Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সিল্ক হাবের কাজ শুরু কবে, উত্তর অজানাই

হুগলির তারাপুকুর, তালপুকুর, পিয়ারাপুর, শেওড়াফুলি, বৈদ্যবাটিতে সিল্ক প্রিন্টিংয়ের ছোটবড় বহু কারখানা রয়েছে। সিল্কের উপরে ছাপার এই কাজে কয়েক হাজার মানুষ যুক্ত। কিন্তু নানা কারণে এই শিল্পের তেমন প্রসার ঘটেনি।

প্রস্তাবিত: এই জমিতেই প্রকল্প গড়ে ওঠার কথা। নিজস্ব চিত্র

প্রস্তাবিত: এই জমিতেই প্রকল্প গড়ে ওঠার কথা। নিজস্ব চিত্র

প্রকাশ পাল
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩৪
Share: Save:

ঘুরেফিরে শ্রীরামপুরে প্রস্তাবিত সিল্ক প্রিন্টিং হাব গড়ার দায়িত্ব এসেছে ক্ষুদ্র কুটির শিল্প দফতরের কাঁধেই।

সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিক জোর গলায় জানিয়েছেন, শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। কিন্তু প্রকল্প কবে বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন সব মহলেই।

হুগলির তারাপুকুর, তালপুকুর, পিয়ারাপুর, শেওড়াফুলি, বৈদ্যবাটিতে সিল্ক প্রিন্টিংয়ের ছোটবড় বহু কারখানা রয়েছে। সিল্কের উপরে ছাপার এই কাজে কয়েক হাজার মানুষ যুক্ত। কিন্তু নানা কারণে এই শিল্পের তেমন প্রসার ঘটেনি।

কয়েক বছর আগে মাহেশ মৌজায় প্রায় ৫০ একর জমিতে সিল্ক প্রিন্টিং হাবের প্রকল্প নেয় রাজ্য সরকার। সব কারখানাকে শিল্পতালুকে আনার পরিকল্পনা করা হয়। ২০১৪ সালের জুন মাসে প্রকল্পের শিলান্যাস হয়। বলা হয়েছিল, এক বছরের মধ্যে ক্ষুদ্র কুটির শিল্প দফতর ওই হাব গড়বে।

পরে ঠিক হয়, ওই জায়গায় সিল্ক-পার্ক গড়বে শিল্পোন্নয়ন নিগম। কিন্তু বিস্তর পরিকল্পনা হল‌েও কাজের কাজ হয়নি। গত বছরের জুন মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গ তোলেন। মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত কাজের নির্দেশ দেন।

প্রশাসন সূত্রের খবর, এর পরে ফের সিদ্ধান্ত বদল হয়। ঠিক হয়, কাজটি ক্ষুদ্র কুটির শিল্প দফতরই করবে। গত ২০ মার্চ গুড়াপে প্রশাসনিক বৈঠকে ওই দফতরের প্রধান সচিব রাজীব সিংহ জানান, শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। বৈঠকের এক সপ্তাহ পরেও কাজের দিনক্ষণ নিয়ে মহকুমা থেকে জেলা প্রশাসন বা পুরসভা— কোথাও সদুত্তর মেলেনি।

এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘কবে কি হবে, বিন্দুবিসর্গ জানি না।’’ পুরপ্রধান অমিয়বাবুর বক্তব্য, ‘‘আমরা সরকারের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছি।’’ জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, ‘‘ক্ষুদ্র কুটির শিল্প দফতর তাড়াতাড়ি কাজ শুরুর চেষ্টা করছে।’’ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের কথায়, ‘‘প্রকল্প কোন পর্যায়ে আছে, রেকর্ড না দেখে বলতে পারব না।’’

প্রশাসন সূত্রের খবর, ভূমি দফতরের হাত থেকে জমি এখনও হস্তান্তর হয়নি। হুগলির অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি রাজস্ব) পূর্ণেন্দু মাঝি বলেন, ‘‘জমি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। আশা করছি, শীঘ্রই তা হয়ে যাবে।’’

শ্রীরামপুর সিল্ক প্রিন্টার ওনার্স ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চিফ এগ্‌জিকিউটিভ তথা শ্রীরামপুর পুরসভার কাউন্সিলর পিনাকী ভট্টাচার্যের অবশ্য দাবি, ‘‘ক’দিন আগেই দফতরের প্রধান সচিবের ঘরে বৈঠক হয়েছে। জমি তৈরি এবং সীমানা-প্রাচীর তৈরির কাজ শীঘ্রই হওয়ার কথা।’’ সিল্ক-প্রিন্টিং কারখানার মালিক এবং ফাউন্ডেশনের অন্যতম ডিরেক্টর দীপন ভাদুড়ির কথায়, ‘‘ আমরা আশাবাদী। সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকরা ইতিবাচক পদক্ষেপই করছেন। প্রকল্পটা হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটা ভাল।’’

অনেক কারখানা মালিক অবশ্য বলছেন, বহু বার আশ্বাস মিলেছে। অথচ কাজ হয়নি। এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘দেরি যত হচ্ছে, প্রকল্পের খরচও তো বাড়ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Srirampur Silk Printing Hub Hooghly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE