নজির: এই ইলিশ কেনারই হিড়িক ১১ ফটক বাজারে। ছবি: সুব্রত জানা
মাত্র দু’মাসের ব্যবধানে উলুবেড়িয়া মহকুমা থেকে ধরা পড়ল তিনটি বড় মাপের ইলিশ। মঙ্গলবার উলুবেড়িয়ায় গঙ্গা থেকে ধরা পড়ল যে ইলিশটি তার ওজন তিন কিলোগ্রাম। মাসখানেক আগে গাদিয়াড়ায় রূপনারায়ণ ও গঙ্গার সঙ্গমস্থলে জেলেরা ধরেছিলেন দু’টি ইলিশ। একেকটির ওজন ছিল আড়াই কিলোগ্রাম করে। উলুবেড়িয়ায় এ দিন ইলিশটি বিক্রি হল চার হাজার টাকা প্রতি কিলোগ্রাম দরে। গাদিয়াড়ায় দু’টি ইলিশ বিক্রি হয়েছিল থোক ২৬ হাজার টাকায়।
দু’টি ক্ষেত্রেই বহু বছর পরে এত বড় মাপের ইলিশ ধরা পড়ল বলে ব্যবসায়ী এবং মৎস্য দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন। এ দিন খুব ভোরে মৎস্যজীবীরা এই মাছটি ধরেন। যে ব্যবসায়ীর কাছে এই মাছটি মৎসজীবী বিক্রি করেন সেই নেপাল পাখিরা বলেন, ‘‘গত কুড়ি বছরে এত বড় মাপের ইলিশ আমি দেখিনি।’’ জেলা মৎস্য দফতরের উপ অধিকর্তা অম্বালিকা ঘোষের ও বক্তব্য, ‘‘এত বড় ইলিশ ধরা পড়ার খবর অনেক বছর পেলাম।’’
এই বিষয়টিকে অবশ্য তাঁদের দফতরের সাফল্য বলেই মনে করছেন জেলা মৎস্য দফতরের কর্তারা। উল্লেখ্য, গত কয়েকবছর ধরেই ৫০০ গ্রামের কম ওজনের ইলিশ ধরার বিরুদ্ধে প্রচারাভিযান চালাচ্ছে মৎস্য দফতর। বাজারে বাজারে গিয়ে ধরপাকড় করা, ছোট ইলিশ যে সব মৎস্যজীবী ধরতে যান তাঁদের বিকল্প রোজগারের ব্যবস্থা সবই করা হচ্ছে মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে।
হাও়ড়ার শ্যামপুর থেকেই বেশির ভাগ মৎস্যজীবী ইলিশ ধরতে যান। তাঁদের অনেককে সাইকেল এবং হাঁড়ি দেওয়া হয়েছে যাতে তাঁরা ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরতে না গিয়ে বিকল্প হিসাবে পুকুরের মাছ ফেরি করতে পারেন। কারণ ওই সময়েই তাদের প্রজনন হয়। জেলা মৎস্য দফতরের কর্তাদের অনুমান, এইসব ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে কিছুটা হলেও কাজ হয়েছে যার সুফল ফলেছে বড় মাছ মেলার মধ্য দিয়ে।
হাওড়া জেলার বিভিন্ন বড় বাজারে কিন্তু বেশির ভাগ ইলিশ আসে ডায়মন্ডহারবার এবং দিঘা থেকে। আবার কোলাঘাট, গাদিয়াড়া, উলুবেড়িয়া প্রভৃতি এলাকায় গঙ্গা বা রূপনারায়ণ থেকে যে ইলিশ ধরা হয় তাৎক্ষণিক ভাবে সেগুলি স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয়ে যায়। ঘটনাটক্রে যে তিনটি বড় ইলিশ ধরা পড়েছে সেগুলি ধরা হয়েছে মৎসজীবীদের হাত ধরে।
অম্বালিকাদেবীর বক্তব্য, ‘‘যদিও সংখ্যা হিসাবে এটা খুবই নগণ্য। তবু স্থানীয়ভাবে তিনটি বড় ইলিশ ধরা পড়ায় মনে হচ্ছে এখানে যে তাদের বড় হওয়ার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। আমরা মনে করছি আমাদের নানাবিধ ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রচারাভিযানের ফলে কিছুটা হলেও ছোট ইলিশ ধরা কমেছে।’’ শুধু তাই নয়, মৎস্যজীবীদেরও এই ঘটনা অনুপ্রেরণা দেবে বলে তিনি মনে করেন। তাঁর কথায়, ‘‘ছোট ইলিশ না ধরা হলে সেটা যদি বাড়তে থাকে তাহলে তার আকার কতটা বড় হতে পারে তা মৎস্যজীবীরা নিজের চোখে দেখতে পেলেন।’’ এই তিনটি বড় ইলিশের কথা তাঁরা আগামী দিনে প্রচারের সময়ে উল্লেখ করবেন বলেও জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy