সই সংগ্রহ। নিজস্ব চিত্র
বেতনের দাবিতে এ বার গণস্বাক্ষর সংগ্রহে নামলেন রিষড়া সেবাসদন হাসপাতালের কর্মীরা।
মঙ্গল ও বুধবার হাসপাতালের সামনের রাস্তায় চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসেন তাঁরা। পথচলতি মানুষ থেকে গাড়ির চালক সকলের কাছেই নিজেদের অবস্থার কথা তুলে ধরছেন তাঁরা। নিজেদের সমস্যার সুরাহার পাশাপাশি ওই হাসপাতালের পরিকাঠামো ঢেলে সাজতে রাজ্যের কাছে আর্জি জানাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার তাঁরা রিষড়া স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে সই সংগ্রহে নামেন। আন্দোলনে নামা কর্মীদের দাবি, ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার মানুষ তাঁদের দাবি সংবলিত চিঠিতে সই করেছেন। এর আগে বেতনের দাবিতে কর্মীরা হাসপাতাল সুপারকে ঘেরাও করেছেন। পথ অবরোধও হয়েছে। মহকুমাশাসকের কাছেও দরবার করেছেন তাঁরা। সম্প্রতি সমস্যা সমাধানে তদারকি কমিটি বৈঠকে বসেছিল। তাতে অবশ্য কোনও সুরাহা মেলেনি।
প্রশাসন সূত্রের খবর, শ্রীরামপুর মহকুমাশাসক রজত নন্দ দিন দু’য়েক আগে গোটা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। সরকারি অধিগ্রহণের বিষয়টিও রিপোর্টে জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতাল যাতে ভাল ভাবে চলে, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে অধিগ্রহণ করা হবে কি না, সরকারই সেই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
গত প্রায় এক দশক ধরে এই হাসপাতালের ‘অবক্ষয়’ শুরু হয়। কর্মীদের অভিযোগ, এই অবস্থায় ঘুরে দাঁড়ানো দূর অস্ত, রাজনীতির আবহে পরিস্থাতি আরও খারাপ হয়। নানা অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে ২০১১ সালে রাজ্য সরকার হাসপাতালে অনুদান দেওয়া বন্ধ করে দেয়। পরিচালন সমিতির পদ থেকে সিপিএম নেতা দিলীপ সরকার-সহ অন্য সদস্যরা পদত্যাগ করেন। সঙ্কটে পড়েন কর্মীরা। বেতন বাকি পড়ে যায়। তাঁদের দীর্ঘ আন্দোলনের জেরে হাসপাতাল চালাতে রাজ্য সরকার তদারকি কমিটি গড়ে দেয়। পুরসভা বেতনের একাংশ দিচ্ছিল।
গত কয়েক মাস ধরে পুরসভা থেকে টাকা আসা অনিয়মিত হয়ে পড়ে। ফের অচলাবস্থা তৈরি হয়। কর্মীদের অভিযোগ, অন্তত পাঁচ মাস তাঁদের বেতন মেলেনি। পুরসভা কিছু টাকা অনুদান দিতে চাইলেও স্থায়ী সমাধানের দাবিতে কর্মীরা তা নিতে অস্বীকার করেন। তাঁদের দাবি, হাসপাতালটি সরকার অধিগ্রহণ করুক। শহরের বাসিন্দাদের অনেকেই একই মত পোষণ করেন। তবে, প্রশাসনের একটি অংশের বক্তব্য, কার্যত কোনও ভূমিকা না থাকলেও খাতায়-কলমে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা পদ না ছাড়ায় সরকার অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চালাতে পারবে না।
কর্মীরা বলছেন, তৎকালীন পুরপ্রধান, সিপিএম নেতা দিলীপবাবুই ট্রাস্টি বোর্ডের ‘অঘোষিত’ প্রধান। পূর্ণচন্দ্র বারিক, সঙ্গীতা গঙ্গোপাধ্যায়, রূপা রায়চৌধুরী, পুতুল দাসদের মতো কর্মীদের বক্তব্য, ‘‘হাসপাতালের ভালর কথা ভেবে থাকলে ট্রাস্টি বোর্ডের মাথা-সহ অন্য সদস্যরা পদত্যাগ করুন।’’ পূর্ণচন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘গণস্বাক্ষর সংবলিত দাবিপত্র মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ভিভিন্ন প্রশাসনিক দফতরে পাঠানো হবে। আমরা চাই সরকারের মধ্যস্থতায় আমাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান হোক। হাসপাতালটির পুনর্জন্ম হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy