দিদিকে বলো-তে ফোন করে ছেলের চিকিৎসার সুযোগ পেলেন ফটিকগাছির এক দিনমজুর। ফাইল চিত্র
তিন বছরের ছেলে কিডনির জটিল রোগে আক্রান্ত। জরুরি অস্ত্রোপচার দরকার। কী ভাবে তা হবে, চিন্তায় ঘুম হচ্ছিল না জগৎবল্লভপুরের ফটিকগাছির বাসিন্দা পেশায় দিন মজুর সঞ্জীব বেলেন। ‘দিদিকে বলো’- নম্বরে ফোন করে অবশেষে তিনি সাহায্য পেয়েছেন। আজ, বুধবার কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর ছেলে আকাশের এমআরআই হওয়ার কথা। তারপরে এই হাসপাতালেই পরবর্তী চিকিৎসা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে জানান সঞ্জীব।
সঞ্জীব জানান, তাঁর দুই ছেলে। বড়টির বয়স পাঁচ আর ছোটটি তিন। আড়াই মাস আগে ছোট ছেলে আকাশের জ্বর হয়। কিছুতেই সেই জ্বর কমছিল না। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে আলট্রাসোনোগ্রাফি করে দেখা যায় অসুখটি কিডনি সংক্রান্ত। চিকিৎসক সঞ্জীবকে পরামর্শ দেন ছেলেকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
আকাশকে নিয়ে অগস্ট মাসের গোড়ায় এসএসকেএম-এর পলিক্লিনিকে যান সঞ্জীব। সেখানে ইউরোলজিস্ট ছেলেটিকে পরীক্ষা করেন। তাঁর পরামর্শে আকাশের একাধিক রক্ত পরীক্ষা হয়। সঞ্জীব জানান, হাসপাতালে ব্যবস্থা না থাকায় সব পরীক্ষা করতে হয় বাইরেই। পলিক্লিনিক থেকে পাঠানো হয় সার্জারি বিভাগে। সেখান থেকে তাঁকে এমআরআই করানোর জন্য পাঠানো হয় জরুরি বিভাগে। কিন্তু টাকার অভাবে আর সেটা করাতে পারেনি সঞ্জীব। চিকিৎসক জানান, যত তাড়াতাড়ি এমআরআই করানো হবে তত তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে, আদৌ অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন রয়েছে কি না। সেই সময় সঞ্জীব হাওড়া স্টেশনে একটি হোর্ডিংয়ে ‘দিদিকে বলো’-র জন্য দেওয়া নম্বর দেখে ফোন করেন তিনি। সঞ্জীবের কথায়, ‘‘পরপর তিনদিন ফোন করেছিলাম। তিন দিনই ফোন আমাকে বলা হয়, ব্যবস্থা করা হবে। অবশেষে গত শনিবার ফোন করে বলা হয়, সোমবার আমি যেন সব কাগজ নিয়ে কালীঘাটে দিদির কার্যালয়ে দেখা করি।’’
সেই নির্দেশ মতো সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের কার্যালয়ে যান সঞ্জীব। সেখান থেকেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে তাঁকে জানানো হয়, ‘দিদিকে বলো’ থেকে তাঁদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। এরপরই বুধবার এমআরআই করার জন্য ছেলেকে আনতে বলা হয় সঞ্জীবকে। সঞ্জীবের কথায়, ‘‘দিদিেক ফোন করে এ ভাবে উপকার পাব, ভাবিনি। আমার রোজগার সামান্য। ছেলের চিকিৎসার জন্য বাজারে অনেক দেনাও হয়ে গিয়েছে। ছেলে সুস্থ হলে দিদির সঙ্গে দেখা করিয়ে আনব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy