Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

তথ্য জেনে টাকা লোপাট, ধৃত ২

পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম বিরসা সরেন এবং অমিত পাল। বিরসার বাড়ি ঝাড়খণ্ডের জামতারায়। অমিত আসানসোলের সালানপুরের বাসিন্দা। সোমবার রাতে ওই দু’জনের বাড়িতে হানা দিয়ে গ্রেফতার করা হয়। তবে লোপাট হওয়া টাকা উদ্ধার হয়নি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৮ ০৮:২৫
Share: Save:

মোবাইলে ফোন করে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে এটিএম কার্ডের তথ্য জেনে নিয়ে টাকা লোপাটের অভিযোগ নতুন নয়। সাধারণ মহিলা থেকে বৃদ্ধ, চাকুরিজীবী— অনেকেই এ ভাবে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এ বার এমনই একটি প্রতারণা চক্রের হদিশ পেল শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম বিরসা সরেন এবং অমিত পাল। বিরসার বাড়ি ঝাড়খণ্ডের জামতারায়। অমিত আসানসোলের সালানপুরের বাসিন্দা। সোমবার রাতে ওই দু’জনের বাড়িতে হানা দিয়ে গ্রেফতার করা হয়। তবে লোপাট হওয়া টাকা উদ্ধার হয়নি। ওই চক্রে আরও লোক আছে বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। তাদের চিহ্নিত করে ধরার চেষ্টা চলছে। লোপাট হওয়া টাকা উদ্ধারের চেষ্টাও করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতদের ৯ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। চন্দননগর কমিশনারেটের এডিসিপি (শ্রীরামপুর) অম্লান ঘোষ বলেন, ‘‘ধৃতেরা অপরাধ স্বীকার করেছে। ওদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, মাস দু’য়েক আগে শ্রীরামপুরের কুমিরজলা রোডের বাসিন্দা শৈলজাশঙ্কর সান্যাল এবং তাঁর স্ত্রীর এটিএম কার্ডের তথ্য জানতে ফোন এসেছিল। তাঁরা সব তথ্য দেওয়ার পর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৬০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শৈলজাবাবু শ্রীরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ।

তদন্তকারী অফিসাররা জানান, তদন্তে নেমে নেট ব্যাঙ্কিংয়ে টাকা রাখার জন্য বিভিন্ন ‘ওয়ালেট’ সংস্থা, একাধিক ব্যাঙ্ক এবং মোবাইল সংস্থার সাহায্য নিয়ে ধৃত দু’জনের কথা জানা যায়। এর পরেই ঝাড়খন্ড ও আসানসোলে হানা দেয় শ্রীরামপুর থানার পুলিশ।

জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, পরিচিত দু’-একজনকে নিজেদের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে দিয়েছিল তারা। তার বিনিময়ে কমিশন মিলত। পুলিশের বক্তব্য, বিরসা তেমন কোনও কাজ করে না। অথচ গত দু’বছরে তার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা
লেনদেন হয়েছে।

এডিসিপি অম্লানবাবু জানান, ফোনে ব্যাঙ্ক সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যাতে কেউ না জানান এবং প্রয়োজনে ব্যাঙ্ক থেকে বিষয়টি যাচাই করে নেন, তা নিয়ে সাধারণ মানুষকে পুলিশের তরফে নানা ভাবে সতর্ক করা হয়। তা সত্বেও অজ্ঞতাবশত বা ভুলক্রমে অনেকেই এই ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেন। তাতেই বিপত্তি হয়।

তদন্তকারীরা জানান, প্রতারকরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে নম্বর জোগাড় করে ফোন করে। কথার জালে গ্রাহককে বিভ্রান্ত করে এটিএমের পিন নম্বর এবং ওটিপি জেনে কাজ হাসিল করে। এর পরে প্রতারিতের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে কেনাকাটা করে অথবা ‘ওয়ালেটে’ বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমিয়ে নেয়। পুলিশের পক্ষে সব সময় প্রতারকদের হদিশ পাওয়া সম্ভব হয় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ATM Fraud Hoogly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE