই। এমনকী, কবে পান্ডুয়ার অফিস চালু হবে? বাঁশবেড়িয়ার এক দমকল কর্তা আশ্বাস দেন, ‘‘এই তো হয়ে যাবে। ’’ এক তৃণমূল নেতা আবার বলে বসেন, ‘‘এই তো পঞ্চায়েত ভোটের আগেই চালু হয়ে যাবে দমকল দফতর।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Brigade Workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE