রাজ্য সরকারের তরফে এ বছর শিক্ষারত্ন পেলেন হুগলির ৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাঁদের মধ্যে এক শিক্ষিকা-সহ ৪ জনই আরামবাগ মহকুমার। হগলি জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শুক্লা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন স্কুলগুলি থেকে মোট ৭জনের নাম এসেছিল। নির্দিষ্ট মানদণ্ডের বিচারে ৫ জন মনোনীত হয়েছিলেন।’’ শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পাঁচ জনের মধ্যে দু’জন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকও আছেন। ওই পাঁচ জন শিক্ষক হলেন — প্রদীপ গঙ্গোপাধ্যায়, মানসরঞ্জন নন্দী, অনিতা মুখোপাধ্যায়, গৌতম চক্রবর্তী এবং সঞ্জীব ঘোষ।
গোঘাটের বেঙ্গাই হাইস্কুলের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক প্রদীপবাবু ১৯৯৪ সালে এই স্কুলে যোগ দেন। বৃত্তিমূলক শিক্ষায় পুরনো নিয়ম পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে তাঁর বিশেষ ভূমিকা আছে। ২০০৫ সালে তাঁর উদ্যোগে সাড়া দিয়ে রাজ্য সরকার নতুন বৃত্তিমূলক সংসদ গঠন করে। এ ছাড়াও পদার্থ বিজ্ঞানের প্রখ্যাত লেখক চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্তর সহলেখক হিসেবে একাধিক বই লেখেন। এখনও পর্যন্ত মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিউক এবং কলেজ স্তরে ১৫টি বই প্রকাশিত হয়েছে। আরামবাগের ইতিহাস নিয়ে গবেষণাধর্মী বইও আছে তাঁর। তিনশো থেকে চারশো বছরের প্রাচীন পুঁথি সংগ্রহের সংখ্যাও শতাধিক।
খানাকুলের রামনগর অতুল বিদ্যালয়ের জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষক মানসরঞ্জনবাবুর ভূমিকা হল— পঠনপাঠনে জনপ্রিয়তা। পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের বিবিধ অনুষ্ঠান এবং প্রতিযোগিতায় সামিল করা তাঁর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট। ন্যাশনাল চিলড্রেন্স সায়েন্স কংগ্রেস, যুব পার্লামেন্ট অধিবেশন-সহ নানান ক্ষেত্রে জেলা ও রাজ্য স্তরে ছাত্রছাত্রীদের যোগদান করিয়ে পুরস্কার এনেছেন তিনি। সপ্তম শ্রেণির জীবন বিজ্ঞানের বইও আছে তাঁর।
আরামবাগ মহকুমার অন্য দু’জনের মধ্যে গোঘাটের কাঁঠালি হাইস্কুলের শারীরবিদ্যার শিক্ষিকা অনিতা মুখোপাধ্যায় রয়েছেন। তৃণমূল শিক্ষা সেলের এই নেত্রীর বিশেষ গুণাবলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনি ছাত্রছাত্রী দরদী এবং স্কুল দরদী হিসাবে খ্যাত। বিভিন্ন মেধার ছাত্রছাত্রীদের মেলবন্ধন ঘটিয়ে স্কুলে বিশেষ পরিবেশ তৈরি করেছেন। দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের বই-সহ নানা সরঞ্জাম দিয়ে থাকেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তাতে ছাত্রছাত্রীদের সামিল করিয়ে ভূমিকা তাঁর শেষ করেন না। পড়ুয়াদের সংস্কৃতি মনস্ক করে তোলায় বিশেষ জোর দেন তিনি। গোঘাটেরই নগরাকৃত্তিবাস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌতম চক্রবর্তী শিক্ষারত্ন পেয়েছেন গণ্ড গ্রামের ছাত্রছাত্রীদের স্কুলমুখী করা, বৃদ্ধাশ্রম-অনাথাশ্রম ইত্যাদি সমাজসেবায় তাঁর বিশেষ অবদানের জন্যই।
পুরস্কারপ্রাপ্ত এই জেলার অন্যজন শিক্ষক হলেন পান্ডুয়া থানা সংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় হারাধনচন্দ্র নিম্নবুনিয়াদির প্রধান শিক্ষক সঞ্জীববাবু। তিনি তাঁর ২২ বছরের কর্মজীবনে স্কুলের সার্বিক মানোন্নয়ন করে একটা ভাল জায়গায় নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে নির্মল বাংলা-সহ বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচি প্রচার করেন। এছাড়াও নিয়মিত রক্তদান শিবির-সহ নানা সমাজসেবামূলক অনুষ্ঠানে তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy